Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লকডাউনে মা মেয়েকে খুন

বিশ্বজিৎ পাত্র। খেজুরী পূর্ব ভাংনামারী গ্রামে বসবাস। কিন্তু বিদ্যাপীঠ মোড়ে একটি মিনি মার্কেটে ইলেক্ট্রিক্যাল সরঞ্জামের এবং মোবাইলের দোকান চালায়। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে সেরচক গ্রামের সাগরিকা পাত্র নামে মহিলাকে তিনি বিবাহ করেন।যদিও…

 





বিশ্বজিৎ পাত্র। খেজুরী পূর্ব ভাংনামারী গ্রামে বসবাস। কিন্তু বিদ্যাপীঠ মোড়ে একটি মিনি মার্কেটে ইলেক্ট্রিক্যাল সরঞ্জামের এবং মোবাইলের দোকান চালায়। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে সেরচক গ্রামের সাগরিকা পাত্র নামে মহিলাকে তিনি বিবাহ করেন।যদিও এটা দ্বিতীয় বিবাহ।  প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা হওয়ায় ডিভোর্স হয়। দ্বিতীয় পক্ষের এই ভদ্রমহিলা তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। কন্যা সন্তানটি বিকলাঙ্গ। পাঁচ বছর বয়স হলেও চলাফেরা তেমন করতে পারতো না। প্রায় শয্যাশায়ী ছিল। বিকলাঙ্গ কন্যাসন্তানের জন্ম দোয়ায় তার স্বামী তাকে মেনে নিতে পারেনি। তার উপর শারীরিক,   মানসিক অত্যাচার চলত। তাই স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।এর ফলে বিগত তিন চার বছর ওই মেয়েকে নিয়ে তার মা  আলাদা থাকেন  ওই বিদ্যাপীঠে মিনি মার্কেটের আরেকটি রুমে।সংসার চালাবার জন্য কোনো উপায় ছিল না। স্বামীর কোন সাহায্য না পাওয়ায়  ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনরকম বিকলাঙ্গ মেয়ে  কে নিয়ে জীবন ধারণ করতো। বিগত ২৫ শে মে থেকে যে ইয়াসের বিধ্বংসী ঝড় আর জলোচ্ছ্বাসে খেজুরির সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা গুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ কদিন ওই মহিলা আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে পারেনি। কোন কিছু সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। তার বিকালঙ্গ মেয়েটির মুখে আহার তুলে দিয়ে  সহযোগিতার করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই  প্রায় না খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে বিকলাঙ্গ মেয়েটিকে নিয়ে। এ নিয়ে আরও মানসিক যন্ত্রণা বেড়ে যায়। তাতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। বিকলাঙ্গ মেয়েটির জন্মের পর থেকে তার স্বামী যখন স্ত্রীর উপর অত্যাচার করে তার নিয়ে  বিদ্যাপীঠ এলাকার দোকানদার, মানুষজন অনেকবার  স্বামী, স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে  বিচার, পঞ্চায়েতি করেছে। তাতে কিছু ফল হয়নি। তাই আজ সকাল ৮টায় মা তার নিজের হাতে শিশুকন্যাকে খুন করে। আজকের এই মর্মান্তিক নিদারুণ পরিস্থিতিতে কন্যা হত্যার দায়ে মা এখন খেজুরি থানায় বন্দী। কোটে নিয়ে যাওয়া হবে।  বাকি দিনগুলো জেলখানাতে কাটবে। স্বভাবত, মানসিক ভারসাম্য আরো বেশি করে হারিয়ে ফেলায় এখন সে তার নিজের মত করে প্রলাপ বকে চলেছে। এলাকার মানুষজন তাকে নিয়ে ঠাট্টা ,তামাশা, বিদ্রুপ করছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক এই নিদারুণ পরিস্থিতিতে মা,তার কন্যা হত্যার দায়ে জেলে কাটাবে‌। আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারবে কিনা জানিনা। অত্যাচারী স্বামী তাহলে সমাজের বুকে কি, পার পেয়ে যাবে? প্রশ্ন এখন চারদিকে উঠছে। আদালত তারবিচার করবে। আমরা খেজুরি বাসি এই নিদারুণ এক পরিস্থিতির সাক্ষী হয়ে রইলাম।

No comments