২২ ধরনের সুগন্ধি ধান সংরক্ষণ করছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রামবাংলার ২২ ধরনের সুগন্ধি ধানকে সংরক্ষণ করা শুরু করেছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তার মধ্যে বেশিরভাগ সুগন্ধি ধানই প্রায় হারিয়ে যাওয়ার মুখে। সেই সব ধানের বীজ নিয়ে …
২২ ধরনের সুগন্ধি ধান সংরক্ষণ করছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
গ্রামবাংলার ২২ ধরনের সুগন্ধি ধানকে সংরক্ষণ করা শুরু করেছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তার মধ্যে বেশিরভাগ সুগন্ধি ধানই প্রায় হারিয়ে যাওয়ার মুখে। সেই সব ধানের বীজ নিয়ে গবেষণা করে সঠিক গুণমানের বীজ কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়াই লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের। ভারত সরকারের রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় এই বিজ্ঞানীরা আপাতত ২২টির মধ্যে ৬ ধরনের দেশি সুগন্ধি ধানের বীজ কৃষকদের সরবরাহ করেছেন। সার্টিফায়েড এবং উন্নত মানের এই বীজ থেকে কৃষকরা ব্যাপক ফলন পাবেন বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুগন্ধি চালের স্বাদ পাবেন। সেগুলি অদূর ভবিষ্যতে রাজ্য সরকারের সুফল বাংলার স্টলেও পাওয়া যাবে।
এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী শস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ বলেন, এই ছ’টি ধান বীজের মধ্যে রয়েছে গোবিন্দভোগ, রাধাতিলক, কালোজিরা, রাঁধুনিপাগল, লালবাদশাভোগ এবং হরিণখুরি। এই ধরনের ধান চাষের পর, চাল তৈরি করে তা বিপণনের ব্যবস্থাও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। সুফল বাংলার আউটলেটে কৃষকরা নাম নিবন্ধীকরণের মাধ্যমে এই চাল বিক্রি করতে পারবেন।
আগে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সুগন্ধি ধানের চাষ হতো। কিন্তু সবুজ বিপ্লবের পর থেকে উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ শুরু হওয়ায় কয়েকটি সুগন্ধি ধান ছাড়া বাকিগুলি ক্রমেই হারিয়ে যেতে শুরু করে। এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গ্রামবাংলার বিভিন্ন নথিপত্র, সমীক্ষা, মঙ্গলকাব্য ঘেঁটে দেখেন গ্রামবাংলায় প্রায় ৩০-৩৫ ধরনের সুগন্ধি ধানের চাষ হতো আগে। কিন্তু সেই জাতগুলি ক্রমেই বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নির্দিষ্ট কয়েকটি সুগন্ধি ধান চাষ করেন কৃষকরা। তারমধ্যে দক্ষিণবঙ্গে গোবিন্দভোগ, রাধাতিলক, কালোজিরা, রাঁধুনিপাগল এবং উত্তরবঙ্গে তুলাইপাঞ্জি, কালোনুনিয়া, কাটারিভোগ বিখ্যাত। রাজ্যে এই সব সুগন্ধি ধানের চাষ হয় প্রায় এক লক্ষ হেক্টর জমিতে। মূলত আলোক সংবেদনশীল ও খরিফ মরশুমে এই চাষ হয়। কিন্তু বাকি সুগন্ধি ধানগুলি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এই সমস্ত ধান সহ মোট ২২ ধরনের সুগন্ধি ধানকে এবার সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই জমিতেই চলছে সুগন্ধি ধান সংরক্ষণের কাজ।
No comments