Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বাংলার বাঘ স‍্যার আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায়ের জন্ম-বার্ষিকীতে প্রণাম

ইংরেজ সাহেবের মুখের উপর যোগ‍্য জবাব দিয়েছিলেন কলেজ-পাস যুবক আশুতোষআশুতোষ মুখোপাধ‍্যায় ১৮৮৪ সালে প্রেসিডেন্সী কলেজ হতে বি.এ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরের বছর ১৮৮৫ সালে তিনি গণিত বিষয়ে এম.এ পরীক্ষাতেও সর্বোচ্চ স্থান পান। গ…

 




ইংরেজ সাহেবের মুখের উপর যোগ‍্য জবাব দিয়েছিলেন কলেজ-পাস যুবক আশুতোষ

আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায় ১৮৮৪ সালে প্রেসিডেন্সী কলেজ হতে বি.এ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরের বছর ১৮৮৫ সালে তিনি গণিত বিষয়ে এম.এ পরীক্ষাতেও সর্বোচ্চ স্থান পান। গণিত এবং পদার্থবিদ্যা - দুটি বিষয়ে তিনি এম.এ ডিগ্রি লাভ করেছিলেন, যা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম। প্রায় সাত ফিট লম্বা, বিরাট চেহারার আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায় যখন সদ‍্য কলেজ পাস করেছেন, তখন ডিরেক্টর ক্রফট সাহেব তাঁকে ২৫০ টাকার মাইনেতে শিক্ষা-বিভাগে স্থায়ী কাজ দিতে চাইলেন। আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায়দের পারিবারিক অবস্থা খুব ভালো ছিল, কিন্তু এতটা ভালো ছিল না যে, সেইসময়ে ভবিষ্যত উন্নতির সম্ভাবনা-যুক্ত   পাকা সরকারি কাজ তার উপর শুরুতেই ২৫০ টাকার মাইনে তিনি অগ্রাহ্য করতে পারেন - তা সত্ত্বেও যুবক আশুতোষ চাকরি করার জন‍্য শর্ত দিলেন। শর্ত দিলেন - একই কাজে একজন সাহেবের যা যা অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা থাকে, অর্থাৎ পদ ও বেতন কাঠামো, তা তাঁকেও দিতে হবে। এবং তিনি সবসময় কলকাতাতেই থাকবেন অর্থাৎ তাঁকে কখনই স্থানান্তরিত করা যাবে না। শিক্ষা-বিভাগের ডিরেক্টর ক্রফট সাহেবের মুখের উপর এইভাবে কথা বলার ক্ষমতা কারুর ছিল না। যুবক আশুতোষের এইরকম স্পষ্ট কথায় ক্রফট সাহেব হতবাক হয়ে গেছিলেন।


আর একবার, লর্ড কার্জন আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায় কে বিলেত যাবার প্রস্তাব দেয়। উত্তরে আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায় বলে দিলেন - ''আমার মা'এর বারণ আছে, তাই আমি বিলেত যেতে পারবো না।"

অবাক কার্জন খুব রেগে গিয়ে বললো - "মা কে গিয়ে বলুন, ভারতের সর্বপ্রধান রাজপুরুষের আদেশ, তাই আপনাকে বিলেত যেতে হবে।"





আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায় আবার শান্ত ভাবে উত্তর দিলেন - "আমি জানি আমার মা কি উত্তর দেবেন.. মা বলবেন, আশুতোষের মা ছাড়া অন‍্য কারুর আশুতোষ কে আদেশ দেবার অধিকার নেই।"

আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায়ের বড়সড় চেহারাতে আমরা সকলে পরিচিত। কিন্তু ছোটবেলায় তিনি ছিলেন খুব রোগা রুগ্ন। তাঁর মা বহু যত্নে তাঁকে লালন-পালন করেন। বালক বয়সে তিনি মুখচোরা ছিলেন। তিনি কখনই ধূমপান করতেন না, পান খেতেন না, সাঁতার কাটতে ভালবাসতেন। ছোট থেকেই হাসি-ঠাট্টা বিশেষ পছন্দ করতেন না। তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল অসাধারণ। ছিলেন ভাবুক প্রকৃতির। বহুকাল নিরামিষ খেয়ে জীবন কাটিয়েছেন। শেষে ডাক্তারের পরামর্শে অল্প অল্প মাছ খেতে বাধ‍্য হয়েছিলেন। ছোট থেকে পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় তিনি বৃত্তি পেয়ে অনেক টাকা পেতেন, তা প্রায় দশ-পনেরো হাজার টাকা হবে। ছোট থেকেই তিনি এই টাকা অন‍্য কোথাও খরচ করেননি। বাবা ও মা-এর সহজাত শিক্ষায় ছোট থেকেই তিনি সবটাই খরচ করেছিলেন শুধুমাত্র বই কিনতে।

বাংলার বাঘ স‍্যার আশুতোষ মুখোপাধ‍্যায়ের (২৯ জুন ১৮৬৪ - ২৫ মে ১৯২৪) জন্ম-বার্ষিকীতে আমাদের প্রণাম প্রণাম প্রণাম



No comments