আজ থেকেই শুরু হল শতাব্দী প্রাচীন মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। আজ মহিষাদল রাজবাড়ির পুকুরে ঘটউত্তোলনের মাধ্যমে পূজার সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন মহিষাদল রাজ পরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ। আজ থেকে প্রত্যেক দিন চলবে পুজো। সাধারণ মানুষে…
আজ থেকেই শুরু হল শতাব্দী প্রাচীন মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। আজ মহিষাদল রাজবাড়ির পুকুরে ঘটউত্তোলনের মাধ্যমে পূজার সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন মহিষাদল রাজ পরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ। আজ থেকে প্রত্যেক দিন চলবে পুজো। সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা তুঙ্গে এই প্রাচীন পূজাকে কেন্দ্র করে। ২৪৭ বছরে পড়লো এই পুজো। রাণী জানকি দেবী প্রথমে পুজো শুরু করেছিলেন। রাজ বাড়ির দূর্গা পূজার সাজে পুজা হবে যুদ্ধের
একটা তরবারি, তার ওজন প্রায় ১৪ কেজি। রাজ পরিবারের শৌর্য আর বীরত্বের প্রতীক। সেই তরবারি পরিবারের বাৎসরিক দুর্গাপুজোর সময় মায়ের পায়ে ছুঁইয়ে পুজো করা হতো। কিন্তু সেসব আজ অতীত। প্রাচীন সেই মূল্যবান তরবারি আজ আর প্রকাশ্যে আনা হয় না। তা বদলে গত দেড় দশক ধরে অন্য একটি তরবারি মায়ের পায়ে সমর্পণ করা হয়। এরকমই নানা বিশেষ রীতিনীতি রয়েছে মহিষাদল রাজ পরিবারের আড়াইশো বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজোয়। যেমন, নবমী পুজোর দিন মূল মণ্ডপের বাইরে একটি ছোট মন্দিরে মা দুর্গাকে মা ভবানীরূপে কুমারী পুজোর রীতি রয়েছে। রাজবাড়ির পুরনো রঙ্গিবসান প্রাসাদের পিছনে সাহেব দিঘির পাশে রয়েছে সেই মন্দির। এবার মহিষাদল রাজবাড়িতে মনখারাপের আবহেই চলছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। প্রায় দু’শো বছরের পুরনো হেরিটেজ রঙ্গিবসান প্রাসাদ ভেঙে পড়ায় মন ভালো নেই রাজবাড়ির সদস্যদের পাশাপাশি মহিষাদলের মানুষেরও। রাজবাড়ির দুর্গামণ্ডপের পাশেই রঙ্গিবসান প্রাসাদ। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে পর পর দু’বার ধসে পড়েছে প্রাসাদের সামনের সুদৃশ্য অংশ। রাজবাড়ির পুরনো পুজোর প্রস্তুতি দেখতে আসা উৎসাহী মানুষজন খণ্ডহর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাসাদ দেখে চমকে উঠছেন। ধ্বংসস্তূপের পাশেই রাজবাড়ির মৃণ্ময়ী প্রতিমাকে চিন্ময়ী মা রূপে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী গোপাল ভুঁইয়া। গত একশো বছর ধরে মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপ্রতিমা গড়ে চলেছেন গোপালবাবু এবং তাঁর পূর্বপুরুষরা। রাজবাড়ির ঐতিহ্যবাহী দুর্গা প্রতিমার মুখের ছাঁচ নকল হওয়ার ভয়ে তাঁরা কেউ কোনওদিনও দ্বিতীয় প্রতিমা গড়েন না। বাবা রামপদ ভুঁইয়ার পর গোপালবাবুই গত ষাট বছর ধরে রাজপরিবারের মৃৎশিল্পী।
No comments