প্রদীপ কুমার মাইতি পূর্ব মেদিনীপুরঃ সরকারের কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্ব সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে নিখুঁত প্রস্তুতির নির্দেশ আগেই দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিডিও থেকে জেলাশাসক পর্যন্ত পদাধিকারীদ…
প্রদীপ কুমার মাইতি পূর্ব মেদিনীপুরঃ সরকারের কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্ব সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে নিখুঁত প্রস্তুতির নির্দেশ আগেই দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিডিও থেকে জেলাশাসক পর্যন্ত পদাধিকারীদের 'প্রস্তুতির পাঠ' দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সরকারি সূত্রের খবর, এ বার একাধিক নতুন প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন নাগরিকেরা। তাতে ভিড়ও বেশি হবে। তাই শিবিরগুলির ব্যবস্থাপনায় নূন্যতম ফাঁক রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। কিন্তু সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে কোভিড- আবহে ব্যাপক ভিড় দেখা গেল শিবিরগুলোতে। পাশাপাশি কারুর মুখে মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধি শিকেই এবং সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই নেই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা-১ ব্লকের জেড়থান গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় হাইস্কুলে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্বে মাস্ক বিহীন ছবি দেখা গেল। সেইসঙ্গে নাগরিকদের হুড়োহুড়ি এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। তবে স্থানীয় এলাকার বিধায়ক, বিডিও এবং পঞ্চা
য়েত সমিতির সভাপতির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি, এগরা-২ ব্লকের সর্বোদয় গ্রাম পঞ্চায়েতের আটবাটি হাইস্কুলে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই লম্বা লাইনে উপচে পড়া ভিড়। এ বিষয়ে এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সাধারণ মানুষের জন্য এতো নতুন নতুন সামাজিক প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। আর তাতে সমস্ত মানুষ এই প্রকল্পে যুক্ত হতে চাইছেন, তাই মানুষের ভীড় আমরা লক্ষ্য করছি। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রাখছেন। তাই তাঁরা (মানুষ) ভীড় জমাচ্ছেন। তাঁরা এই প্রকল্পগুলোতে ভীড় জমাচ্ছেন।" তবে স্বাস্থ্যবিধি শিকেই এবং সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই নেই- এই প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি বলেন, "এটা তো যাঁরা লাইন দিচ্ছে তাঁদের উপরে নির্ভর করছে। আমরা মাইকিং এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি থেকে সামাজিক দূরত্ব- সবটাই ঘোষণা করেছি এবং পঞ্চায়েতের তরফে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। আমরা এক-একটা অঞ্চলকে তিন-চারটা জোনে ভাগ করে তিন-চারদিন ধরে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি করা হচ্ছে। লক্ষী ভাণ্ডার প্রকল্পে এত মানুষ যুক্ত হচ্ছে, তাই স্বাভাবিকভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে- তা অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই। মানুষের প্রয়োজনটা অনুভব করা জরুরি। সারা ভারতবর্ষের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বাস করে। সেরকম একটা জায়গা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প খুঁজে নেওয়ার জন্য তাঁরা ভীড় করেছেন। তাঁরা নিশ্চই সাবধানে থাকার চেষ্টা করছেন। স্বাভাবিকভাবে এগুলো একটু এদিক- ওদিক হয়।" তিনি অভিযোগ করে বলেন, "আমাদের বিরোধী দল যারা আছেন, তারা এইগুলোকে নিয়ে একটু হইচই করবেন। তারাই আমাদের ফর্মটা ডাউনলোড করে বিজেপির স্ট্যাম্প লাগিয়ে বিলি করছিলেন বলেই, সরকারি প্রকল্প যাতে রাজনীতির হাতে না চলে যায়, সেইজন্য আধিকারিকদের হাতে পুরো দায়িত্ব দেওয়ার জন্য ভীড়টা বেশি হয়েছে। ফলে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর জন্য মাস্ক রাখতে পারছেন না। অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর জন্য মাস্ক পরছেন, আবার অনেকে খুলে ফেলছেন। তবে স্বাভাবিকভাবে এই পরিষেবা পাওয়া জরুরী বলে আমরা অনুভব করছি।" তবে যেহেতু দুয়ারে সরকার প্রকল্পকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য, তাই এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। এ বারের দুয়ারে সরকারের সবচেয়ে ভীড় লক্ষীর ভান্ডার, ছাত্র-ছাত্রীদের ঋণ কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী, নতুন কৃষকবন্ধু প্রকল্পে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, অর্থের বিনিময়ে লক্ষীর ভান্ডারে টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন জেলা থেকে মিলছে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, একমাত্র দুয়ারে সরকারের শিবির থেকে ইউনিক কোড- যুক্ত আবেদনপত্রকেই গ্রাহ্য করবে সরকার। এ দিন জেড়থানে আয়োজিত দুয়ারে সরকার কর্মসূচির সূচনায় ছিলেন এগরা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় কুমার রাজ, বিডিও সুমন ঘোষ, জয়েন্ট বিডিও সুমন বিশ্বাস, জেড়থান গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুষমা প্রধান, উপ-প্রধান বিজনবিহারী সাউ, সঞ্চালক আইয়ুব খান, শান্তনু মাইতি ও বিশ্বজিৎ বেরা প্রমুখ। আবার সর্বোদয় গ্রাম পঞ্চায়েতে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে ছিলেন এগরা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ কুমার প্রধান, এগরা*২ এর বিডিও কৌশিষ রায়, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান অন্নপূর্ণা মাইতি, উপপ্রধান পূর্ণেন্দু শেখর দাস, ব্লকের কর্মাধ্যক্ষ শ্রাবন্তী দাস, সত্যব্রত দাস ও প্রদীপ কুমার দাস প্রমুখ।
No comments