Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

৬৪ একর উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের চিহ্নিত জমি বেদখল

হলদিয়া বন্দরের উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত ৬৪একর জমি বেদখল হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে ওই জমিতে বসানো হচ্ছে দখলদারদের। রাজনৈতিক মদতের পাশাপাশি একাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জমি  দালালচক্র। ২০০৭ সাল নাগাদ হলদিয়…

 



হলদিয়া বন্দরের উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত ৬৪একর জমি বেদখল হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে ওই জমিতে বসানো হচ্ছে দখলদারদের। রাজনৈতিক মদতের পাশাপাশি একাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জমি  দালালচক্র। ২০০৭ সাল নাগাদ হলদিয়া পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে রত্নারচকে বন্দর অধিগৃহীত ওই জমি উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত হয়। অভিযোগ, বন্দর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় থমকে গিয়েছে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। এজন্য কয়েক বছর আগে উদ্বাস্তুদের ডেকে শুনানি করেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের এনিয়ে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ রাজনৈতিক দলগুলির। ফলে বন্দরের সুসজ্জিত টাউনশিপের পাশে ঝুপড়ির বাসিন্দা হয়েই দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন জমিহারা উদ্বাস্তুরা। ছ’দশক কেটে যাওয়ার পরও অধরা মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানা। উল্টে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত জায়গায় চলছে রমরমিয়ে জমি ব্যবসা।

জানা গিয়েছে, হলদিয়া টাউনশিপ সংলগ্ন বিষ্ণুরামচক, সাওতানচক, দুর্গাচক টাউন সংলগ্ন কুমারচক, হলদিয়া ভবন সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দশকের পর দশক ধরে বসবাস করছেন বন্দরের কয়েকশো উদ্বাস্তু। বন্দর জমি অধিগ্রহণ করলেও পুনর্বাসনের জন্য কোনও জমি না দেওয়ায় উদ্বাস্তুরা থেকে গিয়েছেন নিজেদের গ্রামেই। প্রায় ১৫০ একরের মতো জমি থেকে গিয়েছে উদ্বাস্তুদের দখলে। অধিগৃহীত এলাকা হওয়ায় বিদ্যুতের আলো, রাস্তাঘাট, পানীয় জল সহ কার্যত সবকিছু থেকে বঞ্চিত উদ্বাস্তুরা। বছরের পর বছর আন্দোলন, লাগাতার অনশন, রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিশ্রুতিই সার। কোনও কিছুতেই টনক নড়েনি বন্দর কর্তৃপক্ষের। উদ্বাস্তু সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বন্দরের শতাধিক একর জমি দখল করে গড়ে ওঠা বস্তি সমস্যা। কয়েক হাজার বস্তিবাসীকে পুনর্বাসনের দাবিতে সরব হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। 

হলদিয়ার সিপিএম নেতা অচিন্ত্য শাসমল বলেন, বন্দরের আধিকারিকদের সদিচ্ছার অভাবে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন আটকে রয়েছে। ২০০৭ সালে বন্দর সিদ্ধান্ত নেয় রত্নারচকে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। বামেদের দাবি ছিল, চিহ্নিত জমি ভরাট করে রাস্তাঘাট ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। বন্দর সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উদ্বাস্তুদের নিয়ে বামেরা লাগাতার আন্দোলনে নামে। উদ্বাস্তুরা সেসময় জমির দখলও নেয়। বন্দরের এক আধিকারিক বলেন, ঠিক হয়েছিল পুনর্বাসনের জন্য জমি রাজ্য সরকারের নোডাল এজেন্সি হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হবে। তারাই পরিকাঠামো তৈরি করবে। এনিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। পরে বন্দর ঠিক করে তারাই পরিকাঠামো গড়ে দেবে। কিন্তু, ফের জটিলতা বাধে উদ্বাস্তুদের প্লট বিলির বিষয়টি নিয়ে। উদ্বাস্তুদের উত্তরাধিকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। এজন্য ২০১৯ সালে উদ্বাস্তুদের ডেকে হিয়ারিং বা শুনানি করে বন্দর।

হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল বলেন, উদ্বাস্তুদের দ্রুত পুনর্বাসনের জন্য সম্প্রতি বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি। প্রায় এক হাজারের মতো উদ্বাস্তু মানুষ বছরের পর বছর ধরে কষ্ট পাচ্ছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্র অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বহুতল ফ্ল্যাট গড়ে সমস্যার সমাধান হতে পারে। হলদিয়া টাউন তৃণমূলের সভাপতি তথা কাউন্সিলার দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, উদ্বাস্তু এবং বস্তিবাসীর পুনর্বাসনের জন্য তৃণমূল দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। বন্দরের কারণে বহু উদ্বাস্তু এখন হলদিয়ায় বস্তিবাসী হয়ে বসবাস করছেন। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(প্রশাসন) প্রভীনকুমার দাস বলেন, উদ্বাস্তুদের সমস্যা দীর্ঘদিনের পুরনো। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। তবে বন্দরের জমি থেকে বেদখল সরাতে বন্দর হাইকোর্টের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে।

No comments