মহিষাদলে শুরু হল রথের নেত্র দান বা লেত উৎসব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মহিষাদল রাজ পরিবারের সদস্যরা। রাজবাড়ী শালগ্রাম শিলা বা রাজরাজেশ্বর কে এনে পুজো করে দুশো বছরের পুরনো কাঠের রথের প্রাণপ্রতিষ্ঠা শুরু হল। লেত উৎসবকে ঘিরে মহিষাদলের কা…
মহিষাদলে শুরু হল রথের নেত্র দান বা লেত উৎসব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মহিষাদল রাজ পরিবারের সদস্যরা। রাজবাড়ী শালগ্রাম শিলা বা রাজরাজেশ্বর কে এনে পুজো করে দুশো বছরের পুরনো কাঠের রথের প্রাণপ্রতিষ্ঠা শুরু হল। লেত উৎসবকে ঘিরে মহিষাদলের কার্যত রথের আগের দিন উন্মাদনা শুরু হল। কিন্তু,গতবছরের পুনরাবৃত্তি না হয়ে এবার হয়তো প্রভু জগন্নাথদেব রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন এমনটাই ভেবেছিলেন অনেকেই।
হাজার হাজার ভক্ত রথের রশিতে টানে দিয়ে প্রভুকে নিয়ে যাবেন মাসিরবাড়ি গুন্ডিচাবাটিতে। আবার এক সপ্তাহ পর ভক্তদের রশির টানে তিনি ফিরবেন বাড়ি। কিন্তু নাহ! এবছরও আর রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাওয়া হবে না জগন্নাথদেবের। এর মূল কারণ ভিলেন করোনা।
যেভাবে করোনার ভয়াল থাবা মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন সর্বস্বান্ত করেছে তাতে ইতিমধ্যে গত বছরের পর এ বছরও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের ২৪৬ বছরের প্রাচীন মহিষাদলের রথ। আর তাই আজ রথযাত্রায় মন খারাপ রথপ্রেমী সাধারণ মানুষের। প্রায় ২৪৫ বছরের প্রাচীন জেলার মহিষাদল রাজবাড়ি প্রাচীন রথযাত্রা। মহিষাদলের প্রাচীন ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের সহধর্মিণী ধর্মপ্রাণ রানী জানকি দেবী প্রথম মহিষাদলের রথের সূচনা করেছিলেন। যার পর বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। প্রথমে এই রথ ছিল সতেরো চূড়ার। কিন্তু যা আজ ঠেকেছে তেরো চূড়াতে। মহিষাদলে রথের অন্যতম ব্যতিক্রমী বিষয় হলো এখানকার রথে জগন্নাথ দেবের সঙ্গে যান রাজবাড়ীর কূলদেবতা শ্রী মদনগোপাল জিঊ। প্রতিবছর রথের দিন এই রথ টানতে হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমাতেন।
ভিড় জমতো রথের মেলাতেও। মহিষাদলের রথতলা ও ছোলাবাড়ি প্রাঙ্গণে কয়েকশো দোকান নিয়ে গমগম করতো প্রায় একমাসের এই রথের মেলা। কাঁঠাল পট্টির কাঁঠালের গন্ধে মম করতো গোটা এলাকা। কিন্তু সবকিছুই কেমন যেন ফিকে হয়ে এসেছে। গতবছরও করোনার কারণে বন্ধ ছিল রথযাত্রা। যার পুনরাবৃত্তি এবছরও, গড়বেনা রথের চাকা। এর পরিবর্তে রাজবাড়ির পালকি চড়ে প্রভু যাবেন মাসির বাড়ি। তবে মানা হবে সমস্ত প্রাচীন রীতিনীতি। রবিবার বিকেলে অন্যান্য বছরের মতোই লেদ উৎসবের দিন রথের ওপর চড়ানো হয় রাজবাড়ির কলস। চলে পুজো পাঠও। কিন্তু রথ টানা না হওয়ার কারনে কেমন যেন মন খারাপ ভক্তদের। "সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে রথ টানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে রাজবাড়ির পালকি চড়েই জগন্নাথদেব যাবেন মাসিরবাড়ি। যেখানেও মেনে চলা হবে সামাজিক দূরত্ব।এদিন রাজবাড়ী পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলে শংকপ্রসাদ গর্গ, হরপ্রসাদ গর্গ, সৌর্য্যপ্রসাদ গর্গ, স্থানীয় বিধায়ক তথা রথ পরিচালন কমিটির সম্পাদক তিলক চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা।
No comments