কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পর এবার মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকেও শুভেন্দু অধিকারী অপসারিত হলেন। বৃহস্পতিবার পরিচালন বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেন। এদিন দুপুরে ব্যাঙ্কে ডাকা তলবি স…
কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পর এবার মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকেও শুভেন্দু অধিকারী অপসারিত হলেন। বৃহস্পতিবার পরিচালন বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেন। এদিন দুপুরে ব্যাঙ্কে ডাকা তলবি সভায় ১৪-০ ভোটে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়। এরপরই ব্যাঙ্কে এসে ডিরেক্টরদের ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান ব্যাঙ্কের ডেলিগেট তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি।
ব্যাঙ্ক পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রদীপ পাত্র বলেন, নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ ঘোষ দায়িত্ব সমলাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিয়মমতো আগামী ত্রিশ দিনের মধ্যে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে হবে। ডিরেক্টররা যাঁকে চাইবেন তিনিই চেয়ারম্যান হবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুভেন্দুবাবুকে সর্বসম্মতিক্রমে এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। বিধানসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তারপর গত প্রায় এক বছর ধরে তিনি ব্যাঙ্কে আসা বন্ধ করে দেন। ব্যাঙ্ক পরিচালন সমিতির একাধিক সভাতেও তিনি যোগ দেননি। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ডিরেক্টররা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার অনুমতি চেয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেন। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর অনাস্থা আনার প্রস্তুতি শুরু হয়। তবে ডিরেক্টররা ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলছিলেন। এদিকে এরই মধ্যে অর্থদপ্তরের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দল ব্যাঙ্কে কোনও অনিয়ম হয়েছে কি না, তা জানতে দফায় দফায় তদন্ত চালায়। জানা গিয়েছে, তারা নবান্নে রিপোর্টও জমা দিয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ভাইস চেয়ারম্যান সহ ছ’জন ডিরেক্টর বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে অবিলম্বে সভা ডাকার জন্য সম্পাদককে চিঠি দেন। সেই মতো সম্পাদক এদিন তলবি সভা ডেকেছিলেন। সভায় রাজ্য প্রতিনিধি প্রতাপনারায়ণ পড়্যা সহ ১৪ জন ডিরেক্টর উপস্থিত ছিলেন। ডিরেক্টর কমলেন্দু দাস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বকি ১৩ জন সদস্য তা সমর্থন করেন।
ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, গত এক বছর ধরে চেয়ারম্যান ব্যাঙ্কে না আসায় সমস্যা হচ্ছিল। তাই সদস্যরা তাঁর অপসারণ চেয়েছিলেন। এদিন তলবি সভায় তাঁকে অপসারণ করা হল। নিয়ম মতো চেয়ারম্যানকেও সভায় আসার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি আসেননি। তাঁর জন্য আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করে সভা শুরু করা হয়।
অজিতবাবু বলেন, ডিরেক্টরদের অনেক দিনের স্বপ্ন আজ সফল হল। তৃণমূলের মদতে উনি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। পরে নিজের লালসা চরিতার্থ করার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলে যোগ দেন। বড় বড় কথা বলছেন। কিন্তু সামান্য ভদ্রতা দেখিয়ে নিয়ম মেনে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করার সাহস দেখাননি। অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। এদিন সদস্যরা তাঁকে অপসারণ করায় আমি তাঁদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি যখন জেলা সভাপতি ছিলাম তখন পরিচালন বোর্ডের সদস্যরা অনাস্থা অনার অনুমতি চেয়েছিলেন। তখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়। পরবর্তী চেয়ারম্যান কে হবেন, সেব্যাপারে দল সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিরেক্টরদের জানিয়ে দেবে।
No comments