স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন নয়াচরে মৎস্য ব্যবসায়ীদের
রাজ্য সরকারের নির্দেশে নয়াচরে হতে চলেছে ফিশিং হাব। সেই নয়াচরেই চরম আশঙ্কাতে দিন কাটাচ্ছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। হলদিয়া মহাকুমার অন্তর্গত নয়াচর…
স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন নয়াচরে মৎস্য ব্যবসায়ীদের
রাজ্য সরকারের নির্দেশে নয়াচরে হতে চলেছে ফিশিং হাব। সেই নয়াচরেই চরম আশঙ্কাতে দিন কাটাচ্ছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। হলদিয়া মহাকুমার অন্তর্গত নয়াচর এলাকায় কয়েক হাজার মৎস্যজীবীর বাস। প্রায় ৮ হাজার একর জমিতে মৎস্য চাষ হয় এই দ্বীপে। বলা যায়, বারো মাস প্রাণ হাতে করে এই অঞ্চলে মাছ চাষ করেন মৎস্য চাষীরা। মাছ চাষ পূর্ব মেদিনীপুরের অর্থকরী ব্যবসা হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে। কিন্তু এখানকার মৎস্য চাষীদের দাবি , আমপান, ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসের ফলে মাছ চাষের ব্যাপক ভাবে ক্ষতি হয়েছে। মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে মাছ চাষ করেছিলেন তাঁরা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে তারা নিঃস্ব হতে বসেছেন। এই অবস্থায় তাদের প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভেড়িগুলি মাটি কাটা মেশিনের মাধ্যমে মেরামত করছিলেন। মেশিনের মাধ্যমে ভেড়ি মেরামত করতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইতিমধ্যেই পুলিশ ৫ টি মাটি কাটার মেশিন বাজেয়াপ্ত করেছে। নয়াচরে মাটি কাটা মেশিন দিয়ে কোন কাজ করার অনুমতি দিচ্ছেন না জেলা পুলিশ প্রশাসন।এদিকে নিজেদের ভেড়ি মেরামত করতে না পারলে আগামী মরশুমে করতে পারবেন না মাছ চাষ। মিটবে কি করে মহাজন দেনা? সেই নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে নয়াচরে প্রায় ১০ হাজার মাছ চাষী। উপায়ন্তর না দেখে শেষমেশ জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা। লিখিতভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতির জন্য আবেদন করেছে তারা ।
হলদিয়া মহাকুমার নন্দীগ্রাম হলদিয়া সুতাহাটা এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার অনেক বাসিন্দারা এখানে এসে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পুলিশ প্রশাসন এই নির্দেশের ফলে কপালে ভাঁজ মৎস্য ব্যবসায়ীদের। কি করে সংসার চালাবেন সেই দুশ্চিন্তাতেই খুব মরেছে এলাকাবাসীর।
নয়াচরের এক মৎস্যজীবী বলেন, ২০০৭ সাল থেকে মাছ চাষ করছি আমরা নয়াচরে। কোনদিন পুলিশ মাছ চাষে বাধা দেয়নি এ বছরই প্রথম। আমপান ও ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসের ফলে মোটা টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মহাজন টাকা শোধ করতে পারেনি। এখন ভেড়ি গুলি মেরামত না করতে পারলে আগামী মরসুমে মাছ চাষ করতে পারবোনা। ফলে বাড়বে মহাজন সুদের পরিমাণ। শেষে উপায়ন্তর না দেখে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছি। ভেড়ি মেরামত না করতে দিলে পরিবার নিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার নয়াচর নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব অত্রি ভট্টাচার্য্য। রাজ্য প্রশাসন নয়াচরের ভূমির কোন পরিবর্তন করতে চাইছে না। এখন ভেড়ির যেমন অবস্থায় আছে তেমন অবস্থায় রেখে দিতে চাইছেন রাজ্য সরকার। খুব শীঘ্রই রাজ্য সরকার নয়াচর নিয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করবে।। এছাড়া প্রশাসনের আরও দাবি, নয়াচরের জমি এক নম্বর খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ জমির মালিক রাজ্য সরকার। এলাকাটি সি আর জেডের ১ এর অন্তর্ভুক্তি। ওই এলাকায় মেশিন দিয়ে কোন কাজ করা যাবে না। বিগত বছরের যারা করেছে তারা বেআইনিভাবে করেছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাঝি বলেন, আবেদনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জেলা প্রশাসন।
No comments