Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বাঁশের সাঁকো ভেঙে ৬০ জন পড়ে গেলেন নদীতে

সোমবার দুপুরে ঘাটাল থানার মনশুকায় আচমকা বাঁশের সাঁকো ভেঙে ৬০জন ঝুমি নদীর জলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। তাঁদের বেশির ভাগই শিশু ও মহিলা। এই ঘটনায় ১৪ জন জখম হয়েছেন। তবে, জল কম থাকায় কেউ নিখোঁজ হননি। পুলিস জানিয়েছে, ওই ঘট…

 





 সোমবার দুপুরে ঘাটাল থানার মনশুকায় আচমকা বাঁশের সাঁকো ভেঙে ৬০জন ঝুমি নদীর জলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। তাঁদের বেশির ভাগই শিশু ও মহিলা। এই ঘটনায় ১৪ জন জখম হয়েছেন। তবে, জল কম থাকায় কেউ নিখোঁজ হননি। পুলিস জানিয়েছে, ওই ঘটনায় গুরুতর জখম তিনজনকে ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, মনশুকায় একটি বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে হরিনাম সংকীর্তনের শোভাযাত্রা যাচ্ছিল। সেই সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে। বর্তমানে সাঁকোটির উপর দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

মনশুকা গ্রাম লাগোয়া কন্দর্পচকে কালীপুজো উপলক্ষে হরিনাম সংকীর্তনের আসর বসেছিল। ওই পুজো কমিটির সভাপতি রণজিৎ বেরা বলেন, এদিন ওই হরিনামের আসর থেকে একটি শোভাযাত্রার মনশুকার ঘোড়ই ঘাটের ওই সাঁকো পেরিয়ে মনশুকা হাটতলা শীতলা মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘোড়ই ঘাটে সাঁকোটি পেরনোর সময়ই সেটি ভেঙে যায়। 

মনশুকা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাত্রি পণ্ডিতসাতিক বলেন, ওই শোভাযাত্রায় যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁরা সংকীর্তনের তালে তালে নেচে সাঁকোটি পেরচ্ছিলেন। একসঙ্গে এতো মানুষের ঝাঁকুনির জেরে সাঁকো মাঝ বরাবর ভেঙে যায়। ওই শোভাযাত্রায় ছিলেন কন্দর্বচকের অনিমেষ বেরা, পার্বতীচকের পূর্ণিমা দোলই সহ বহু মানুষ। তাঁরা বলেন, সাঁকোর মাঝে পৌঁছনোর পর হঠাৎই সাঁকোটি দোলনার মতো ডানে-বামে দুলতে শুরু করে। তখন সবাই ভয়ে গান বন্ধ করে দেন। তার কয়েক সেকেন্ড পর সবাই নদীর জলে পড়ে যান। তারপর কী ঘটেছে মনে নেই।

মনশুকার বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক শান্তি সাতিক বলেন, দুর্ঘটনার পরই এলাকায় চিৎকার ও আর্তনাদ শোনা যায়। নদীর মধ্যে থেকে আর্তনাদের শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে সবাইকে উদ্ধার করেন। শান্তিবাবু বলেন, বর্তমানে এই নদীতে তেমন জল নেই। জল বেশি থাকলে যে কী হতো সেটা ভাবলেই গা শিউরে উঠছে। বর্ষার সময় হলে অনেকের প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কারণ ওই শোভাযাত্রায় অনেক শিশু ও মহিলা ছিল। 

কন্দর্বচক, পাবর্তীচক, ধসাচাঁদপুর গ্রাম সহ ঘাটাল ব্লকের ইরপালা ও সুলতানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা ওই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। গত বন্যার সময় সাঁকোটি জলের তোড়ে ভেঙে যায়। তারপর থেকে এতদিন নৌকায় করেই যাত্রীরা পারাপার হচ্ছিলেন। কালীপুজোর কয়েক দিন আগে ওই সাঁকোটি ফের চালু করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সাঁকোটি খুব মজবুত ছিল না। সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করলেই সেটি দুলত। প্রায় ৭৫ মিটার লম্বা ওই সাঁকোয় একসঙ্গে এতো জন যাওয়ার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শোভাযাত্রায় একসঙ্গে এতো মানুষ ওই সাঁকোর উপর নাচানাচি করেন। সেই ঝাঁকুনি সহ্য করতে পারেনি সাঁকোটি। তার জেরেই এই বিপত্তি ঘটেছে।

এই ঘটনার পরই ঘাটালের মহকুমা শাসক, ঘাটালের বিডিও ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল, মহকুমা পুলিস আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী সহ প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরির্দশনে যান। মহকুমা শাসক বলেন, পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত ওই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যাত্রীরা নৌকায় করে যাতে যাতায়াত করতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত নৌকা রাখা হয়েছে।

No comments