কর্মী সঙ্কটে ভুগছে দীঘার রাষ্ট্রীয় কাজুবাদাম উদ্যান। এখানে দীর্ঘদিন ধরেই অনেকগুলি পদ শূন্য। বর্তমানে একজন অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক, দু’জন কৃষিশ্রমিক, একজন পিওন ও দু’জন চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষীকে নিয়ে চলছে এই কাজু উদ…

কর্মী সঙ্কটে ভুগছে দীঘার রাষ্ট্রীয় কাজুবাদাম উদ্যান। এখানে দীর্ঘদিন ধরেই অনেকগুলি পদ শূন্য। বর্তমানে একজন অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক, দু’জন কৃষিশ্রমিক, একজন পিওন ও দু’জন চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষীকে নিয়ে চলছে এই কাজু উদ্যান। পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে এই উদ্যানের স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হচ্ছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বছর তিনেক ধরে এই কর্মী সমস্যা চলে আসছে। উদ্যানপালন দপ্তরের পরিচালনায় এই কাজু উদ্যানটি চলে। অবিলম্বে সমস্যা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে কাজুবাদাম উদ্যানে কর্মী নিয়োগ করার দাবি উঠেছে। এর আগে সাইক্লোন যশ পরবর্তী পরিস্থিতিতে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এই কাজুবাদাম উদ্যান পরিদর্শনে এসেছিলেন। সেখানে মন্ত্রীর কাছে কর্মীসঙ্কট নিরসন সহ নানা দাবি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আধিকারিক ও কর্মীরা। মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাসও দিয়ে যান।
দীঘা-ওড়িশা বর্ডারের ঠিক কাছেই নিউ দীঘার রতনপুর মৌজায় ৬.৮ একর সরকারি জায়গার উপর বিশাল এলাকাজুড়ে এই কাজু উদ্যানটি। এখানে কয়েকশো কাজুবাদামের গাছ রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত কাঁচা কাজু কাঁথির বিভিন্ন কাজু প্রসেসিং সেন্টারে নিলামের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। উৎপাদিত কাঁচা কাজু বিক্রি করে সরকারের আয়ও হয়। এখানে কাজুবাদাম চাষের পদ্ধতি নিয়ে নানা সময়ে সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দীঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা এই কাজু উদ্যানে এসে তাঁদের বেড়ানোর অভিজ্ঞতাকে যেমন সমৃদ্ধ করেন, তেমনি বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের পড়ুয়ারাও উদ্যানে এসে অনেককিছু শিখতে পারেন।
কাজু উদ্যান পরিচালনার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা রয়েছে কৃষিশ্রমিকদের। কাজুবাগান দেখাশোনা ও পরিচর্যা করা, কাজুর চারা তৈরি করা, সার-ওষুধ দেওয়া, উৎপাদিত কাজু সংগ্রহ করা, প্যাকেজিং সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন এই কৃষিশ্রমিকরা। কিন্তু এখানে পর্যাপ্ত কৃষিশ্রমিক না থাকার কারণে সেই কাজ ব্যহত হচ্ছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। গোটা কাজ সামলানোর জন্য অন্তত ছ’জন কৃষিশ্রমিক থাকার কথা। আগে ছ’জনই ছিলেন। একে একে কর্মীরা অবসর নেওয়ায় সেই জায়গায় নতুন নিয়োগ আর হয়নি। অবশিষ্ট দুই কৃষিশ্রমিকের মধ্যে একজন আগামী অক্টোবর মাসের দিকে অবসর নেবেন। তখন কীভাবে উদ্যান পরিচালনার কাজ চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, কাজু উদ্যানের আধিকারিক অর্থাৎ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব হর্টিকালচার পদটি দীর্ঘদিন ধরেই শূন্য রয়েছে। মহকুমা উদ্যানপালন আধিকারিক সেলিম ঢালিকেই অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। এছাড়া আপার ডিভিশন ক্লার্ক ও লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক অবসর নেওয়ায় দুটি পদও দীর্ঘদিন ধরে খালি। এর ফলে অফিসিয়াল কাজকর্মে সমস্যা হচ্ছে।
মহকুমা উদ্যানপালন আধিকারিক বলেন, কর্মী সঙ্কটের কারণে কিছু কিছু সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। তবে আমরা তা কোনওরকমে সামলে নিচ্ছি। আমরা সমস্ত বিষয় সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আগেই অবগত করেছি। আগামী দিনে পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগের মধ্য দিয়ে সঙ্কট মিটবে বলেই আমরা আশাবাদী।
No comments