পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১৬টি বিধানসভা এলাকায় উন্নয়নের জন্য বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলে (বিইইউপি) ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা পেল প্রশাসন। বিধায়কদের কাছ থেকে প্রস্তাব নেওয়ার পর সেই অনুযায়ী ওই টাকায় কাজ হয়। বুধবার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের …
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১৬টি বিধানসভা এলাকায় উন্নয়নের জন্য বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলে (বিইইউপি) ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা পেল প্রশাসন। বিধায়কদের কাছ থেকে প্রস্তাব নেওয়ার পর সেই অনুযায়ী ওই টাকায় কাজ হয়। বুধবার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা করে আসার পর বৃহস্পতিবারই জেলা পরিকল্পনা অফিস থেকে দুই মন্ত্রী সহ ১৬ জন বিধায়কের উদ্দেশে চিঠি পাঠানো হয়। বিইইউপির তহবিলে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক বিধানসভার জন্য বছরে দু’টি কিস্তিতে ৩০লক্ষ করে মোট ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। প্রথম কিস্তির ৬০ শতাংশ ইউনিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়ার পর দ্বিতীয় কিস্তির অনুমোদন পাওয়া যায়। বিধায়কদের কাছ থেকে প্রস্তাব আসার পরই দ্রুত টেন্ডার করে ডাক শুরু হবে।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর অজুহাতে ২০১৯-’২০ আর্থিক বছর থেকে সংসদ সদস্য তহবিলের বরাদ্দ দু’বছরের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। একটি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য বছরে দু’দফায় আড়াই কোটি করে মোট পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই অর্থে সাতটি বিধানসভা এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হতো। কিন্তু, সংসদ সদস্য তহবিলের বরাদ্দ আপাতত বন্ধ থাকায় এই মুহূর্তে বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিইইউপি বা এমপি ল্যাডের টাকা পরিকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়। রাস্তাঘাট থেকে পানীয় জল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো, লাইন, জনস্বাস্থ্য প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়। বিধায়কদের কাজের প্রস্তাব আসার পরই সেই অনুযায়ী কাজের টেন্ডার এবং ওয়ার্কঅর্ডার করা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ন’টি কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত। বাকি সাতটি কেন্দ্রের বিধায়ক পদ্মফুল প্রতীকে জয়ী হয়েছেন। যদিও উন্নয়নের স্বার্থে প্রত্যেক বিধায়কের এলাকার জন্য সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
পাঁশকুড়া পূর্ব (কোলাঘাট) কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, আমাদের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাস্তাঘাটের কিছু দাবি আছে। ছোটদের জন্য একটি পার্কের পরিকল্পনাও আছে। পাশাপাশি নিকাশি সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে। বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলে আপাতত ওইসব কাজের পরিকল্পনা আছে। সেইমতো প্রস্তাব জমা করব। মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, আমাদের বিধানসভা এলাকায় রাস্তাঘাটের কাজ অনেকটাই হয়েছে। কিছু জায়গায় কমিউনিটি টয়লেট, পানীয় জলের ব্যবস্থা ও নিকাশির কাজের প্রয়োজন আছে। সেইমতো প্রস্তাব জমা দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি অঞ্চল থেকে এনিয়ে মতামত সংগ্রহ করব।
ভগবানপুরের বিধায়ক বিজেপির রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, আমাদের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভাড়া করা জেনারেটর আছে। বিদ্যুৎ না থাকলে ওই জেনারেটর চালাতে হয়। তাতে ভাড়া বাবদ অনেক টাকা চলে যায়। সেখানে একটি জেনারেটর দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এছাড়াও পানীয় জলের সমস্যা থাকায় দু’-তিন জায়গায় সাবমার্সিবল পাম্পের দাবি রয়েছে। রাস্তাঘাটের অবস্থাও তথৈবচ। কিন্তু, টাকার পরিমাণ ৩০ লক্ষ। ওই অর্থে খুব বেশি কিছু করা সম্ভব নয়। তাও রাস্তাঘাট মেরামতের দিকে নজর দেব।
জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক বুদ্ধদেব পান বলেন, বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলে ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা করে এসেছে। আমরা বিধায়কদের কাছ থেকে প্রস্তাব চেয়ে চিঠি ইস্যু করছি। তাঁদের প্রস্তাব আসার পরই কাজ শুরু হবে।
No comments