Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

নয়াচরের উন্নয়নে বড় আকারে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প গড়তে চায় হলদিয়া পুরসভা

নয়াচরের উন্নয়নে বড় আকারে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প গড়তে চায় হলদিয়া পুরসভা। এজন্য পুরসভার পক্ষ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৮-১০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুরসভার এই প্রস্তাব পাওয়ার পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত নয়াচর…

 





নয়াচরের উন্নয়নে বড় আকারে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প গড়তে চায় হলদিয়া পুরসভা। এজন্য পুরসভার পক্ষ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৮-১০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুরসভার এই প্রস্তাব পাওয়ার পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত নয়াচরের স্ট্যাটাস রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। মাসখানেক আগে রাজ্যের পুর সচিবকে চিঠি দিয়ে শিল্পশহরের অদূরে হলদি ও হুগলি নদীর মোহনায় থাকা দ্বীপভূমিকে পুর এলাকার অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানায় পুর কর্তৃপক্ষ। তারপরই নয়াচর দ্বীপের স্ট্যাটাস রিপোর্ট তৈরির জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পুর সচিবের নির্দেশে গত ২৬ অক্টোবর হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুধাংশুশেখর মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে সরেজমিনে নয়াচর দ্বীপ পরিদর্শন করেন মহকুমা শাসক লক্ষ্মণ পেরুমল। দ্বীপের বর্তমান অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাসিন্দাদের জীবনযাপন ও জীবিকা নিয়ে শীঘ্রই জেলা প্রশাসনের তরফে রাজ্যে রিপোর্ট পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে।

হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুধাংশশেখর মণ্ডল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নয়াচরের মতো একটি সম্ভবনাময় দ্বীপ প্রশাসনের প্রশাসনের অগোচরে রয়েছে। দ্বীপের মানুষের প্রধান জীবিকা মাছ চাষ। হলদিয়ার পাশে থাকা ওই দ্বীপের উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক বছর আগে নয়াচরে প্রকৃতি-পর্যটন চালু করার কথা বলেছিলেন। দ্বীপকে সাজিয়ে পুরসভা সেই কাজ করতে চায়। এজন্য পুর দপ্তরের সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি গুরুত্ব উপলব্ধি করে চিঠি পাওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসনকে রিপোর্ট তৈরি করে পাঠাতে বলেছেন। নয়াচর দ্বীপে সরকারি নজরদারিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হলে রাজ্যের বড় অঙ্কের রাজস্ব পাওয়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে। এজন্য দ্বীপটি পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন। 

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পঁয়ষট্টি বছরের পুরনো নয়াচর দ্বীপটি সরকারিভাবে আগুরমারি মৌজা নামে পরিচিত। হলদিয়ার অদূরে ২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ওই দ্বীপভূমিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। মাছ চাষ করেই বাসিন্দাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। কিন্তু তাঁদের জন্য পানীয়জল, বিদ্যুৎ, নিরাপত্তা, শিক্ষা বা ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। দ্বীপের বাসিন্দারা বলেন, ন্যূনতম কোনও পরিকাঠামো না থাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় মানুষ দুরবস্থার মধ্যে পড়েন। দ্বীপের চারপাশে উঁচু বাঁধ না থাকায় নদীতে জলোচ্ছ্বাস হলেই ডুবে যায় মাছের ভেড়ি। ফ্লাড শেল্টার না থাকায় যশের জলোচ্ছ্বাসের সময় প্রায় বহু মানুষ গাছে উঠে নিজেদের প্রাণ বাঁচান। জলোচ্ছ্বাসে কোটি কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে। পুলিসের কোস্টাল ফাঁড়ি থাকলেও তা নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। দুষ্কৃতীরা মারধর করে মাছ লুট করে পালায়, সমাজবিরোধীদের ভয়ে থাকেন মৎস্যজীবীরা। 

পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আইসিডিএস স্কুল, ফ্লাড শেল্টার, সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া দ্বীপের নিচু এলাকায় বাঁধ দিতে হবে জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে। সেজন্য প্রতি বছর পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে ৮-১০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করতে আগ্রহী। পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি ইকো-ট্যুরিজম ও দ্বীপের সুরক্ষার জন্য কয়েক লক্ষ ম্যানগ্রোভ গাছ ও নারকেল গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সাল নাগাদ এইচডিএর উদ্যোগে নয়াচর ঘিরে প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য ১২৯ কোটি টাকার ডিপিআর তৈরি করেছিল ওয়েবকন সংস্থা। নয়াচরে গল্ফ কোর্স, হেলিপ্যাড গড়ার পরিকল্পনা করা হয়। পরে ওই দ্বীপে শিল্প গড়ার পরিকল্পনা করা হয়। সেজন্য রাজ্যের মৎস্য দপ্তরের প্রকল্প তুলে দিয়ে যৌথ উদ্যোগে তৈরি একটি সংস্থাকে জমি দেয় রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়াচরের জমি জটিলতা কাটিয়ে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্পের সম্ভবনা উজ্জ্বল হচ্ছে।

No comments