কোভিড১৯ সারাদেশের সাথে রাজ্যে ও জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিভিন্ন জায়গায় সংক্রমিত কমলেও অল্প বয়সে মানুষদের covid-19 আক্রান্ত করছেন অনেকেই মারা গেছেন। ১৯৩২ ও ২০২০ সালের পুনরাবৃত্তি ফের ২০২১শে। করোনা কাঁটায় এব…
কোভিড১৯ সারাদেশের সাথে রাজ্যে ও জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিভিন্ন জায়গায় সংক্রমিত কমলেও অল্প বয়সে মানুষদের covid-19 আক্রান্ত করছেন অনেকেই মারা গেছেন। ১৯৩২ ও ২০২০ সালের পুনরাবৃত্তি ফের ২০২১শে। করোনা কাঁটায় এবছরও গড়বেনা ঐতিহ্যবাহী মহিষাদল রাজবাড়ির ২৪৬ বছরের প্রাচীন রথের চাকা। বসবে না ঘটা করে মেলাও। তবে রথের চাকা না গড়লেও রথের সমস্ত রীতিনীতি পালন করা হবে। রথের আগে স্নানযাত্রাও এবছর আর সেভাবে ঘটা করে হবে না। নিয়ম রক্ষার রীতিনীতি পালন হবে সমস্ত ক্ষেত্রেই। গত বছরের মতো এ বছরও রাজবাড়ীর কুলদেবতা মদন গোপাল জিউ ও প্রভু জগন্নাথকে রথের মধ্যে তোলা হলেও তারা মাসির বাড়ি যাবেন পালকি চড়ে। রথ থাকবে রথের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে। তবে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে মেলায় যদি অল্প বিস্তর দোকান বসানো যায় তা নিয়ে আগামী সপ্তাহেই রথ পরিচালন কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মহিষাদলের ইতিহাসের পাতা উল্টালে জানা যায়, ২০২০সালের আগেও ১৯৩২ সালেও একবার মহিষাদলের রথযাত্রা বন্ধ ছিল। তখন ভারতে ব্রিটিশদের অত্যাচার চরমে। এমন সময় ওই বছর রথের দিন এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর ওপর চরম অত্যাচার চালায় ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী। যার প্রতিবাদে রথ একবার টানার পর রথ টানা বন্ধ রাখে দর্শনার্থীরা। তারা ব্রিটিশদের অত্যাচারের প্রতিবাদে দাবি জানায়। দাবি উঠলো পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে নচেৎ ততকালীন সতেরো চূড়া রথের মাথায় লাগাতে হবে ভারতের জাতীয় পতাকা। আর এই টানাপোড়েনের মাঝে ওই বছর এখানে বন্ধ হয়ে যায় রথ টানা। এরপর থেকে অবশ্য রথ টানা স্বাভাবিক নিয়মেই চলতে থাকে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার কোপে রথ বন্ধ হয়। যার পুনরাবৃত্তি চলতি বছরেও। তবে মাঙ্গলিক সমস্ত আচার বিধি পালন করা হবে। রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের সহধর্মিণী ধর্মপ্রাণ রানী জানকি দেবী মহিষাদলের রথের সূচনা করেছিলেন। মহিষাদল রাজ পরিবারের এই প্রাচীন রথের অন্যতম দ্রষ্টব্য বিষয় হল এই রথে জগন্নাথ দেবের সঙ্গে যান রাজবাড়ীর কুলদেবতা গোপালজিউ। তবে অন্যান্য বছর হাজার হাজার দর্শনার্থীর কাছির টানে রথে চড়ে মাসি বাড়ি গেলেও এবার জগন্নাথদেব ও গোপালজিউ মাসির বাড়ি যাবেন রাজবাড়ীর পালকি চড়ে। মহিষাদলের ঘাঘরা গ্রামে এক সপ্তাহ কাটানোর পর ফেরত রথের দিন ফের পালকি চড়ে জগন্নাথ ও গোপালজিউ ফিরবেন বাড়িতে। এর পাশাপাশি এবছরও সেভাবে ঘটা করে মেলা বসবে না। তবে অল্পবিস্তর দোকান যদি প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে বসানো যায় তা নিয়ে আগামী সপ্তাহেই পরিচালন কমিটির বৈঠক করা হবে। রথ পরিচালন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা মহিষাদল বিধানসভার বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, "এবছরও রথ টানা বন্ধ থাকবে। কোভিড নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে তার মানে এই নয় যে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে রথ টানা হবে। তবে মাঙ্গলিক সমস্ত আচারবিধি পালন করা হবে এবং রথে চড়ে জগন্নাথদেব মাসির বাড়ি যাবেন। মেলাও সেভাবে বসবে না তবে অল্প বিস্তর দোকান বসানো যায় নাকি তা আগামী সপ্তাহে রথ পরিচালন কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হবে।"
No comments