ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের ঘোষণার এক বছর পরও প্রায় কোনো কাজ শুরু না হওয়ায় বানভাসিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ! আসন্ন বর্ষায় ফের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। অবিলম্বে শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ সংস্কারের কাজের মধ্য দিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল…
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের ঘোষণার এক বছর পরও প্রায় কোনো কাজ শুরু না হওয়ায় বানভাসিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ!
আসন্ন বর্ষায় ফের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। অবিলম্বে শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ সংস্কারের কাজের মধ্য দিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুর দাবীতে ১৭ই জুন ঘাটাল মহকুমা শাসক ও সেচ দপ্তরে বিক্ষোভ-ডেপুটেশনের ডাক।
গত লোকসভা নির্বাচনের পূর্ব থেকেই "ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান" সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। আরামবাগের এক প্রশাসনিক সভায় রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ঘাটালের সাংসদকে সামনে রেখে মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ওই ঘোষনার পর প্রায় ১৫ মাস অতিক্রান্ত হলেও পাঁচটি স্লুইসগেট পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু ছাড়া বাস্তবে মাস্টার প্ল্যানের কোন কাজই শুরু হয়নি। তবে ঐ ঘোষণার অনেক আগেই সেচ দপ্তর তাদের রুটিনমাফিক কাজের মধ্যেই স্লুইস পুনর্নির্মাণের টেন্ডার করেছিল। বর্তমানে সেই কাজ চলছে। তাও বর্ষা আসার আগে ওই কাজ শেষ হবে না। অন্যদিকে চন্দ্রেশ্বর খালকে শীলাবতীর সাথে যুক্ত করা,ঘাটাল শহরে পাম্প হাউস নির্মাণ ও শহরে রিটেনিং ওয়াল নির্মানে বর্তমানে নানা ধরনের বিপত্তি দেখা দিয়েছে। এখনো শীলাবতীর নিম্নাংশের ২৩ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের টেন্ডারে কোনো এজেন্সি দরখাস্ত না করায় সেই প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে আসন্ন বর্ষায় অত্যধিক বৃষ্টি হলে বা ব্যারেজ থেকে বেশি পরিমাণ জল ছাড়া হলে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার হাজার হাজার মানুষ ফের প্লাবিত হবেন। যদিও সেচমন্ত্রী সহ দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আজও ঘাটাল এলাকা পরিদর্শন করে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন,বহু প্রতীক্ষিত এই মেগা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার কোন অর্থ বরাদ্দ না করায়,রাজ্যই মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করবে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা সেই সময় উনাকে চিঠি দিয়ে বলেছিলাম,এই প্রকল্প রূপায়ণে আমাদের কমিটি সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি 'তদারকি কমিটি' গঠন করে আলোচনা সাপেক্ষে ধাপে ধাপে প্রকল্পটি দ্রুত রূপায়িত করা হোক। কিন্তু রাজ্য সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে গঠিত তদারকি কমিটিতে আমাদের কমিটির কাউকে রাখা হলো না। শুধু তাই নয়,যখন প্রথমেই দরকার ছিল শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ সংস্কার করার,সেই কাজে হাত না দিয়ে যে কাজগুলি ধরা হলো,যেগুলিতে স্থানীয়দের বাধা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ফলস্বরূপ প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও কার্যত মাস্টার প্ল্যানের কোন কাজই এখনো শুরু করা গেল না। ফলস্বরূপ আসন্ন বর্ষায় ফের বন্যার আশঙ্কায় ঘাটালের বানভাসিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
আসন্ন বর্ষার পূর্বেই বন্যা মোকাবিলায় সমস্ত নদীবাঁধগুলিকে শক্তপোক্ত করা,সব লকগেট ও স্লুইশগেটগুলিকে সচল করা সহ ওই সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দ্রুত শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের বন্দোবস্ত ও পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট সবাইকে তদারকি কমিটিতে যুক্ত করে মাস্টার প্ল্যানের পূর্ণাঙ্গ রূপায়ন করা যায়, সেই দাবীতে আগামী ১৭ই জুন আমরা ঘাটালের মহকুমা শাসক ও সেচ দপ্তরে বিক্ষোভ-ডেপুটেশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছি। এরপরও কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
No comments