ডুরান্ড কাপ। ভারতের প্রাচীনতম ফুটবল প্রতিযোগিতা। ১৮৮৮ সালে শুরু। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বিদেশ সচিবের নামে (মোর্টিমার ডুরান্ড) সেনাবাহিনী আয়োজন করে এই টুর্নামেন্ট। শুরু সিমলায়। মাঝে নয়াদিল্লিতে দীর্ঘদিন বসেছে এই আসর। পরের কয়…
ডুরান্ড কাপ। ভারতের প্রাচীনতম ফুটবল প্রতিযোগিতা। ১৮৮৮ সালে শুরু। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বিদেশ সচিবের নামে (মোর্টিমার ডুরান্ড) সেনাবাহিনী আয়োজন করে এই টুর্নামেন্ট। শুরু সিমলায়। মাঝে নয়াদিল্লিতে দীর্ঘদিন বসেছে এই আসর। পরের কয়েক বছর গোয়াতেও হয় ডুরান্ড কাপ। ২০১৯ সালের পর এবারও কলকাতায় হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট। এবার ১৩০তম সংস্করণ। এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক ঘটনা। শুধুমাত্র বর্তমানের পাঠকদের জন্য স্মৃতি রোমন্থনে ব্যস্ত প্রাক্তন তারকারা। দুই প্রধানেই সফল শ্যাম থাপা আজ উজাড় করলেন স্মৃতির ঝাঁপি। শুনলেন জয় চৌধুরি।
বাবা-ঠাকুরদা সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। ফৌজি আবহে বড় হয়েছি। ফুটবলের প্রতি আমার আগ্রহ ছিল বরাবর। ১৯৬৪’তে গোর্খা ব্রিগেড টিমে প্র্যাকটিস শুরু করি। পরের বছর ডুরান্ড কাপে খেলা দেখে জ্যোতিষ গুহ আমাকে ইস্ট বেঙ্গলে নিয়ে আসেন ১৯৬৬ সালে। সেবারই স্কুল ফাইনাল পাশ করেছিলাম। দেরাদুনে থাকত আমার পরিবার। তাই প্রথম বছরেই ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকদের মন জিতলেও পরিবারের চাপে গোর্খা ব্রিগেডে ফিরেছিলাম। ১৯৬৯ সালে বিএসএফকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দেরাদুনের দলটি। সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে দারুণ খেলেছিলাম। ফাইনালের পরেই ফের আসে ইস্ট বেঙ্গলের প্রস্তাব। ফুটবলপ্রেমী ফিল্ড মার্শাল মানেক শ প্রথমে আমাকে ছাড়তে চাননি। তবু ফিরেছিলাম লাল-হলুদেই। ১৯৭০’এ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহন বাগানকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।
কোচ ও ফুটবলার হিসেবে মোট পাঁচজন রাষ্ট্রপতির (ভিভি গিরি, ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ, নীলম সঞ্জীব রেড্ডি, জ্ঞানী জৈল সিং ও হিদেয়াতুল্লা) হাত থেকে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স ট্রফি নিয়েছি। এই কৃতিত্ব আর কারও নেই। ডুরান্ড কাপে ফুটবল দেবতার কৃপা যেন আরও বেশি করে পেয়েছি। ফৌজি পরিবারের ছেলে বলেই হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে। মোট ন’বার ডুরান্ড কাপ ফাইনাল খেলেছি। ফুটবলার হিসেবে জিতেছি ছ’বার। রানার্স তিনবার। চারবার মোহন বাগানের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ১৯৮৬ সালে ইস্ট বেঙ্গলের কোচ ছিলাম। ফাইনালে হারতে হয়েছিল মোহন বাগানের কাছে। আম্বেদকর স্টেডিয়ামে সেরা পারফরম্যান্স অবশ্য সবুজ-মেরুন জার্সিতেই। এর মধ্যে ১৯৭৭ ডুরান্ড ফাইনাল সবচেয়ে স্মরণীয়। ফাইনাল ড্র হলে পরদিন রিপ্লে হওয়ার কথা ছিল। ডুরান্ড সেমি-ফাইনালে ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে আমার গোলেই জিতেছিল মোহন বাগান। লাল-হলুদকে হারিয়ে একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। ফাইনালে জেসিটি’র বিরুদ্ধে প্রাধান্য নিয়ে খেললেও ম্যাচ ১-১ গোলে শেষ হয়। আমার গোলে লিড নেয় মোহন বাগান। জেসিটির গুরবচন সিং শোধ করে। প্রদীপদা (কোচ পিকে ব্যানার্জি) রেগে লাল। রিপ্লে ম্যাচের আগের রাতে ঘুমোতে পারিনি। সকালে প্রদীপদার ভোকাল টনিক। সঙ্গে বাবলু আর হাবিবের আবেগতাড়িত ভাষণ। ম্যাচ জিতেওছিলাম ২-১ ব্যবধানে।
No comments