Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মহিষাদলের ঐতিহ্যবাহী রথ করোনার মহামারীর প্রকোপে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল রাজ পরিবার।

স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে রাজার রাজত্ব ইতিহাসের পাতায় এই সবকিছুর জন্যই ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে মহিষাদলের নাম। তবে রাজত্ব চলে গেলেও মহিষাদল রাজবাড়ীর শতাব্দী প্রাচীন রথ রাজার কথা মনে করিয়ে দেয় আপামর জেলাবাসীকে। রথযাত্রার দিন …



স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে রাজার রাজত্ব ইতিহাসের পাতায় এই সবকিছুর জন্যই ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে মহিষাদলের নাম। তবে রাজত্ব চলে গেলেও মহিষাদল রাজবাড়ীর শতাব্দী প্রাচীন রথ রাজার কথা মনে করিয়ে দেয় আপামর জেলাবাসীকে। রথযাত্রার দিন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে  মুহুর্মুহু ধ্বনিতে মুখরিত  হয় ক্ষমতাহীন মহিষাদলের বর্তমান রাজার নামে জয়ধ্বনি। তবে সেসব এ বছরের জন্য ইতি। কোরোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে ও সরকারের সামাজিক দূরত্বের বিধি নিষেধ মেনে চলার জন্য  মহিষাদল রাজবাড়ীর বর্তমান সদস্য ও মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল এবছর বন্ধ থাকবে ঐতিহ্যবাহী গোপাল জিউ   রথযাত্রা। তবে সমস্ত আচার মেনে রাজবাড়ীর কুলদেবতা মদন গোপাল জিউ রথ। ঘাঘরা গ্ৰামের মাসির বাড়ি যাবেন রাজবাড়ীর পালকি চড়ে।
মহিষাদল রাজবাড়ির ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়,রাজা আনন্দলাল উপাধ‍্যায়ের সহধর্মিনী ধর্মপ্রাণ রানী জানকি দেবী মহিষাদলের রথের শুভ  সূচনা করেছিলেন ছোট্ট একটি রথ দিয়ে। এরপর ১৮০৪ সালে জানকি দেবীর মৃত্যুর পর অল্পকালের জন্য মতিলাল পাঁড়ে মহিষাদলের রাজত্ব ভার গ্রহণ করেন। সেই সময় তিনি রানীর রথ যাত্রার রীতিকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুবিশাল একটি ১৭ চূড়োর রথ তৈরি করান। তারপর থেকেই সেই রথ বৃহৎ আকারে মহিষাদলের উৎসবে পরিণত হয়। সময়ের সাথে সাথে রথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা ফের ১৮৫২ সালে রাজা লছমন প্রসাদ গর্গ বাহাদূর কলকাতা থেকে চীনা মিস্ত্রি আনিয়ে  প্রায় চার হাজার টাকা খরচ করে সতেরো চূড়ো রথের সংস্কার করান। এরপর ১৯১২ সালে স্থানীয় শিল্পী মাধব চন্দ্র দে রথের সামনের শ্বেত শুভ্র  দুটি কাঠের ঘোড়া দায়িত্ব পেয়ে স্থাপন করেন। যা বর্তমানে এখনো বিরাজমান । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে একের পর এক রথের চূড়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১৭চুড়ার রথ  নেমে এসেছে ১৩ চুড়ায়।৩৪টি চাকা বিশিষ্ট মহিষাদল রাজবাড়ির প্রাচীন এই রথের নাম পুরী, মাহেশের পরই জনপ্রিয়তার শিখরে স্থান করে নিয়েছে।
প্রতিবছরের মতো ঘটা করে এবার প্রাচীন রীতি মেনে  রথের আগের দিন হবেনা লেত উৎসব। কেবলমাত্র রাজবাড়ীর সদস্যরা উপস্থিত থেকেই সমস্ত আচার অনুষ্ঠান  হবে নিয়ম রক্ষার্থে। যে রথের রশিতে দীর্ঘ ২৪৪ বছর ধরে লক্ষ লক্ষ ভক্তরা টান মেরেছেন এ বছর তা কোরোনার কারনে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে। পরিবর্তে রাজবাড়ীর শাল ও মহানিমের তৈরি পালকিতে চড়িয়ে মাসির বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে জগন্নাথ দেবকে। সেখানেও মেনে চলা হবে সরকারি নিয়ম বিধি। মহিষাদলের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের অফিসে রথযাত্রা সংক্রান্ত বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কোরোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে এবছর রথ বন্ধ। । রথ বন্ধ থাকায় পালকিতে করে কুল দেবতা গোপাল জিউ ও জগন্নাথ দেবকে এবছর মাসি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সাত দিন সেখানে থাকার পর আবার পালকিতে করেই ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারি বিধি নিষেধ মেনে রাজবাড়ির সমস্ত আচার উপাচার এ বছরও পালিত হবে। মাইকিং করে এলাকাবাসীকে রথের দিন যাতে না ভিড় জমান তার জন্য সচেতন করা শুরু করব। রথের মাঙ্গলিক কাজ গুলি প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী করার এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে।

No comments