২মে রবিবার ভোট গণনায় শুরু থেকে টানটান উত্তেজনা।কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে দই পড়বে সেই দিকে তাকিয়েছিল রাজ্যের মানুষ। নন্দীগ্রাম সহ রাজ্য কার হাতে যাবে। রাজ্যের সঙ্গে নন্দীগ্রাম কোন রাউন্ডে এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপ…
২মে রবিবার ভোট গণনায় শুরু থেকে টানটান উত্তেজনা।কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে দই পড়বে সেই দিকে তাকিয়েছিল রাজ্যের মানুষ। নন্দীগ্রাম সহ রাজ্য কার হাতে যাবে। রাজ্যের সঙ্গে নন্দীগ্রাম কোন রাউন্ডে এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার কোন রাউন্ডে এগিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু শেষমেশ জয়ের শিরোপা ছিনিয়ে আনেন নন্দীগ্রামের বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। এর পরেই গোটা ঘটনায় তুলকালাম শুরু হয় হলদিয়া নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর জয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুনর্গণনার দাবিতে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হলদিয়ার গভমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুলের গণনা কেন্দ্রের আশপাশ। সেই রাতে হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড়ে বেশ কয়েকটি মোটর বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি একাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থকদের দোকান ভাঙচুর করা হয়। একই ঘটনা ঘটতে থাকে নন্দীগ্রামেও। নন্দীগ্রামের বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী গাড়ি ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। শুভেন্দু অধিকারীর কাট আউটে জুতোর মালা পরিয়ে গালাগালি হয়।
গোটা রাজ্যে তৃণমূলের জয়ের খবর আসার পর কালীঘাট থেকে নন্দীগ্রামের গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২মে বিকেলে প্রথমে খবর ছড়িয়ে পড়ে নন্দীগ্রাম থেকে জয়লাভ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এর কিছুক্ষণের মধ্যেই গণনা কেন্দ্র থেকে শুভেন্দুর জয়ের খবর জানানো হয়। এই ঘটনার পরেই কার্যত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। মমতার অনুগামীরা হলদিয়ার গণনা কেন্দ্র চত্বরে পুনর্গণনার দাবিতে সেই রাতে ক্রমশ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ওই দিন রাতেই হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড় এলাকায় রাস্তার উপর বেশ কয়েকটি ডাম্পার দাঁড় করিয়ে দিয়ে রাস্তার উপর বসে পড়ে অবরোধ-বিক্ষোভ শুরু করেন। পাশের হোটেলে থাকা বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীর মোটরবাইকে ও আগুন ধরিয়ে দেয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। পাশাপাশি বেধড়ক মারধর করা হয় হলদিয়া এলাকার বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে। এমন সময় শুভেন্দু অধিকারি সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য হলদিয়ার মহকুমা শাসকের দপ্তরে আসেন। তখন কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নয় হলদিয়া মহকুমা শাসকের দপ্তর চত্বরে। শুভেন্দুকে দেখতে পেয়ে কার্যত বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূলের কর্মীরা এবং গণনায় কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তারা। ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা শুভেন্দুর গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। এলাকা মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠায় শুভেন্দুর নিরাপত্তারক্ষীরা ওই এলাকায় ছেড়ে শুভেন্দুকে বের করে নিয়ে যান। এরপর মঞ্জুশ্রী মোড়ে সারারাত ধরে অবরোধ-বিক্ষোভ চলে। সোমবার সকালেও দিনভর অবরোধ বিক্ষোভে শামিল হন তারা। বিক্ষোভ অবস্থানে যোগদেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি।অন্যদিকে নন্দীগ্রামে রবিবার রাতে আট থেকে দশজন বিজেপি কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরও করা হয় একের পর এক বিজেপি কর্মীদের। সোমবার সকালে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পুনর্গণনার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে হলদিয়া থেকে যখন ইভিএম সোমবার সকালে বের করে নিয়ে আসা হচ্ছিল ঠিক সেই সময় ওই এলাকায় জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি আজগর আলীর নেতৃত্বে। গোটা ঘটনায় পুনর্গণনার দাবি জানাচ্ছেন তারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইলেকশন এজেন্ট সেক সুফিয়ান বলেন, "গননায় কারচুপি করা হয়েছে। খেজুরি বিধানসভা কেন্দ্রে যদি পুনর্গণনা হয় তবে আমরাও নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার দাবি জানাচ্ছি।"
অন্যদিকে নন্দীগ্রামের দাপুটে বিজেপি নেতা তথা তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, "এতোগুলো জায়গায় তৃণমূল জিতেছে। আমরা তো সে সমস্ত জায়গায় মানুষের নৈতিক জয় স্বীকার করে নিয়েছি। সেক্ষেত্রে আমরা তো কোনো সমস্যা করছি না। পরাজয়টা কেন এড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী? কিন্তু এটাই তো বাস্তব। নির্বাচন কমিশন শুভেন্দুবাবুকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। যেতেও পুনর্গণনার দাবি জানাতে পারেন কিন্তু নন্দীগ্রামের শুভেন্দু বাবু জয়ী হবেনই।"
তৃতীয় দিনে উপস্থিত রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃনমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি আজগর আলী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সম্পাদক অর্নব দেবনাথ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংখ্যালঘুসেলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার পাশা, জেলা তৃনমূল সংখ্যালঘুসেলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেক হাসিকুল ইসলাম, সেক আনসার আলি এছাড়াও অনান্য নেতৃত্ব বৃন্দ।
No comments