প্রবল জলোচ্ছ্বাসের টানেই দীঘায় উপচে পড়ল ভিড়। মঙ্গলবার নিম্নচাপ ও কৌশিকী অমাবস্যার প্রভাবে সকালে সমুদ্র ফুলেফেঁপে ওঠে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ওল্ড দীঘার বিভিন্ন মার্কেট থেকে হোটেলে জল ঢুকে যায়। ফিরে আসে গত ২৬মে যশ সাইক্লোনের স্মৃতি। টি…
প্রবল জলোচ্ছ্বাসের টানেই দীঘায় উপচে পড়ল ভিড়। মঙ্গলবার নিম্নচাপ ও কৌশিকী অমাবস্যার প্রভাবে সকালে সমুদ্র ফুলেফেঁপে ওঠে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ওল্ড দীঘার বিভিন্ন মার্কেট থেকে হোটেলে জল ঢুকে যায়। ফিরে আসে গত ২৬মে যশ সাইক্লোনের স্মৃতি। টিভির পর্দায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি দেখার পর বিকেলে পর্যটকদের ঢল নামে দীঘায়। আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকেও স্থানীয়রা উপকূলে চলে আসেন। সন্ধ্যায় আবারও জোয়ারের সময় গার্ডওয়াল টপকে জল মেরিন ড্রাইভে চলে আসে। ততক্ষণে ওল্ড দীঘা এবং নিউ দীঘার বিভিন্ন ঘাটে প্রচুর পর্যটক সমাগম হয়ে গিয়েছে। ভিড় দেখে ঝালমুড়ি থেকে আইসক্রিম ভ্যান, তেলেভাজার ভ্রাম্যমাণ স্টল নিয়ে হাজির হন বিক্রেতারা। রাত পর্যন্ত বিকিকিনি চলে।
বুধবার সকালেও জোয়ারের সময় বেশ জলোচ্ছ্বাস হয়। তাতে কিছুক্ষণ গার্ডওয়াল টপকে জল মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় এসে পড়ে। এদিন দীঘা, তাজপুর ও মন্দারমণিতে ভালো সংখ্যক পর্যটক ছিলেন। মঙ্গলবার থেকে দীঘা-হাওড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ট্রেন চালু হতেই পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে দীঘায়। ট্রেনে চেপেই বেহালার গৌতম জানা, কাঁকুড়গাছি থেকে রিপু পণ্ডা সহ আরও অনেকে এদিন দীঘায় আসেন। ওল্ড দীঘায় বিশ্ববাংলা উদ্যানে ঘুরে বেড়ানোর সময় গৌতমবাবু বলেন, উম-পুন সাইক্লোনে দীঘার সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়েছে। এখন মেরামতের কাজ চলছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে দীঘা। এখন তৃতীয় ঢেউ নিয়ে অনেকেই আশঙ্কায় আছেন। ভ্যাকসিন নেওয়ার কাজ শেষ হলেই দীঘায় আগের মতোই ভিড় জমবে।
বুধবার রোদ ঝলঝলে আবহাওয়ায় দীঘায় বেশ ভিড় ছিল। বিশ্ববাংলা ঘাট, সি-হক ঘোলা ঘাট, নিউ দীঘার হলিডে হোম ঘাট, মেরিনা ঘাট, ক্ষণিকা ঘাট, ঢেউসাগর ঘাট, যাত্রানালা ঘাটে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক ছিলেন। উম-পুনের ক্ষত সারিয়ে আবারও উপকূল বরাবর সন্ধ্যার পর আলো ঝলমল করছে। আবারও যেন পুরনো ছন্দে ফিরছে দীঘা। এই মুহূর্তে একটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু হলেও দীঘা ডিপো থেকে এসবিএসটিসি বাসের সংখ্যা কমেছে। দিন কয়েক আগেও ওই ডিপো থেকে ৪১টি বাস চলাচল করত। সম্প্রতি একসঙ্গে ২৩টি বাস ডিপো থেকে তুলে নেওয়ার পর এখন ৩৭টি বাস চলছে। এদিন ওল্ড দীঘার বিশ্ববাংলা ঘাটে কর্মরত নুলিয়া সত্যজিৎ দিণ্ডা বলেন, নিম্নচাপের ফলে ৬ ও ৭তারিখ দীঘায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ওল্ড দীঘার বেশ কয়েকটি মার্কেট জলমগ্ন হয়ে যায়। তারপর মঙ্গলবার বিকেল থেকে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। বুধবার ভালো সংখ্যক পর্যটক দীঘায় ছিলেন।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে দীঘায়। বুধবারও ওল্ড দীঘা এবং নিউ দীঘায় ভালো সংখ্যক পর্যটক ছিলেন। অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার কোটালে জলোচ্ছ্বাস দেখার জন্য পর্যটকদের অনেকেই দীঘায় আসেন। মন্দারমণি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনে সম্পাদক দেবদুলাল মহাপাত্র বলেন, মন্দারমণিতে সেভাবে জলোচ্ছ্বাস হয় না। যেকারণে এখানে জলোচ্ছ্বাস দেখার জন্য সেভাবে পর্যটক আসেননি। কিছু পর্যটক আছেন।
No comments