Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ভগবানপুর, পটাশপুরে নেই পুজোর আনন্দ

ভগবানপুর, পটাশপুরে নেই পুজোর আনন্দপঞ্চমীতেও বুক সমান জলে দাঁড়িয়ে হাহাকার টানা তিন সপ্তাহের বেশি বানভাসি পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ও পটাশপুরে অধিকাংশ জায়গায় ঘটপুজোর মাধ্যমেই দেবীর আরাধনা সারতে হচ্ছে। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা, ঢাকের আও…

 





ভগবানপুর, পটাশপুরে নেই পুজোর আনন্দ

পঞ্চমীতেও বুক সমান জলে দাঁড়িয়ে হাহাকার

 টানা তিন সপ্তাহের বেশি বানভাসি পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ও পটাশপুরে অধিকাংশ জায়গায় ঘটপুজোর মাধ্যমেই দেবীর আরাধনা সারতে হচ্ছে। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা, ঢাকের আওয়াজ কিংবা আলোর রোশনাই নেই। পুজোর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পেতে এখন উদ্যোক্তাদের ঘাম ছুটছে। এখনও ১০০-র বেশি ত্রাণ শিবিরে ১০হাজার দুর্গত আশ্রয় নিয়েছেন। সেইসব শিবিরে পুজোর গন্ধ নেই। বরং ত্রাণসামগ্রী নিতে রবিবারও বুকসমান জলে লাইন দিতে দেখা গিয়েছে। একাধিক জায়গায় প্রতিমার কাঠামো হলেও কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। রাত জেগে শুধুমাত্র দুর্গা, মহিষাসুর ও সিংহের মূর্তি করা হলেও লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ অসম্পূর্ণ। এটাই ভগবানপুর ও পটাশপুরের বন্যা কবলিত এলাকার মহাপঞ্চমীর ছবি।

ভগবানপুর-১ব্লকের কোটবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবেড়িয়া বাজার কমিটির পুজো ৩০বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বাজকুল-এগরা রাজ্য সড়কে ওই গুরুত্বপূর্ণ বাজারে প্রায় ১৫০ দোকান থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে পুজো হয়। এখনও বাজারে বুক সমান জল। টানা এক মাস বাজার বন্ধ। চাঁদা তোলার মতো পরিস্থিতি নেই। মায়ের মূর্তি কিংবা মণ্ডপ কিছুই করা যায়নি। এবার নিয়মরক্ষার জন্য ঘটপুজো করেই বাঙালির সব চেয়ে বড় উৎসব সারতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সম্পাদক দেবব্রত মহাপাত্র বলেন, এখনও বুক সমান জল। মণ্ডপ কিংবা প্রতিমা করার মতো পরিস্থিতি নেই। এক মাসের বেশি দোকানদারদের কোনও রোজগার নেই। এরকম একটা পরিস্থিতিতে ঘটপুজো করা ছাড়া উপায় নেই।

ভগবানপুর-২ব্লকের রাধাপুর রাধামাধব আশিস সঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তারা আরও সঙ্কটে পড়েছেন। রাধাপুর প্রবীণচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পুজো হয়। নৌকা ছাড়া ওই জায়গায় যাওয়াই যাচ্ছে না। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা কিছু করা যায়নি। পঞ্চমীর দিন উদ্যোক্তারা ঘটপুজোর প্রস্তুতিতে নামেন। এরকম অবস্থায় ব্রাহ্মণ পাওয়া যাচ্ছে না। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ অতনু পাত্র বলেন, চারিদিকে জল থই থই করছে। এই অবস্থায় নৌকায় চড়ে ব্রাহ্মণ পুজো করতে আসতে চাইছেন না। ভীষণ সমস্যায় পড়েছি।

ভগবানপুর-২ব্লকের ইটাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরখামার বজরপুর যুব সঙ্ঘ প্রতিমা তৈরির করার সময় গোটা এলাকা প্লাবিত হয়। মণ্ডপ ও প্রতিমার কাজ সেখানেই থেমে যায়। উদ্যোক্তারা ভেবেছিলেন, পরিস্থিতির একটু উন্নতি হলে তাঁরা ওই কাজ সম্পূর্ণ করবেন। কিন্তু, আজও গোটা এলাকা জলমগ্ন। এই অবস্থায় উদ্যোক্তারা শুধুমাত্র দুর্গা, মহিষাসুর এবং সিংহের মূর্তি রং করেছেন। অন্যান্য মূর্তি অসম্পূর্ণ। সেইসব মূর্তি বসানো হবে না। পুজো কমিটির সদস্য কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, আমরা শুধুমাত্র মহাষ্টমী ও মহানবমীর পুজো করব। পুজো নিয়ে এই এলাকায় কোনও উৎসাহ নেই। বরং দু’বেলা পেটের ভাত নিয়েই সকলে চিন্তিত। ভগবানপুর-২ ব্লকের পূর্ব রাধাপুর গ্রামে নন্দীগ্রামের মনুচকের একটি ক্লাব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করার সময় দুর্গতদের বুক সমান জলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। রবিবার যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটির পক্ষ থেকে ভগবানপুরের বিভীষণপুর, টোটোনালা এবং বিভীষণ ও শিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যবর্তী এলাকায় কয়েকশো মানুষকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ভগবানপুর ও পটাশপুরে দুর্গতদের রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। পটাশপুরের চিস্তিপুর-১ ও ২গ্রাম পঞ্চায়েতের এরকম বেশকিছু জায়গায় ঘট তুলে পুজো হচ্ছে। জেলায় এখনও একশোর বেশি স্কুলে আনুমানিক দশ হাজার দুর্গত আছেন। বিস্তীর্ণ এলাকায় জল থাকায় দুর্গতদের বাড়ি ফেরার মতো অবস্থা নেই। দুর্গাপুজোর মধ্যেও ত্রাণ শিবিরে কাটাচ্ছেন কয়েক হাজার দুর্গত। 


No comments