Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সামনে আন্তর্জাতিকের হাতছানি, কিন্তু বাধা অর্থ জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিকসে চারটি রুপো পেলেন সায়ন্তনী

সামনে আন্তর্জাতিকের হাতছানি, কিন্তু বাধা অর্থ,জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিকসে চারটি রুপো পেলেন সায়ন্তনী বারাণসীতে সদ্য শেষ হওয়া ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ৪টি রুপোর পদক জিতে চমকে দিলেন হলদিয়ার ‘স্প্রিন্ট কুইন’ সায়…

 




সামনে আন্তর্জাতিকের হাতছানি, কিন্তু বাধা অর্থ,জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিকসে চারটি রুপো পেলেন সায়ন্তনী

 বারাণসীতে সদ্য শেষ হওয়া ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ৪টি রুপোর পদক জিতে চমকে দিলেন হলদিয়ার ‘স্প্রিন্ট কুইন’ সায়ন্তনী সাহা। বন্দর শহরের পিটি ঊষা বলেই তাঁকে চেনে সবাই। জাতীয় পদক জিতে ইন্দোনেশিয়া ও জাপানে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ছাড়পত্র মিললেও, আর্থিক সমস্যাই তাঁর কাছে এখন বিদেশযাত্রার পথে বড় বাধা। মাস দেড়েকের মধ্যে দেড় লক্ষাধিক টাকার সংস্থান কীভাবে হবে তা চিন্তায় পড়েছেন। এক সন্তানের মা সায়ন্তনী পেশায় ফিটনেস ও যোগাসনের ট্রেনার। ডিসেম্বর থেকে পর পর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বন্ধ হয়েছে ট্রেনিং স্কুল। এশিয়ান ও বিশ্ব মাস্টার্স চ্যাম্পিয়নশিপে সাফল্য পেতে নিংড়ে দিচ্ছেন নিজেকে। মাঠ ভর্তি কাদা, প্র্যাকটিসের উপযুক্ত জায়গা নেই। তবু পদকের লক্ষ্যে শহরের ব্যস্ত রাস্তায় দৌড়ে, এঁদো পুকুরে সাঁতার কেটে বিশ্বমানের চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্ততি নিচ্ছেন সায়ন্তনী। 

জীববিদ্যা নিয়ে কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর হলদিয়ার ক্ষুদিরাম নগরের বাসিন্দা সায়ন্তনী কিছুদিন হলদিয়া পৌর পাঠভবন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। কিন্তু বরাবরই তাঁর নেশা অ্যাথলেটিকস। স্কুলজীবন থেকে কলেজ পর্যন্ত বরাবরই খেলার মাঠে সবার সেরা তিনি। ছিপছিপে চেহারার সায়ন্তনীকে দৌড়ে হারানো বেশ কঠিন ব্যাপার। ধাপে ধাপে স্কুল, জেলা, রাজ্য পেরিয়ে তিনি এখন দেশের অন্যতম সেরা মহিলা দৌড়বীর। সোনা ও রুপোর পদকে ভর্তি তাঁর আলমারি। ২৭ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সদ্য শেষ হওয়া তৃতীয় ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০ মিটার, ৪০০ মিটার, ১৫০০ মিটার এবং রিলে রেস এই চারটি ইভেন্টে রুপো জিতেছেন। এবার ডিসেম্বর মাস জুড়ে বাংলার খেলা, খেলো ইন্ডিয়া এবং হায়দরাবাদে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রতিযোগিতা রয়েছে। এরপর সায়ন্তনী পাখির চোখ করেছেন ফেব্রুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান মাস্টার্স ও জাপানে ওয়ার্ল্ড মাস্টার্স চ্যাম্পিয়নশিপ। 

বিজ্ঞাপন


অ্যাথলেট হিসেবে নিজেকে সক্ষম রাখতে সায়ন্তনী নিয়মিত যোগাসন ও ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি বাড়ির পাশের দিঘিতে দু’ঘণ্টা ধরে সাঁতার ও সাইকেল চালান। এই যোগাসন ও ফিটনেস ট্রেনিং তাঁর পেশাও। যোগাসন শেখাতে তিনি একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়েছেন। স্কুল পড়ুয়া ও গৃহবধূদের কখনও বাড়ি গিয়ে, কখনও অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেন। করোনা পর্বে তাঁর শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ভিন রাজ্য এমনকী শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখন পদক জয়ের লক্ষ্যে দিনভর বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছে সায়ন্তনীকে। তাঁর প্রেরণা অলিম্পিক পদক জয়ী মেরি কম। রোজ ভোরে উঠে তাঁর বারো বছরের ছেলে কৃষাণুকে নিয়ে দৌড়োতে বের হন। সায়ন্তনী বলেন, মেরি কমের মতো আমি একজন সফল খেলোয়াড় হতে চাই, যিনি বিশ্বকে দেখিয়েছেন মা হওয়ার পরও ময়দানে নেমে পদক জেতা যায়। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ, হলদিয়ায় খেলাধুলোর পরিবেশ ও পরিকাঠামো প্রায় কিছুই নেই। ব্লু স্টার জিম ফিটনেস সেন্টার এর কর্ণধার  ইব্রাহিম বন্ধু সুনীতা প্রসাদের জিমে ফিটনেস ট্রেনিং করেই তৈরি করছেন নিজেকে।

বিজ্ঞাপন


সায়ন্তনী জানান, এবার বারাণসীতে ২৯টি রাজ্যের প্রায় দু’হাজার প্রতিযোগী এসেছিলেন। মাস্টার্স অ্যাথলেটিকসে পঁয়ত্রিশ বছরের উর্দ্ধে যাঁদের বয়স তাঁরাই অংশ নেন। এশিয়াড ও অলিম্পিক খেলে আসা অনেকে এবার ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে প্রতিযোগী ছিলেন। রীতিমতো কঠিন প্রতিযোগিতায় জিতে আসতে হয়েছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, কর্ণাটকের খেলোয়াড়দের তাঁদের রাজ্য সরকার আর্থিকভাবে সহায়তা করে, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। বিদেশে যাওয়ার জন্য স্পোর্টস ডায়েটের খরচ দেয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে তাঁর আবেদন, সরকার তাঁকে সহযোগিতা করুক। এবার রাজ্যের ৭৫ জন প্রতিযোগীর মধ্যে সায়ন্তনীই একমাত্র ৪টি পদক পেয়েছেন। কিন্তু সায়ন্তনীর এই পদক প্রাপ্তির খবর জানে না তাঁর শহরের মানুষরা। এতবড় সাফল্যের পর পুরসভা কিংবা জেলার কোনও স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন সায়ন্তনীকে শুভেচ্ছাও জানায়নি। সায়ন্তনী সাফল্য কথা শুনে শুভেচ্ছা জানালেন ইন্টারন্যাশনাল লায়ন্স ক্লাব জেলা গভর্নর শেখ মজাফফর। জেলা মাস্টার্স অ্যাথলেটিকসে সভাপতি প্রদীপ বিজলী, রাজ্য কাবাডি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জেলা অর্গানাইজার সেক্রেটারি হলদিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর আজগর আলী (পল্টু), জেলার প্রাক্তন কাবাডি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আর্চির জেলার কনভেনর শিক্ষক ত্রিদিব হাজরা, হলদিয়া আবাহনী চক্র সম্পাদক পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কাবাডি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক শেখ সামাদ প্রমূখ।

No comments