Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

শহীদ মঙ্গল পান্ডে

পরাধীনা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম শহীদ ছিলেন মঙ্গল পান্ডে ।
আজ থেকে একশত চৌষট্টি বছর আগে ভারতের বুকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম মশাল জ্বলে ওঠে কলকাতার উপকণ্ঠে ব্যারাকপুরে।
মঙ্গল পান্ডে ছিলেন এক ভারতীয় সৈনিক যিনি ১৮৫৭ …

 







পরাধীনা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম শহীদ ছিলেন মঙ্গল পান্ডে ।
আজ থেকে একশত চৌষট্টি বছর আগে ভারতের বুকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম মশাল জ্বলে ওঠে কলকাতার উপকণ্ঠে ব্যারাকপুরে।
মঙ্গল পান্ডে ছিলেন এক ভারতীয় সৈনিক যিনি ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের সূচনা হওয়ার আগেই ঘটে যাওয়া ঘটনায় মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ৩৪ তম বেঙ্গল নেটিভ ইনফ্যান্ট্রি (বিএনআই) রেজিমেন্টের সিপাহী (পদাতিক) ছিলেন।

#জন্মঃ-১৯ শে জুলাই ১৮২৭ সাল, বলিয়া, উত্তর প্রদেশ

#আত্মবলিদান :
৮  ই এপ্রিল ১৮৫৭ সাল

১৮৫৭ সাল মার্চ মাস শেষ হয়ে শীত সবে বিদায় নিয়েছে।ঘাসের ওপর শিশির বিন্দু সকালের রােদ মেখে চকচকে হয়ে ওঠে।কিছু দূরেই কূল কূল করে বয়ে চলেছে স্রোতস্বিনী পবিত্র গঙ্গা।কলকাতার উপকণ্ঠে ব্যারাকপুরের এই ক্যান্টনমেন্ট ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান ঘাঁটী।এখান থেকেই বিদ্রোহের নিশান আকাশের বুকে পতপত করে  উড়েছিল।মঙ্গল পাণ্ডে নামের এক সামান্য(অসামান্য) সিপাই তার হাতের বন্দুক থেকে নিক্ষেপ করেছিলেন  আধুনিক ভারতের  মহাবিদ্রোহের (কুরুক্ষেত্রের) প্রথম গুলিটি।তিনিই প্রথম বারুদের স্তূপে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন জ্বলন্ত মশাল। যদিও তার এই প্রয়াস সফল হয় নি।কিন্তু তার আত্মবলিদান ভারতব্যাপী এক মহা অভ্যুত্থানের সূচনা করেছিল।দেখতে দেখতে এই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল  উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে।উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত ভারতবাসীর প্রবল বিরােধিতা এবং সুচতুর ইংরেজের সমর কুশলতা এই বিদ্রোহকে সফল করতে দেয়নি।কিন্তু বিশ্ব ইতিহাসের প্রতিবাদী আন্দোলনের  পাতায় সিপাহী বিদ্রোহ এক উল্লেখযােগ্য স্থান দখল করেছে।
এই আন্দোলনের পরিকল্পনা নানা সাহেবের।তার পাশে ছিলেন ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ ,ছিলেন  তাঁতিয়া তোপি,ছিলেন সেখ আজিমুল্লাহ আরও কয়েকজন । তবে নানাসাহেব আর আজি মুল্লাহই ধীরে ধীরে গােটা ভারতের সেনা ছাউনিগুলিতে বিদ্রোহ সংগঠিত করে তুলেছিলেন ।এই বিদ্রোহের প্রাণপুরুষ ছিলেন শহীদ  মঙ্গল পাণ্ডে।
পুজো আচ্চা আর ধ্যানে বেশ খানিকটা সময় ব্যায় করেন পাণ্ডেজী । ব্যারাকপুরের ছাউনিতে সকল  সিপাই  পাণ্ডেজীকে শ্রদ্ধা করতেন , ভালােবাসতেন । তা বাসবে নাই বা কেন ! একে ব্রাহ্মণ মানুষ , নিত্য দুবেলা গঙ্গাস্নান করেন । ত্রিসন্ধ্যা গায়ত্রী মন্ত্র জপ করেন । সাত্ত্বিক আহার করেন ,নিজে ধর্মভীরু হলেও ইসলাম বা অন্য ধর্মের প্রতি তার পুরাে শ্রদ্ধা ছিল। তাই তাঁকে পছন্দ করার ব্যাপারে জাতি বা ধর্ম কোনাে গণ্ডি টানতে পারেনি। পাণ্ডেজী সবার ভালােবাসার , সবার শ্রদ্ধার ।মঙ্গলের মত এমন কতাে সিপাই জীবিকা অর্জনের আশায় রণক্ষেত্রে মারা গেছেন , অনেকে আহত অবস্থায়  দেশে ফিরে গেছেন । কিন্তু পৃথিবীর বুকে মাত্র ছাব্বিশটি বসন্ত বেঁচে থাকার ' শংসাপত্র 'পাওয়া মঙ্গল  আজও এক অবিস্মরণীয় চরিত্র হয়ে বেঁচে আছেন। অলৌকিক বীরত্বকে পাথেয় করে চারণ কবিরা গান বেঁধেছে । এমনকি তাকে কেন্দ্রীয় চরিত্র করে মুক্তি পেয়েছে বলিউডের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।এই ভাবে  মঙ্গল কিংবদন্তির এক মহানায়ক হয়ে উঠেছেন ।

১৮৫৭ সালের ২৯ শে  মার্চের সেই ঘটনাবহুল মুহূর্তে । দীর্ঘদিন ধরে নানাকারনে সিপাইদের মনে ক্ষোভ জমতে থাকে । প্রতিমূহুর্তে তাদের দাঁড়াতে হচ্ছে অন্যায় অবিচারের সামনে।নেটিভ বা কালো আদমি বলে সহ্য করতে হচ্ছে অবর্ণনীয় অপমান।কিন্তু এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন এমন মানুষ কোথায়?এই অবস্থায় এগিয়ে এলেন ছাব্বিশের যুবক মঙ্গল পান্ডে।
তখনকার দিনে ৫৩ এনফিল্ড রাইফেলের টোটার সামনের অংশ দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে বন্দুকে বারুদ ভরতে হোত।মঙ্গল খবর পেয়েছেন গরু আর শুয়ােরের চর্বি  মাখানো আছে ঐ টোটায়।সেই টোটা দাঁত দিয়ে ছিঁড়তে বাধ্য হচ্ছেন জাতি - ধর্ম- নির্বিবেশে।জাতি ও ধর্ম খােয়াচ্ছেন হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। অপেক্ষায় আছেন পাণ্ডেজীর মতামতের জন্য । তাঁরা তাকিয়ে আছেন পাণ্ডেজীর পরবর্তী কর্মপন্থার দিকে।
ইংরেজদের ওপর রাগ এবং অপরিসীম বিদ্বেষ ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকাচ্ছে  সিপাইদের মধ্যে। তাঁরা বুঝতে পেরেছে , ইংরেজরা তাদের জাত মারতে চাইছে । কিন্তু তাঁরা কিছুই করতে পারছেন না। পাণ্ডেজীর মতাে তারাও বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীতে যােগ দিয়েছে। পেটের দায়ে কাজ করতে এলেও তারা জাত খােয়াতে রাজি নয়। একদিন গভীর রাতে কয়েকজন মিলে পাণ্ডেজীর  সাথে দেখা করতে এসেছিল । পাণ্ডেজী তখন সবে পুজো সেরে উঠেছেন । কপালে জ্বলজ্বল করছে রক্ততিলক। গলায় ধপধপে সাদা মোটা পৈতে। ওদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলেন পান্ডেজী । জিগ্যেস করলেন , গরু আর শূয়ােরের চর্বি দিয়ে তৈরি টোটা তাদের জাত মারছে। তাই না ? নিশ্চয়ই ! তাহলে আমাদের কী করা উচিত ? সাহেবদের জানিয়ে দিতে হবে , ঐ টোটা আমরা আর কেউ ব্যবহার করব না। মঙ্গলপাণ্ডে একটু চিন্তা করে আবার বললেন , বিদ্রোহের সঠিক সময় এবং মুহূর্ত যে কোনাে সময় এসে যাবে। তােমরা সকলে তৈরি থেকো। দেরি হচ্ছে বলে মুখ ভার করে যারা এসেছিলেন তারা খুশিতে ডগমগ করতে করতে চলে গেলেন। সকলেরই ধারণা , এবার একটা কিছু ঘটতে চলেছে।
১৮৫৭ সালের ২৯ শে মার্চ বসন্তকালের মনােরম সকালের মতাে সেদিনও বিরঝিরে হাওয়া দোলা দিয়ে যাচ্ছে গাছের পাতায় পাতায় । খুশি মনে গান গাইছে বুলবুলি,দোয়েল, কোকিল, বউ কথা কও ।ছাউনিতে সিপাইরা তৈরি হচ্ছে আর একটি নূতন দিনের কাজ শুরু করার জন্যে । পাণ্ডেজী শেষ রাতে উঠে পুজো - পাঠ শেষ করে ফেলেন। তার কপালে জ্বলজ্বল করছে রক্তচন্দনের তিলক । চোখে মুখে দৃপ্ত অঙ্গীকার । কীসের ? তা কেউ জানে না । সার্জেন্ট মেজর হিউসন একটু আগে ঘােড়া ছুটিয়ে সেখান দিয়ে গেছেন । তিনি একা নন , সঙ্গে আরও অনেক ইংরেজ সামরিক অফিসার ছিলেন। সকালে সিপাইদের মধ্যে কেউ কেউ পাণ্ডেজীর কাছে যায় । তার পুজো , শাস্ত্রপাঠের সময় চুপ করে বসে থাকে । তারপর তাকে প্রণাম করে চলে আসে । সেদিন যারা পাণ্ডেজীর সাথে দেখা করতে গিয়েছিল তারা ফেরার পথে বলাবলি করছিল ইংরেজ সামরিক বাহিনীর অফিসাররা আজ পাণ্ডেজীকে স্যুটিং রেঞ্জে নিয়ে যাবে। বাধ্য করবে ওঁকে দাঁত দিয়ে গরুর চর্বি মাখানাে টোটা ছিঁড়তে। বােধহয় পাণ্ডেজী কিছুতেই রাজি হবেন না।
সেই সুন্দর সকালে কেউ ভাবতেও পারেনি ব্রিটিশ কোম্পানির ভারত শাসনের সূর্য অস্তমিত হওয়ার সূচনা হবে ব্যারাকপুরের ঐ ছাউনিতেই , শুরু হবে দিন গােনার পালা, শুরু হবে ভারত মাতার এক বীর সৈনিকের আত্মবলিদানের কাহিনী ।পলাশীর যুদ্ধের ঠিক একশ বছর পরে এই ধর্মযুদ্ধের সূচনা হবে। এখনও বিউগল বাজেনি।ব্যারাকে ব্যারাকে সিপাইরা। হঠাৎ সামনের প্যারেড মাঠে ছুটে এলেন ক্ষিপ্তপ্রায় এক সৈনিক । তার হাতে একটি বন্দুক । দৃপ্ত ভঙ্গিতে বন্দুক উঁচু করে ধরে তিনি চিৎকার করে উঠলেন , “ ভাই সব আর চুপ করে বসে থেক না । ভগবানের দোহাই তােমরা বেরিয়ে এসো । গুলি করে মেরে ফেল ফিরিঙ্গী শয়তানদের । এসো , মারাে মারাে । ”
যিনি এই আদেশ করেছেন তিনি আর কেউ নন স্বয়ং মঙ্গল পাণ্ডে । সার্জেন্ট মেজর হিউসন সেখান দিয়ে ফিরছিলেন । তিনি এই দৃশ্য দেখে সামনের ব্যারাকের দেশি সিপাইদের আদেশ দিলেন , গ্রেপ্তার করাে ওকে --- অ্যারেস্ট হিম । হিউসন অবাক হয়ে দেখলেন , একজন সিপাইও তাঁর  আদেশ পালন করতে এগিয়ে এল না ! তারা নির্বিকার , তারা হতবাক ! কোন উপায় না দেখে তিনি ঘােড়া ছুটিয়ে পাণ্ডেজীর কাছে যাবার চেষ্টা করলেন , তার আগেই পাণ্ডেজীর হাতের বন্দুকটা গর্জে  উঠল।
হিউসনের বুকে এসে লাগল সেই গুলি। সেখানেই ঘােড়া থেকে পড়ে গেলেন সার্জেন্ট মেজর হিউসন । গােলমাল কানে গিয়েছিল লেফটেনেন্ট বাফের । গুলির শব্দও শুনেছেন । তিনি ঘােড়া ছুটিয়ে সেদিকে আসতেই মঙ্গল পাণ্ডের বন্দুক থেকে ছুটে গেল আর একটা গুলি । বাফের গায়ে না লেগে গুলিটা লাগল ঘােড়ার পেটে। সওয়ার শুদ্ধ ঘােড়া মাটিতে পড়ে গেল ।মাটি থেকে লাফিয়ে উঠে মঙ্গল পাণ্ডেকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লেন বাফে ।পাণ্ডেজীর মাথা ঘেঁষে গুলিটা বেরিয়ে গেল ।মঙ্গল পাণ্ডের বন্দুকের গুলি ফুরিয়ে গিয়েছিল ।কোমর থেকে তলােয়ারটা টেনে নিয়ে মঙ্গল পাণ্ডে ছুটলেন বাফের দিকে । বাফ গুলি চালানাের আগেই পাণ্ডেজী ঝাঁপিয়ে পড়লেন বাফের ওপর । তারপর তলােয়ারের এক আঘাতে বাফের মাথাটা নেমে এল গলা থেকে ।মঙ্গল পাণ্ডে দেখতে পাননি ,বাফের পেছনে পেছনে আর একজন ইংরেজ সিপাই ছুটে এসেছিলেন । বাফকে মেরে পাণ্ডেজী যেই পেছন ফিরে এগােতে যাবেন , অমনি সেই অফিসারটি পিস্তল তুললেন মঙ্গল পাণ্ডেকে লক্ষ্য করে । কিন্তু গুলি ছোঁড়ার সময় তিনি আর পেলেন না । তার আগেই একজন দেশি সিপাই ছুটে এসে তলােয়ারের আঘাতে ইংরেজ অফিসারটির ভবলীলা সাঙ্গ করে দিলেন।ততক্ষণে খবর পৌঁছে গেছে ইংরেজদের ডেরায়।ঘােড়া ছুটিয়ে সেখানে এলেন কর্নেল হুইলার । মঙ্গল পাণ্ডেকে দেখে তিনি গর্জে উঠলেন , ধর ওকে।সিপাইদের মধ্যে একজন শান্ত গলায় বলে উঠল ,পাণ্ডেজীর গায়ে আমরা কেউ হাত দেব না। অভিজ্ঞ কর্নেল হুইলার বুঝতে পারলেন , তিনি একা ।তাকে সাহায্য করতে কোন দেশি সিপাইরা এগিয়ে আসবে না । তিনি তাড়াতাড়ি ঘােড়া ছুটিয়ে চলে গেলেন ইউরােপীয় সেনাদের ছাউনির দিকে । তাদের আদেশ দিলেন , মঙ্গল পাণ্ডেকে গ্রেফতার করতে । ইউরােপীয় সেনারা ঘােড়া ছুটিয়ে এসে ঘিরে ফেলল মঙ্গল পাণ্ডেকে । পাণ্ডেজী বুঝলেন , তিনি একা অতগুলাে গােরা সেনার সঙ্গে লড়তে পারবেন না । ততক্ষণে তিনি তার বন্দুকে টোটা ভরে নিয়েছেন । বন্দুক তার বুকে রেখে গুলি চালিয়ে দিলেন । তার দুর্ভাগ্য গুলিটা তার হৃদপিণ্ডে না লেগে অন্য দিকে লাগল । রক্তাক্ত মঙ্গল পাণ্ডে পড়ে গেলেন । কিন্তু মারা গেলেন না ।
এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে।নিজের হাতে নিজেকে শেষ করে দিতে চাইলেন। গুলি চালালেন নিজের বুকে।তবু তিনি বেঁচে রইলেন। ধরা পড়লেন ইংরেজদের হাতে।স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম বিপ্লবী তাে তিনিই । মঙ্গল। ১৮৫৭ সামরিক আদালতে পাণ্ডের ৬ ই এপ্রিল বিচারসভা বসেছে। কর্নেল হুইলার এলেন সাক্ষী দিতে।সামরিক আদালতের সামনেও মঙ্গল পাণ্ডে একই কথা বললেন। এ কথাও অস্বীকার করলেন না যে তিনি হিউসনকে মেরেছেন , বাফকে হত্যা করেছেন আর তার জন্যে তাঁর কোনাে অনুশােচনা নেই। সামরিক আদালতের বিচারে মঙ্গল পাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হলেন । তার ফাঁসির হুকুম হল । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি বিশেষভাবে চিহ্নিত দিন। দেখতে দেখতে এসে গেল নির্ধারিত দিন। ১৮৫৭ সালের ৮ এপ্রিল । সেদিনও শেষ রাতে উঠে স্নান সেরে নিলেন পাণ্ডেজী ।তারপর পুজো করলেন।পুজো শেষ হতে না হতেই এসে গেল মৃত্যুদূতেরা। তাদের সঙ্গে দৃপ্ত পায়ে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে চললেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম শহীদ  মঙ্গল পাণ্ডে।৮ ই এপ্রিল ১৮৫৭ সাল।ভাের সাড়ে পাঁচটায় ব্রিগেড প্যারেডে ফঁসি দেওয়া হল স্বাধীনতার সূর্য মঙ্গল পাণ্ডেকে । তার রুগ্ন ঝুলন্ত শরীরটা অনেকক্ষণ রাখা হয়েছিল খােলা আকাশের নীচে যাতে এই ভয়ানক দৃশ্য দেখে অন্য সিপাইরা বিদ্রোহী হবার সাহস না পায় । সাময়িকভাবে বরখাস্ত সিপাইরা মঙ্গল পাণ্ডের ফাঁসির খবর ভালােভাবে নিতে পারল না।ইংরেজ কর্তারা ভেবেছিলেন ,দেশি সিপাইরা অনুতপ্ত হয়ে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে কাজে যােগ দেবেন। কিন্তু তাঁরা অবাক হয়ে দেখলেন ,দেশি সিপাইরা সকলে ছাউনি থেকে বেরিয়ে গেলেন। গঙ্গায় গিয়ে স্নান করে পাপমুক্ত হয়ে চলে গেলেন যে যার বাড়ি ।ব্যর্থ হল ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা।
মঙ্গল পান্ডে: রাইজ মুখার্জি, আমিশা প্যাটেল এবং টবি স্টিফেন্সের পরিচালিত ভারতীয় অভিনেতা আমির খান অভিনীত ঘটনার ধারাবাহিকের উপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি চলচ্চিত্র, কেতন মেহতাওয়াস পরিচালিত, ১২ ই আগস্ট ২০০৫ এ মুক্তি পেয়েছিল।
পান্ডের জীবন ছিল' দ্য রোটি বিদ্রোহ' শীর্ষক একটি মঞ্চ নাটকের বিষয় যা রচনা ও পরিচালনা করেছিলেন সুপ্রিয়া করুণাকরণ। নাটকটি একটি নাট্যদল দল স্পর্শ দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল এবং জুন ২০০৫-এ অন্ধ্র প্রদেশ, অন্ধ্র সরস্বত পরিষদে দ্য মুভিং থিয়েটারে অভিনীত হয়েছিল।
পান্ডের আক্রমণ ও শাস্তি ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহ হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠার দৃশ্য হিসাবে বহুলাংশে দেখা যায়। তার কর্ম সম্পর্কে তাঁর সহকর্মী সিপাহীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং ধারণা করা হয় যে এটি অন্যতম কারণ ছিল  বিদ্রোহের সাধারণ সিরিজ যা পরের মাসগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে ।
আজ শহীদ মঙ্গল পাণ্ডের আত্ম বলিদান দিবসে আমার হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা ও আভূমি  প্রণাম জানাই
শহীদ মঙ্গল পাণ্ডে অমর রহে ।
জয়হিন্দ
বন্দেমাতরম
সনৎকুমার বটব্যাল
সাধারণ সম্পাদক
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস কমিটি
সভাপতি
অধ্যাপক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি ( পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাখা)
সদস্য
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ।
          ‌

No comments