অতি মারি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত, পরিবারের আর্থিক সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের পরিবারকে ৫০হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মঙ্গলবার থেকেই তার তোড়জোড় শুরু হল। ১৮নভেম্বর এনিয়ে জেলায় …
অতি মারি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত, পরিবারের আর্থিক সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের পরিবারকে ৫০হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মঙ্গলবার থেকেই তার তোড়জোড় শুরু হল। ১৮নভেম্বর এনিয়ে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তমলুকের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে মৃতদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার মৃতদের পরিবারকে স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড (এসডিআরএফ) থেকে ৫০হাজার টাকা করে দেবে। তার আগে তালিকা তৈরির কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকার ক্ষেত্রে বিডিও অফিস এবং পুরসভা এলাকার জন্য এসডিও অফিসে মৃতদের পরিবারকে আবেদন করতে হবে। সেই আবেদন স্ক্রুটিনি করার পর যোগ্য উত্তরাধিকারীদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু হবে।
জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, গত বছর থেকে এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনায় সাড়ে চারশো জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড উল্লেখ করা থাকলে তবেই এসডিআরএফ থেকে ওই ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। আপাতত দুই সিএমওএইচ অফিস থেকে মৃতদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারপর বিডিও এবং এসডিও অফিস থেকে ফর্ম বিতরণ করা হবে। সেই ফর্ম পূরণ করার সময় সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং শহর এলাকার ক্ষেত্রে পুরসভার চেয়ারম্যানের সই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটের জেরক্স কপির সঙ্গে ওই ফর্ম জমা দিতে হবে।
কোনও পরিবার এসডিআরএফ থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে মনে করলে অভিযোগ জানানোর সুযোগ পাবে। এজন্য জেলায় গড়া হচ্ছে গ্রিভান্স রিড্রেসাল সেল। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) শ্বেতা আগরওয়ালকে ওই সেলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এছাড়াও দুই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং একজন কোভিড বিশেষজ্ঞ ওই কমিটির সদস্য হবেন। সেখানে কোনও পরিবার এসডিআরএফ গ্র্যান্ট থেকে বঞ্চিত বলে মনে করলে আবেদন জানাতে পারবে।
বিডিও অফিস এবং এসডিও অফিসে জমা পড়া আবেদন জেলায় আসবে। সিএমওএইচ অফিস থেকে পাঠানো মৃতের তালিকা ধরে আবেদন মেলানো হবে। তারপর উপযুক্ত উত্তরাধিকারীর অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩হাজার। তার মধ্যে সরকারি হিসেবে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে চারশো জনের। যদিও কো-মর্বিডিটি সমস্যা নিয়ে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে আরও অন্তত চারশো জনের। মৃতদের তালিকায় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী সহ সুপার স্প্রেডার গ্রুপের অনেকেই আছেন। গতবছর করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মুহূর্তে পাঁশকুড়ার বড়মা মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। তারপর চণ্ডীপুর মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল নেওয়া হয়। এছাড়াও গত মে মাস থেকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল শুধুমাত্র করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য চালু হয়েছে। জেলায় ওই তিন হাসপাতালেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক করোনা সংক্রামিতের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও জেলার বড় হাসপাতালের মধ্যে তমলুক, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, কাঁথি এবং এগরা হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে। ওইসব সরকারি হাসপাতালেও বেশ কয়েকজন সংক্রামিতের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন অফিসার মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, করোনার জেরে মৃত্যু হওয়া প্রত্যেকের পরিবার ৫০হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। এক পরিবারে দু’জনের মৃত্যু হলে এক লক্ষ টাকা মিলবে। সিএমওএইচদের কাছ থেকে মৃতদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাড়ে চারশো জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। বিডিও এবং এসডিও অফিসে এজন্য আবেদন করতে হবে। গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রচার করা হবে।
No comments