চলতি মাসেই জেলা সফরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আগামী ১৭ডিসেম্বরের মধ্যে নয়াচরের সমীক্ষক দলকে জেলা প্রশাসনের কাছে সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেজন্য বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের মধ্য…
চলতি মাসেই জেলা সফরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আগামী ১৭ডিসেম্বরের মধ্যে নয়াচরের সমীক্ষক দলকে জেলা প্রশাসনের কাছে সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেজন্য বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। দপ্তরগুলিতে রাত জেগে প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুর সফরে আসতে পারেন। ওই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী নয়াচর ও মহিষাদলের নির্মীয়মাণ গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ঘুরে দেখতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে নয়াচর নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের চূড়ান্ত রিপোর্ট নবান্নে পাঠাতে চাইছে জেলা প্রশাসন। সেজন্য ব্লক, মহকুমা থেকে জেলা সর্বত্র প্রশাসনিক ব্যস্ততা তুঙ্গে। মঙ্গল ও বুধবার দু’দিন ধরে ড্রোন উড়িয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সমীক্ষা চালাল ৩০-৩৫জনের সমীক্ষক দল। মঙ্গলবার নয়াচরের দুর্গম এলাকা বাবলাতলা ও খেজুরতলায় সার্ভে চালানোর জন্য কোস্টগার্ডের হোভারক্র্যাফ্টে করে সমীক্ষক দলকে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু এদিন হোভারক্র্যাফ্ট না থাকায় লঞ্চে চেপেই দেড়-দু’ঘণ্টা জলপথ পেরিয়ে চারটি পয়েন্টে পৌঁছতে হয় তাঁদের। ড্রোন ক্যামেরা ও স্যাটেলাইট ম্যাপ নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের এলাকা চিহ্নিত করেন। সমীক্ষক দলের এক সদস্য বলেন, কাজের সুবিধার জন্য নয়াচরকে মোট ছ’টি জোনে ভাগ করেছে প্রশাসন। চারটি দলে ভাগ হয়ে সমীক্ষা চলছে। কিন্তু এই ড্রোন ক্যামেরাগুলি দিয়ে দু’কিলোমিটার এরিয়াল এলাকার বাইরে বেশি দূর সমীক্ষা করা যাচ্ছে না। সেজন্য সময় বেশি লাগছে। এক আধিকারিক বলেন, ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে এই প্রথম ১৩ হাজার একরের এই দ্বীপের একটি সামগ্রিক চিত্র তৈরি সম্ভব হচ্ছে। ফিশারি এলাকাগুলির বাইরে কোথায় কত মাপের জোয়ার-ভাটা খেলার মতো চরভূমি ফাঁকা রয়েছে তার হিসেব কষা হয়েছে। সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস আটকাতে দ্বীপটির চারপাশে ম্যানগ্রোভের উদ্ভিদ প্রাচীর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এজন্য কোথায় কত জমি রয়েছে, তা চিহ্নিত করে বনদপ্তর গাছ লাগাবে। কারণ, উমপুন ও যশে ফিশারিগুলি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক কারণে হুগলি ও হলদি নদীর সাম্প্রতিক জলস্তর বৃদ্ধিও চিন্তায় রেখেছে প্রশাসনকে। সেজন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকাঠামো তৈরির আগে দ্বীপ রক্ষার জন্য কী কী করা যায় সেবিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। সমীক্ষক দলের এক সদস্য বলেন, প্রথমে দক্ষিণে বাবলাতলা ও খেজুরতলা এলাকা থেকে উত্তরে মোহনা গেস্ট হাউস পর্যন্ত ৬-৭ কিলোমিটারের একটি ১৫ মিটারের চওড়া রাস্তা তৈরি করা হবে। কারণ, দ্বীপের দক্ষিণ এলাকা খুবই দুর্গম এবং ভাটার সময়ে লঞ্চ বা নৌকোয় পৌঁছনোও বেশ কঠিন। রাস্তা তৈরি হলে ফিশারি ও পর্যটনের সুবিধা হবে। রাস্তা ছাড়াও নয়াচরে আধুনিক মাছ চাষের জন্য মৎস্য দপ্তরের অধীনে একটি ল্যাবরেটরি তৈরি হবে। এছাড়া কোথায় কী পরিকাঠামো তৈরি করা হবে, সেখানে জমির অবস্থা কেমন রয়েছে সেবিষয়ে ম্যাপ তৈরি করতে বলা হয়েছে।
No comments