Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মনিপুরী রাজ্যের পেংবা মাছের বাচ্চা তৈরি করে দৃষ্টান্ত এক গৃহবধূ

এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিলো তারে রূপ-রস-মধু গন্ধ সুনির্মল...।নারীরা যে কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই। পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে সব কাজ করেন মহিলারা । সুযোগ পেলে নারীরা ও যে পুরুষের সমান ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে এমন…

 





এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিলো তারে রূপ-রস-মধু গন্ধ সুনির্মল...।

নারীরা যে কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই। পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে সব কাজ করেন মহিলারা । সুযোগ পেলে নারীরা ও যে পুরুষের সমান ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে যেতে পারে তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রমাণিত। হলদিয়া ব্লকের আরতী বর্মন, সুমিত্রা মন্ত্রী, নন্দরানী সাহু, প্রতিমা বর্মন, সেফালি দলুই মান্না মতো  বেশ কিছু মহিলা মাছ চাষি যারা আজ অন্যন্য মহিলাদের কাছে নজির।হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে বছর খানেক আগে হলদিয়া ব্লকে রাজ্যে প্রথম পেংবা মাছের চাষ হয়েছিল। পেংবা আমাদের দেশে কেবল মনিপুরেই পাওয়া যায়, এছাড়া সারা পৃথিবীতে চিনের ইউনান প্রদেশ ও মায়ানমার দেশে দেখা মেলে। আর সেই পেংবার আমাদের রাজ্যে প্রথম পরিচিতি ঘটায় হলদিয়ার মাছ চাষিরা।  মাছ চাষিদের সফল পেংবা চাষের খবর ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। একেবারে শাকাহারী পেংবা মাছ চাষের প্রসার বেশ বাড়ছে।  মাছটি খেতেও খুব সুস্বাদু। 

রুই, কাতলার সাথে মিশ্রচাষে অধিক লাভের আশায় রাজ্যের অন্যন্য মাছ চাষিরাও পেংবা চাষ শুরু করেছেন। তবে চারা পাওয়া যেত কেবল ভুবনেশ্বরে অবস্থিত মিষ্টি জল মৎস্য গবেষনা কেন্দ্রে। যদিও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের হ্যাচারী মালিকরা হলদিয়া থেকে “ব্রুডার” পেংবা মাছ সংগ্রহ করে প্রজনন উদ্যোগও নেওয়া শুরু করেছে। এদিকে সেই হলদিয়ারই এক গৃহবধূ বাড়ির পুকুরে পেংবা মাছের বাচ্চা তৈরি করে ফেলেছেন।

বসানচক গ্রামের এমনই এক সফল মহিলা হল বন্দিতা ভৌমিক । বাড়ির খিড়কি পুকুরেই তিনি পেংবা মাছের বাচ্চা তৈরি করেছেন। একজন গৃহবধূ বাড়ির কাজ সামলেও বাড়ির পুকুরের পরিচর্যা করে মাছ চাষ করতে পারা যায় সেটা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। শুধু বাড়ির চাহিদা মেটানোর মাছ চাষ নয়, এখন পেংবা মাছের চারা বিক্রি করে উপার্জন করছেন।  

গৃহবধূ বন্দিতা ভৌমিক জানান, “স্বামীর ফিশারী আছে সেখানে গিয়ে কাজে হাত লাগাই। তাছাড়া মাছ চাষে হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তর থেকে এর আগেই প্রশিক্ষন নিয়েছি। মহিলাদের কিভাবে মাছ চাষে স্বনির্ভর হওয়া যায় সে বিষয় লাগাতার কর্মসূচী নেন হলদিয়ার ব্লকের মৎস্য আধিকারিক সুমন কুমার সাহু। সুমন বাবুর কাছে আধুনিক মাছ চাষের বিষয়ে শিখেছি”।  

উলটানো মশারীর মতো দেখতে “হাপা” টাঙিয়েছেন বাড়ির পুকুরে । “ব্রুড” বা বড় প্রজননক্ষম পেংবা মাছ এনে তিনি বাড়ির পুকুরে হাপা করে ছেড়ে রেখে পরিচর্যা নিয়ে বাচ্চা তৈরি করেছেন। নিয়মিত পুকুরে জৈব জুস ও চুন প্রয়োগ করেছেন । তাছাড়া মাঝে মধ্যে পাম্প মেসিন চালিয়ে অক্সিজেনের সরবারহ দিয়ে মাছের বাচ্চা গুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এখন এই পেংবা বাচ্চা বিক্রি করে উপার্জন করছেন। 

হলদিয়ার মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, বাড়ির পুকুরে পেংবা মাছের বাচ্চা তৈরি করা এক বৈজ্ঞানিক সাফল্য যা এক গৃহবধূ করে দেখিয়েছেন। ওনার উৎসাহে আশে পাশের আরো মহিলারাও শুধু পেংবা বাচ্চা উৎপাদন করে স্বনির্ভরই নয়, বাড়ির পুকুরে মাছ চাষ করে আয়ের নতুন দিশা দেখতে পারবেন।   

হলদিয়ার মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ গোকুল মাজি বলেন, মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে সব প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।  হলদিয়ার মৎস্য আধিকারিক সরিজমিন দেখছনে ও মৎস্য প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিচ্ছেন । পেংবা মাছ চাষের সফলতার পর বাচ্চা উৎপাদনেও সফলতা মাছ চাষে হলদিয়া এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে। আমরা স্বনির্ভর দলের মাধ্যমেও ব্লকে শুধু মাছ চাষ নয় , মাছের আচার, পাপড়, একুয়ারিয়াম তৈরি, জাল বোনা, মাছের আঁশ থেকে অলংকার প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষনও দেওয়া হয়ে থাকে । সব মহিলা যদি উদ্যোগী হয়ে বাড়ির আশ পাশের খানা বা পুকুরে মাছ চাষ করেন তাহলে আর্থিকভাবে তারা লাভবান হবেন। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে , আর মাছের উৎপাদনও বেড়ে যাবে।

No comments