দীপাবলি ও ভাইফোঁটার হাত ধরে মিষ্টির বাজার রমরমিয়ে চলছে। হলদিয়া শিল্পশহরে।
করোনার কাঁটা ও লাগাতর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে উৎসব অনুষ্ঠান উপলক্ষে এবার ১৫-২০শতাংশ মিষ্টির বাজার ফিরেছে। শ্রীকৃষ্ণ সুইটস কর্ণধ…
দীপাবলি ও ভাইফোঁটার হাত ধরে মিষ্টির বাজার রমরমিয়ে চলছে। হলদিয়া শিল্পশহরে।
করোনার কাঁটা ও লাগাতর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে উৎসব অনুষ্ঠান উপলক্ষে এবার ১৫-২০শতাংশ মিষ্টির বাজার ফিরেছে। শ্রীকৃষ্ণ সুইটস কর্ণধার সর্বেশ্বর রাউৎ
সমস্যার মধ্যেও ভাইফোঁটা স্পেশাল মিষ্টি ছাড়া বেশিরভাগ মিষ্টির দাম একই রয়েছে। বন্দরশহরে ভাইফোঁটায় ক্রেতার মন কাড়ছে কেশরের বৈকুষ্ঠ সন্দেশ, জাফরান মেশানো ক্ষীরের কাজু রিমঝিম। শহরের নামী মিষ্টি দোকানগুলি বোনেদের জন্য তৈরি করেছে রকমারি মিষ্টির স্পেশাল গিফট প্যাক।
মিষ্টির দাম নাগালে থাকলেও হলদিয়ার পাইকারি বাজারগুলিতে ভাইফোঁটার জন্য দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে ভেটকি, পাবদা ও গলদা।
ভাইফোঁটার জন্য শুক্রবার সকাল থেকেই ভিড় শুরু হয়েছে শিল্পশহরের নামী মিষ্টিদোকানগুলিতে। ভর দুপুরেও দেখা যায় দুর্গাচক টাউনের সুপার মার্কেট, ক্ষুদিরাম স্কয়ার, টাউনশিপের মাখনবাবুর বাজারে মিষ্টি কেনার জন্য লাইন দিচ্ছেন মহিলারা।
খদ্দেরদের সামাল দিতে কার্যত হিমসিম অবস্থা দোকানের কর্মীদের। স্বাদ বদলাতে ক্রেতারা মূলত কাজু, কিসমিশ মেশানো সন্দেশ ও ক্ষীরের বিভিন্ন ভ্যারাইটি খুঁজছেন। বড় দোকানের পাশাপাশি শহর লাগোয়া ব্রজলালচক, চৈতন্যপুরের দোকানগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
শহরের নামকরা মিষ্টি ব্যবসায়ী অভয়ানন্দ পাত্র বলেন, করোনা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য মিষ্টি শিল্প বিপর্যস্ত। উৎসব অনুষ্ঠানকে ঘিরে সবেমাত্র মিষ্টির বাজার ফিরতে শুরু করেছে। ক্রেতাদের উপর যাতে চাপ না পড়ে সেজন্য মিষ্টির দাম বাড়াইনি। ৬টাকা থেকে ১০টাকার মধ্যেই বেশির ভাগ মিষ্টি মিলবে। সাবেকি মিষ্টির পাশাপাশি ভাইফোঁটার জন্য কিছু নতুন স্বাদের মিষ্টি তৈরি হয়েছে। তবে তরুণ প্রজন্মের জন্য চকোলেট ও ক্ষীর দিয়ে ফিউশন মিষ্টি তৈরি করেছি।
বিজ্ঞাপন
দুর্গাচকের আর বড় মিষ্টি ব্যবসায়ী সর্বেশ্বর রাউত বলেন, একদিকে করোনা বিপর্যয় অন্যদিকে জ্বালানি ও ভোজ্যতেলের দাম এত বেড়ে গিয়েছে যে মিষ্টি ব্যবসা সঙ্কটে পড়েছে। তাছাড়া বন্যার জন্য দুধের যোগান কমে গিয়েছে। মিষ্টি তৈরির কাঁচামালের দাম বেড়েছে। তবে ভাইফোঁটা এমন ধরনের অনুষ্ঠান যে আর্থিক সমস্যার মধ্যেও সব ধরনের মানুষ কমবেশি মিষ্টি কিনছেন।
বিজ্ঞাপন
এবার তাঁদের ভাইফোঁটা উপলক্ষে তৈরি ক্ষীর দই, ক্ষীর ও জাফরান দিয়ে তৈরি কাজু বল, কাজু রিমঝিমের ব্যাপক চাহিদা। এছাড়া শহরে তাঁদের বিভিন্ন কাউন্টারে হরেক রকমের মিষ্টি দিয়ে স্পেশাল গিফট প্যাকেট তৈরি রেখেছেন। এগুলির দাম ৮০০-১৬০০টাকা পর্যন্ত। টাউনশিপের বাসিন্দা সুমিতা গিরি বলেন, দেশপ্রাণ সুইটস থেকে ভাইফোঁটার স্পেশাল চকোলেট বিস্কুট সন্দেশ, কেশর আর জাফরান দেওয়া বৈকুষ্ঠ সন্দেশ ও কাঁচা আমের রসগোল্লা কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে, ভাইফোঁটার লগনসা বাজারে এদিন হলদিয়ার পাইকারি ও খুচরো মাছের বাজারগুলিতে দাম ছিল বেশ চড়া। হলদিয়ার মাছ চাষি শরৎকুমার ভৌমিক বলেন, করোনা, জলোচ্ছ্বাস, বন্যার জন্য এবার হলদিয়া সহ জেলার মাছ চাষিরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
দেশপ্রাণ সুইটস কর্ণধার অভয়ানন্দ পাত্রভাইফোঁটার মতো লগনসা বাজারে একটু দামি ও সুস্বাদু হিসেবে ভেটকি, চিংড়ি, পাবদার খুব চাহিদা থাকে।
কিন্তু এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য সমস্ত ভেড়ি কার্যত ফাঁকা। কোথাও মাছ থাকলেও মাছের তেমন বৃদ্ধি হয়নি। ভেড়িতে মাছ কম থাকায় বাজারে যোগান কম। সেজন্য এদিন হলদিয়ার সমস্ত পাইকারি বাজারে ১০০গামের উপর গলদা চিংড়ি ১২০০টাকা বা তার বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। খুচরো দাম আরও বেশি হবে।
বিজ্ঞাপন
সাড়ে চারশো টাকার ভেটকি ৭০০-৮০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা, বড় কাতলার দামও চড়া। তবে দাম বেশি মেলায় চাষিরা কিছুটা হলেও খুশি।
No comments