আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা। আজ রাত্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন তৌড়ি বেগুণবাড়িতে ফলহারিণী কালীপূজা। পূজাটি বেশ প্রাচীন। প্রচলিত দুটি লোককথা অনুসারে কলেরার মতো মহামারি থেকে মুক্তি পেতে এখানে পূজা প্রবর্তন হয়েছিল। ইতিহাসাশ্রিত লোককথা অনু…
আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা। আজ রাত্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন তৌড়ি বেগুণবাড়িতে ফলহারিণী কালীপূজা। পূজাটি বেশ প্রাচীন। প্রচলিত দুটি লোককথা অনুসারে কলেরার মতো মহামারি থেকে মুক্তি পেতে এখানে পূজা প্রবর্তন হয়েছিল। ইতিহাসাশ্রিত লোককথা অনুসারে এলাকায় কলেরা মহামারি আকারে দেখা দিলে কাশীজোড়া পরগনার রাজা রাজনারায়ণ রায়ের (রাজত্ব কাল ১৭৫৬-১৭৭০) সেরা দুই লেঠেল বাগদি সম্প্রদায়ভুক্ত দীনু ডাং ও হীনু ডাং মা কালীর কাছে মানত করেছিল তাদের সন্তানরা সুস্থ হয়ে উঠলে ঘটা করে মায়ের পূজা করবে। সন্তানরা সুস্থ হল কিন্তু অর্থের সংকুলান করতে না পেরে ডাকাতি করা অর্থে তারা মায়ের পূজা করেছিল। সেই কারণে এই পূজা ডাকাতিয়া কালীপূজা নামে পরিচিত। প্রথা অনুসারে আজো মশালের আলোয় পূজার ঘটোদক করা হয়।আবার জনশ্রুতিমূলক লোককথা অনুসারে একসময়ে এলাকায় কলেরার প্রকোপে বহু লোক মারা গিয়েছিল। সেসময়ে একদিন সরাইঘাট পোলের কাছে একটি কালীর প্রতিমাকে ভাসতে দেখে এলাকায় রটে গেল মা এসেছেন পূজা নিতে। মাকে পূজা করলে কলেরা মুক্তি হবে। সেই কাঠামোতে মায়ের পূজা হয়েছিল।এলাকা থেকে মহামারি দূরও হয়েছিল।
বর্তমানে পূজাটি হয় চৈতন্যপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সরাইঘাট মৌজার শেষপ্রান্তে যার দুপাশে আছে ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফতেচক ও পাওবাঁকি মৌজা। এখানে তিনটি গ্রামের টেরি সংযোগ হওয়ায় বিকৃত উচ্চারণে তিন তৌড়ি নামে পরিচিত। সেসময়ে অদূরে বেগুণ খেত থাকা তা আবার তিন তৌড়ি বেগুন বাড়ির কালীপূজা নামে প্রচলিত।
পূর্বের দালান মন্দিরের স্থলে অবিকল দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী কালীমন্দিরের আদলে বর্তমানে নির্মিত হচ্ছে এই অনুপম মন্দিরটি। এবারের পূজায় মায়ের কাছে প্রার্থনা তিনি যেন অচিরেই দিব্য খড়্গাঘাতে করোনাসুরকে বিনাশ করে এ বিশ্বকে রক্ষা করেন। (দয়া করে কেউ নকল বা কপি পোস্ট করবেন না। তথ্যসূত্র- পাঁশকুড়ার জনপদ ISBN 81-89034 -90-2/ সুধাংশুশেখর ভট্টাচার্য)
No comments