Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

রাজা নবকৃষ্ণ দেব ও শোভাবাজার রাজবাড়ির কাহিনী

রাজা নবকৃষ্ণ দেব ও শোভাবাজার রাজবাড়ির কাহিনী নবকৃষ্ণ দেব (জন্ম)১০ ই অক্টোবর ১৭৩৩(মৃত্যু)২২ শে ডিসেম্বর ১৭৯৭যিনি রাজা নবকৃষ্ণ দেব নামে বেশি পরিচিত ও শোভাবাজার রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। ১৭৫৭ সালে কলকাতায় নতুন তৈরি শোভাবাজার রাজবাড়…

 





রাজা নবকৃষ্ণ দেব ও শোভাবাজার রাজবাড়ির কাহিনী 

নবকৃষ্ণ দেব (জন্ম)১০ ই অক্টোবর ১৭৩৩(মৃত্যু)২২ শে ডিসেম্বর ১৭৯৭

যিনি রাজা নবকৃষ্ণ দেব নামে বেশি পরিচিত ও শোভাবাজার রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। ১৭৫৭ সালে কলকাতায় নতুন তৈরি শোভাবাজার রাজবাড়িতে তিনি ও রবার্ট ক্লাইভ প্রথম দুর্গাপূজা শুরু করেন যা কলকাতা শহরের সবথেকে পুরোনো দুর্গাপূজা। অনেক শিল্পী ও প্রজাদের উন্নয়নের জন্য ওনার অবদান আছে। তার পিতা ছিলেন রামচরণ দেব। 


প্রভাব


পলাশির পরে কলকাতার সামাজিক সাম্রাজ্যে তিনি হয়ে উঠলেন প্রায় মুকুটহীন সম্রাট। তার সামাজিক গুরুত্ব তখন রাজনৈতিক নেতাদের থেকে বেশি। এই সামাজিক গুরুত্ব লাভে তাকে সাহায্য করেছিল তার সরকারি পদের গুরুত্ব এবং কলকাতার কোম্পানির কর্তাদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক। নিজের সামাজিক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে তিনি কলকাতায় ডেকে এনেছিলেন উঁচুদরের কুলীনদের। ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের দান করেছিলেন জমি বাড়ি। এই সবই দলপতি হওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি। দলপতি হতে প্রয়োজন ছিল বিত্ত-বৈভব প্রদর্শন। তার মাধ্যম ছিল শ্রাদ্ধ, বিয়ে বা অন্য পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অপরিমিত অর্থব্যয়। সে কালে ধনীদের দু’হাতে দানধ্যান করাকে বদান্যতা ভাবলে ভুল হবে। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘‘বড় লোকেদের যেন একটা ধারণা ছিল যে ভাল মন্দ বিচার না করিয়া খুব খরচ করিতে পারিলেই সমাজের মধ্যে প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাইবে।’’ মাতৃশ্রাদ্ধে নবকৃষ্ণ দেবের ন’লক্ষ টাকা খরচের পিছনে এই উদ্দেশ্য উঁকি দেয়।  তার মাতৃশ্রাদ্ধ উপলক্ষে যে সভা হয় এবং যেখানে সমবেত অভ্যাগত ও পণ্ডিতগণের আবাসস্থল এবং কাঙালিদের জন্য পণ্যবীথিকা সংস্থাপিত হয়, তা থেকে উক্ত অঞ্চলের নামকরণ হয় সভাবাজার বা শোভাবাজার (পূর্ব নাম রাসপল্লি)। ১৭৬৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ক্লাইভের চেষ্টায় তিনি 'মহারাজা বাহাদুর' উপাধি ও ৬-হাজারি মনসবদারের পদ পান। তার অধীনে আরজবেগী দপ্তর,মালখানা, চব্বিশ পরগনার মাল আদালত তহশিল দপ্তর প্রভৃতি ছিল। পরে তিনি কোম্পানির কমিটির রাজনৈতিক বেনিয়ান হন।


তিনি ও তার অনুগামী প্রায় শতাধিক বছর ধরে ক্ষমতা ও প্রভাব বহাল রেখেছিলেন। ১৭৯৭-এর ২২ ডিসেম্বর নবকৃষ্ণ ঘরে পালঙ্কে শুয়ে মারা যান সকলের অলক্ষ্যে।


১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধে বিজয় লাভে শোভাবাজার রাজবাড়িতে রাজা নবকৃষ্ণ দেব লর্ড ক্লাইভের সম্মানে দুর্গাপূজার আয়োজন করে বিজয় উৎসব পালন করেন। সেই থেকে প্রতি বৎসর শোভাবাজার রাজবাড়িতে দুর্গাপূজার আয়োজন হয়ে থাকে।


শোভাবাজার নাট মন্দির


শোভাবাজার রাজবাড়ি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত একটি রাজবাড়ি। রাজা নবকৃষ্ণ দেব রাজবাড়িটি নির্মাণ করেন। এই বাড়িতে কলকাতা শহরের সবথেকে পুরোনো দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। 


উত্তর কলকাতার রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিটে অবিস্থত শোভাবাজার রাজবাড়ির  মন্দির। ২৪ আগস্ট এই মন্দিরে কলকাতা শহরের প্রতিষ্ঠা দিবস অনুষ্ঠিত হয় যা সুতানুটি উৎসব নামে পরিচিত। এই উৎসব সুতানুটি পরিষদ দ্বারা পরিচালিত হয়। শোভাবাজার নাটমন্দির ও রাজবাড়িটি পুরোনো কলকাতার স্থাপত্যরীতি সংক্রান্ত ও ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।


রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিট


কলকাতা শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত রাস্তাটি উত্তর কলকাতার হাতিবাগান সংলগ্ন গ্রে-স্ট্রিট ও শোভাবাজার সংলগ্ন রবীন্দ্র সরণির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। রাস্তাটি রাজা নবকৃষ্ণ দেব (ইং ১৭৩৩-১৭৯৭)-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে।। এই রাস্তায় শোভাবাজার রাজবাড়ি, কালিকৃষ্ণ দেবের রাজবাড়ি ও শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ অবস্থিত। শোভাবাজারের দুই রাজবাড়ি ও রাজ পরিবারের দুর্গাপূজা ছাড়াও সুতানুটি পরিষদ দ্বারা পরিচালিত সুতানুটি উৎসব, যা ২৪শে আগস্ট কলকাতা শহরের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে শোভাবাজার রাজবাড়ির নাট মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়।


আদি কলকাতার শুরুতে যে তিনটি গ্রামের সমবায়ে বর্তমানের কলকাতা শহরটি গড়ে উঠেছে তার একটির নাম ছিল সুতানুটি, ১৬৯০ সালে জব চার্নক হুগলি নদীর তীরে কলিকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর - এই তিন গ্রামের সমবায়ে কলকাতা শহরের শুরু করেন, 'সুতানুটি' রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিট সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত, সেকারণে ঐতিহাসিক দিক থেকে পর্যালোচনা করলে এই রাস্তা খুবই উল্লেখযোগ্য। এছাড়া শোভাবাজার রাজবাড়ি, কালিকৃষ্ণ দেবের রাজবাড়ি, নাট মন্দির এই রাস্তায় অবস্থিত বলে এই রাস্তাটি কলকাতা শহরের খুবই গুরুত্তপূর্ণ রাস্তা।


তথ‍্যসূত্র 


বন্দোপাধ্যায়, দেবাশিষ, বনেদি কলকাতার ঘরবাড়ি, দ্বিতীয় মুদ্রণ ২০০২, পাতা. ১০১-১০২, প্রকাশকঃ আনন্দ প্রকাশক, আইএসবিএন ৮১-৭৭৫৬-১৫৮-৮

 Cotton, H.E.A, p. 72

 "Party-ism in Bengal"।

সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত সংসদ বাংলা চরিতাভিধান সাহিত্য সংসদ প্রকাশিত । 

উইকিপিডিয়া।

No comments