করোনা মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ, মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট ৪৬৩টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৮১টি মাধ্যমিক স্কুল খুলছে। প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা পরবর্তী ক্লাসে উঠে গিয়েছে।
সেই হিসেবে নতুন ক্লাসে মঙ্…
করোনা মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ, মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট ৪৬৩টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৮১টি মাধ্যমিক স্কুল খুলছে। প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা পরবর্তী ক্লাসে উঠে গিয়েছে।
সেই হিসেবে নতুন ক্লাসে মঙ্গলবারই তাদের প্রথম দিন। প্রধান শিক্ষকদের স্কুলের গেটে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত জানানোর বার্তা দিয়েছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দপ্তর। এছাড়াও থার্মাল গান দিয়ে পড়ুয়াদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার ব্যাপারে একগুচ্ছ নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে পড়ুয়াদের বসানো হবে। প্রত্যেক স্কুলে একটি করে ‘আইসোলেশন রুম’ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও ছাত্রছাত্রীর তাপমাত্রা বেশি হলে তাকে ওই রুমে নিয়ে যাওয়া হবে। স্কুল খোলা নিয়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের মধ্যেও মিটিং হয়েছে। কোনও ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হলে চিকিৎসক দ্রুত সেখানে যাবেন। সোমবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্র তমলুক শহরের একটি গার্লস হাইস্কুল ভিজিট করেন। জানা গিয়েছে, নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল সাড়ে ৯টায়। ওই দুই শ্রেণির স্কুল ছুটি হবে সাড়ে ৩টেয়। পড়ুয়ারা সকাল ৯টা থেকে স্কুলে আসবে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল সাড়ে ১০টায়। পড়ুয়ারা সকাল ১০টা থেকে স্কুলে চলে আসবে। স্কুল ছুটি হবে বিকেল সাড়ে ৪টেয়। পড়ুয়ারা যাতে এক জায়গায় জড়ো না হয়, সেবিষয়ে সতর্ক থাকবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই কারণে প্রার্থনা, খেলাধুলা হবে না।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালা বন্ধ থাকায় গোটা চত্বর আগাছায় ঢেকে গিয়েছিল। আসবাবপত্র থেকে শিক্ষা সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে ভোটের ডিউটি, সাইক্লোন ও বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাধারণ মানুষজন স্কুলে আশ্রয় নেন। অনেক জায়গায় আসবাবপত্র ঠিকমতো নেই। স্কুল খোলার উপযোগী করতে ৯ কোটি ৯২ হাজার ৮২০ টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই টাকায় আসবাবপত্র থেকে স্কুল সরঞ্জাম, শ্রেণিকক্ষ, কিচেন শেড ইত্যাদি মেরামত হয়েছে। প্রত্যেক স্কুলকে মাস্ক ও স্যানিটাইজার মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও পড়ুয়ার প্রয়োজন হলে দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ। অনেক পড়ুয়া ড্রপআউটের শিকার। ছাত্রীদের একটা অংশের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। নাবালিকা বিয়ের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। এই অবস্থায় স্কুল খুললে কত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী কমল, সেটা জানা যাবে। প্রত্যেকদিন স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও পড়ুয়াদের হাজিরার তথ্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও টিআইসিদের পাঠাতে হবে। নন্দীগ্রামের আসদতলা বিনোদ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আনন্দময় দে বলেন, প্রত্যেক পড়ুয়াকে থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। যেসব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি, সেখানে জনে জনে থার্মাল গান দিয়ে চেক করা কঠিন কাজ। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। পঠনপাঠনে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আমরা আশা করব, সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) শুভাশিসবাবু বলেন, ছাত্রছাত্রীরা অনেকদিন ঘরবন্দি। তারা যাতে স্কুলে এসে কোনওরকম অসুবিধায় না পড়েন, তার জন্য শিক্ষকদের উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। দূরত্ববিধি মেনে বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।মহিষাদলের গোপালপুর হাইস্কুল পরিদর্শনে বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী।
No comments