Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বন্যায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আমন চাষে ১৫০৯কোটি ৪৫লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

বন্যায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আমন চাষে ১৫০৯কোটি ৪৫লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আড়াইশো হেক্টরের মধ্যে ২০০ হেক্টর জমিতে সবুজের লেশ মাত্র নেই। ৩১৯৯টি মৌজার মধ্যে ৩০৯৭টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত বলে চিহ্নিত করেছে কৃষিদপ্তর। জেলা কৃষিদপ্তর ইতিম…

 



বন্যায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আমন চাষে ১৫০৯কোটি ৪৫লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আড়াইশো হেক্টরের মধ্যে ২০০ হেক্টর জমিতে সবুজের লেশ মাত্র নেই। ৩১৯৯টি মৌজার মধ্যে ৩০৯৭টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত বলে চিহ্নিত করেছে কৃষিদপ্তর। জেলা কৃষিদপ্তর ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির ওই পরিমাণ জেলাশাসকের অফিসে পৌঁছে দিয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি আগামী ৪অক্টোবর ক্ষতিগ্রস্ত মৌজার গেজেট নোটিফিকেশন করবেন। তাতেই সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে। গত এক দশকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কৃষিতে এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এরফলে চাষিরা বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বেন। পাশাপাশি খাদ্যসঙ্কট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, বন্যায় পূর্ব মেদিনীপুরে চাষে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি দপ্তর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করেছে। নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত মৌজা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।গত ১৬সেপ্টেম্বর রাতে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। তার দুই-তিনদিন আগে থেকেই অনেক মৌজা বৃষ্টির জলে প্লাবিত হয়। নদীবাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি হয়। টানা ১৫দিন বন্যার দুর্ভোগের মধ্যে কাটাচ্ছেন সাড়ে সাত লক্ষ মানুষ। এরপর ২৮ ও ২৯সেপ্টেম্বর ফের ঘূর্ণাবর্তের জেরে বৃষ্টিতে যেটুকু অবশিষ্ট ছিল তাও জলের তলায় চলে যায়। জেলায় ২৫টি ব্লকই ক্ষতির কবলে পড়েছে। কৃষিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী প্রায় ১০০ শতাংশ মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষিতে এরকম বিপুল ক্ষতি সাম্প্রতিক অতীতে হয়নি। গতবছর উমপুন সাইক্লোন ধেয়ে আসার আগেই বোরো ধান প্রায় খামারে উঠে গিয়েছিল। এবছর যশ সাইক্লোনেও কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি খুব বেশি ছিল না। কিন্তু, আমনের ভরা মরশুমে বন্যায় একেবারে সব শেষ করে দিয়েছে।জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষিতে পটাশপুর-১ ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ ১০৪কোটি ৭৬লক্ষ টাকা, পটাশপুর-২ ব্লকে ১১২কোটি ৬৭লক্ষ টাকা, ভগবানপুর-১ ব্লকে ৯৪কোটি ৬৭লক্ষ টাকা, ভগবানপুর-২ ব্লকে ৮৯কোটি ২৪লক্ষ টাকা, এগরা-১ ব্লকে ১১৭কোটি ১৭লক্ষ টাকা, এগরা-২ ব্লকে ৮৪কোটি ৪৭লক্ষ টাকা, পাঁশকুড়া ব্লকে ৬৯কোটি ৮৪লক্ষ টাকা, ময়না ব্লকে ৩৪কোটি ২৯লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে। একইভাবে নন্দীগ্রাম-১ ও ২, খেজুরি-১ ও ২, কাঁথি-১ ও ৩ এবং দেশপ্রাণ, চণ্ডীপুর, নন্দকুমার, মহিষাদল, সুতাহাটা, তমলুক, কোলাঘাট, শহিদ মাতঙ্গিনী সহ প্রতিটি ব্লকে আমন চাষে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর জেলায় ২লক্ষ ৪৫হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছিল। তারমধ্যে ১লক্ষ ৯৪হাজার ৫১৭হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত। একইভাবে ফুল, সব্জি ও পান চাষেও হাহাকারের ছবি। পটাশপুর-১ ব্লকের অমর্ষি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব মজিদা গ্রামের চাষি বাদল পাল বলেন, চার বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছিলাম। চার মুঠো ধান খামারে আসবে না। বন্যার জল নামতেই দেখি, সাদা মাঠ। একেবারে সব শেষ। ভগবানপুর-১ব্লকের কোটবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামচক নারায়ণ পাত্র, জয়গোপাল পাত্র বলেন, সবুজের চিহ্নমাত্র নেই। এরকম বিপর্যয় আগে কখনও হয়নি। কেলেঘাই আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। এখন পথে বসার মতো অবস্থা। জেলা কৃষিদপ্তরের এক অফিসার বলেন, বেশিরভাগ ব্লকেই একশো শতাংশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১০ লক্ষ চাষি ক্ষতির কবলে পড়েছেন। চাষে এত বিপুল অঙ্কের ক্ষয়ক্ষতি সাম্প্রতিক অতীতে হয়নি। 

No comments