আজ পথের পাঁচালী সিনেমার মুক্তির দিন।বিশ্ববিখ্যাত চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী।
১৯৫৫ সালে ২৬ অগাস্ট আজকের দিনে "পথের পাঁচালী " সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। কত বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছিল সেইসময় পথের পাঁচালী- …
আজ পথের পাঁচালী সিনেমার মুক্তির দিন।
বিশ্ববিখ্যাত চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী।
১৯৫৫ সালে ২৬ অগাস্ট আজকের দিনে "পথের পাঁচালী " সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল।
কত বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছিল সেইসময় পথের পাঁচালী- র নির্মাণে।
আজ সেই সব অজানা ইতিহাস।
সত্যজিৎ রায়" পথের পাঁচালী" নিয়ে সিনেমা করতে গিয়ে যখন সব কিছু বেচে দিয়েও টাকা জোগাড় করতে পারলেন না তখন মুখ্যমন্ত্রী বিধান রায় এসে এসে মুশকিল আসান করলেন!
এই প্রথম ভারতবর্ষে কোন সরকার আইনের বেড়াজাল ভেঙে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করলেন।
সেটা সম্ভব হল বিধান রায়ের জন্য।
এই সিনেমায় যাঁরা বিভিন্ন বিভাগে কাজ করলেন, প্রায় প্রত্যেকের চলচ্চিত্রে এটাই প্রথম কাজ ছিল।
পরবর্তীকালে এই সিনেমার হাত ধরে তাঁরা বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
এই সিনেমায় প্রথম মুভি ক্যামেরা চালালেন সুব্রত মিত্র।
এই সুব্রত মিত্র পরবর্তীকালে বিশ্ববিখ্যাত " ডিরেক্টর অফ ফটোগ্রাফি " হয়েছিলেন।
পথের পাঁচালী সিনেমায় রবিশঙ্কর সুরারোপ করলেন।
এটাও একটা ঐতিহাসিক ঘটনা।
শুধু তাই নয়, একরাত্রির মধ্যে পথের পাঁচালী সিনেমার মিউজিক কম্পোজ করে বিদেশে চলে গেলেন।
এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার!
এই সিনেমায় আর একজন মানুষের আত্মপ্রকাশ ঘটল। তিনি হলেন বিখ্যাত সেট নির্মাতা বংশী চন্দ্রগুপ্ত।
এই সিনেমায় ইন্দির ঠাকরুণের চরিত্রে চুনীবালা দেবী,সত্যজিৎ রায়ের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার।
সত্যজিৎ রায় নিজেই লিখেছেন, চুনীবালা দেবীকে না পাওয়া গেলে পথের পাঁচালী সিনেমা করা সম্ভব হত না।
পথের পাঁচালী সিনেমার জন্য চুনীবালা দেবী, ভারতীয় অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের প্রথম আত্মর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্না অভিনেত্রী হয়েছিলেন।
এটাও একটা স্মরণীয় ঘটনা।
দুঃখের বিষয়, পথের পাঁচালী রিলিজ হওয়ার আগেই তিনি মারা গেলেন।
তাই পুরস্কার নিতে যেতে পারলেন না।
পথের পাঁচালীর প্রথম যে দৃশ্যটি শুট হয়েছিল সেটা হল, কাশফুলের মধ্য দিয়ে রেলগাড়ী আসা ও অপু আর দুর্গার বিস্ময়কার ভাবে তাকিয়ে থাকা!
এই প্রথম দৃশ্যটির শুটিং হয়েছিল বর্ধমানের পালসিট স্টেশনের পাশে।
বর্ধমানবাসীদের কাছে এটা একটা গর্বের বিষয় যে,
সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়েছিল যে প্রথম দৃশ্য চিত্রগ্রহণের মাধ্যমে তার শুটিং হয়েছিল বর্ধমান জেলায়।
এই সিনেমা ১৯৫৫ সালে, ৩ রা মে নিউইয়র্কে প্রথম মুক্তি পায়।
আজকের দিনে ১৯৫৫ সালের ২৬ অগাস্ট পথের পাঁচালী কলকাতায় মুক্তি পায়।
স্বয়ং বিধান রায়, বীণা সিনেমা হলে এই সিনেমা দেখেন সত্যজিৎ রায়ের আমন্ত্রণে।
পথের পাঁচালী সিনেমা জনগণকে দেখার জন্য, কলকাতার রাজপথে বিখ্যাত চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদারের নেতৃত্বে এক বিরাট মিছিল হয়।
এটাও ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।
এবার আসি সব থেকে এক বিস্ময়কর ঘটনায়!
সত্যজিৎ রায় পথের পাঁচালী সিনেমার কোন চিত্রনাট্য লেখেননি।
সত্যজিৎ পথের পাঁচালী সিনেমার চিত্রনাট্য নানা দৃশ্যের ছবি ও নীচে বিবরণ লিখে রচনা করেছিলেন।
এটা সারা বিশ্বে বিস্ময়!
এইভাবেও চিত্রনাট্য লেখা যায়?
আপাতত শেষ হল,আজকের দিনে
"পথের পাঁচালী" চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে কিছু গর্বের কথা।
তথ্যসূত্রঃ
সত্যজিৎ রায়ের জীবন ও চলচ্চিত্র নিয়ে নানা সময়ে বিভিন্ন বই পড়ার স্মৃতি /পত্রিকার নিবন্ধ
প্রভৃতি এই লেখার অনুপ্রেরণা।
No comments