Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

৩৭২ বছরের পুজোয় জড়িয়ে করুণ কাহিনী

রাজার নির্দেশে এক কোপে মন্ত্রীর মুন্ডচ্ছেদ করেছিল জল্লাদ। ছিটকে গিয়েও তিনবার দুর্গানাম উচ্চারণ করে পুকুরে পড়ে গিয়েছিল কাটা মুন্ডুটি। সেই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান ঘাটালের বরদা পরগনার রাজা শোভা সিংহ। কথিত আছে, মা দুর্গার স্বপ্ন…

 




রাজার নির্দেশে এক কোপে মন্ত্রীর মুন্ডচ্ছেদ করেছিল জল্লাদ। ছিটকে গিয়েও তিনবার দুর্গানাম উচ্চারণ করে পুকুরে পড়ে গিয়েছিল কাটা মুন্ডুটি। সেই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান ঘাটালের বরদা পরগনার রাজা শোভা সিংহ। কথিত আছে, মা দুর্গার স্বপ্নাদেশেই তৈরি হচ্ছিল পুকুরটি। আজও রয়েছে সেই জলাশয়। রয়েছে সেই গল্পও। এখন যা রীতিমতো কিংবদন্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই পুকুর থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে আরাধনা করা হয় দেবী দুর্গার। দাশ পরিবারের এই পুজো (Durga Puja 2021)  এবছর পা দিল ৩৭২ বছরে।


পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির গড় মান্দারণ থেকে উঠে এসে দাসপুরের রাধাকান্তপুর গ্রামে বসতি স্থাপন করেছিলেন জনৈক জনানন্দ দাশ। তাঁরই জেষ্ঠ পুত্র শ্যাম দাশ নিজের যোগ্যতায় ঘাটালের বরদা পরগনার রাজা শোভা সিংহর রাজসভায় রাজকর্মচারী হন। শ্যামের সততায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে দেওয়ান করেছিলেন রাজা। সেই শ্যাম দাশ ছিলেন মাতৃভক্ত। কথিত আছে, এক জ্যোৎস্না রাতে লালপাড় শাড়ি পরিহিতা একটি কুমারী মেয়েকে দেখে পরিচয় জানতে এগিয়ে যান ধর্মপ্রাণ শ্যাম। তিনি এগিয়ে যেতেই অদৃশ্য হয়ে যায় সেই মেয়েটি। সেই রাতেই তিনি স্বপ্ন দেখেন, ওই কুমারী মেয়েটি আর কেউ নয় স্বয়ং মা দুর্গা। তারপরই তিনি বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। সেটা ইংরাজি ১৬৪৯ সাল। সেই থেকে দাশ পরিবারে আজও দুর্গাপুজো চলে আসছে।


শোনা যায়, রাজার নির্দেশে দেওয়ান শ্যাম দাশ পাশের গ্রাম বাসুদেবপুরে প্রজাদের জন্য ২০ বিঘার পুকুর খনন করেছিলেন। কিন্তু দেওয়ানের বিরোধীরা রটিয়ে দেয়, রাজার টাকায় নিজের একটি পুকুর কাটাচ্ছিলেন শ্যাম। ক্ষুব্ধ রাজা সরেজমিনে তদন্ত করতে জল্লাদকে নিয়ে শ্যাম দাশের বাড়ি যান। সেই সময় নিজের টাকায় শ্যাম ১২ বিঘার একটি পুকুর কাটাচ্ছিলেন। তা দেখেই চোটে যান রাজা। রাজনির্দেশে জল্লাদ এক কোপে শ্যামের ধড় থেকে মুণ্ড আলাদা করে দেয়। তার পরই ঘটে যায় সেই ঘটনা। ওই পুকুরের নাম হয় ‘জয় দুর্গা’ পুকুর।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যাম দাশের চালু করা প্রথা মেনে তালপাতার পুঁথি থেকে পুজোর মন্ত্রচ্চারণ করা হয়। বর্তমানে দাশ পরিবারে ট্রাস্ট বোর্ড গঠন করে পুজো হয়। গত বছর করোনার জেরে প্রতিমা তৈরি করা হয়নি। ঘটেই হয় পুজো। এ বছর ট্রাস্টি বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিমা গড়েই পুজো হবে। বোর্ডের প্রবীণ তিন সদস্য শান্তিলতা দাশ, মৃত্যুঞ্জয় দাশ এবং অসিত দাশ নিজেদের পরিবারের ঐতিহ্য স্মরণ করে গর্ব বোধ করেন। পুজো কমিটির সম্পাদক স্বপন কুমার দাশ বলেন, “আমাদের কুড়ি বিঘার বাস্তু ভিটাতেই মা দুর্গার পুজো হয় রীতি মেনে। আজও তার কোনও অন্যথা হ নি। গত বছর মায়ের মূর্তি গড়া হয়নি। এ বছর হবে। মূর্তি গড়ার কাজ চলছে।”

No comments