নিম্নচাপের জেরে আগামীকাল, শুক্রবার পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করল জেলা প্রশাসন। বুধবার সকাল থেকেই দীঘায় এনিয়ে মাইকিং করা হয়। সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের এদিন বিকেলের মধ্যে ফিরে আসার বার্তা দ…
নিম্নচাপের জেরে আগামীকাল, শুক্রবার পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করল জেলা প্রশাসন। বুধবার সকাল থেকেই দীঘায় এনিয়ে মাইকিং করা হয়। সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের এদিন বিকেলের মধ্যে ফিরে আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ফিরতে পারবেন না, তাঁদের নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ৩০ জুলাই পর্যন্ত দীঘা, মন্দারমণি প্রভৃতি জায়গায় সমুদ্রস্নান বন্ধ করা হয়েছে। বুধবার থেকেই জেলার সমস্ত এসডিও ও বিডিও অফিসে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হওয়া বইতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে। সেইসঙ্গে সমুদ্রে জলের উচ্চতা বাড়বে। তবে, উপকূল এলাকা থেকে মানুষজনকে উঁচু জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আপাতত নেই। সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে প্রশাসন।
বঙ্গোপসাগরে ঘণীভূত নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ব্যাপক বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এরফলে সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। তাই ৩০ তারিখ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধ করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই দীঘা ও দীঘা মোহনা থানার সি-বিচ এলাকায় পুলিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এনিয়ে মাইকিং করেন। কয়েকশো ট্রলার সমুদ্রে নেমেছিল। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ফিরে এসেছে বলে সহ মৎস্য অধিকর্তা(মেরিন) সুরজিৎ বাগ জানিয়েছেন। যেসব ট্রলার ফিরতে পারেননি সেগুলিকে কাছাকাছি নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বার্তা দেওয়া হয়েছে। মৎস্যদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রতিটি সংগঠনকে এনিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
নিম্নচাপ ঘণীভূত হলেই উত্তাল দীঘার সমুদ্র দেখার জন্য পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। কৌতুহলী পর্যটকরা আগাম বুকিং করে নিয়েছেন। এদিন পর্যটকদের মাইকিং করে বার্তা দেয় প্রশাসন। আপাতত ৩০জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রস্নান করা যাবে না। রাত ৯টার পর দীঘায় কোনও দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না। একইসঙ্গে পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। দীঘায় আসার জন্য পর্যটকদের ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ অথবা ৪৮ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট সংক্রান্ত প্রশাসনের নির্দেশিকা বলবৎ আছে।
জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন অফিসার মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, নিম্নচাপের কারণে উপকূল এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই দীঘায় মাইকিং হয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের চারটি এসডিও অফিস ও ২৫টি বিডিও অফিসে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। আমরা সবরকমভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
এদিকে শ্রাবণের মাঝামাঝি সমুদ্রে ইলিশের দেখা নেই। সমুদ্রে অন্যান্য মাছ জালে উঠলেও ইলিশ যেন লুকোচুরি খেলছে। গত দু’বছরও ইলিশের খরা গিয়েছে। এবছর আশায় বুকে বেঁধে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে নামছেন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তাঁদের কপালে সেভাবে ইলিশ প্রাপ্তি ঘটেনি। নিম্নচাপ ঘণীভূত হলেই বৃষ্টি আর পুবালি হাওয়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ গভীর সমুদ্র থেকে উঠে আসে। সেই লোভে অনেক মৎস্যজীবী সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন। সতর্কতা থাকায় বেশ কয়েকজন ফিরে এসেছেন।
No comments