পরিবেশ রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সবুজ স্যার দিলীপ পাত্র!পেশায় শিক্ষক, নেশা পরিবেশ রক্ষা। অন্যকে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে গিয়ে পাঁচ বছর আগে নিজেই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করেছেন। মাইনের টাকায় আঠেরো বছর ধরে বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি চারাগাছ…
পরিবেশ রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সবুজ স্যার দিলীপ পাত্র!
পেশায় শিক্ষক, নেশা পরিবেশ রক্ষা। অন্যকে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে গিয়ে পাঁচ বছর আগে নিজেই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করেছেন। মাইনের টাকায় আঠেরো বছর ধরে বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি চারাগাছ বিলি করছেন ময়না রাধাবল্লভচক সারদাময়ী বিদ্যাপীঠের ভূগোল শিক্ষক দিলীপকুমার পাত্র। পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে লিখেছেন একাধিক বই, অসংখ্য ছড়া, গান ও স্লোগান। গাছ বাঁচানোর বার্তা দিতে ক্যালেন্ডার ছাপিয়েও বিলি করেন। শুধু ৫ জুন নয়, তাঁর কাছে প্রতিটা দিনই বিশ্ব পরিবেশ দিবস। গাছকে ভালোবেসে পরেন সবুজ পোশাক ও টুপি। এলাকায় তাঁকে 'সবুজ স্যর' নামে সবাই একডাকে চেনে।
ময়নার চঙরা গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ ২০০১ সালে উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর মণ্ডলপাড়া বিদ্যানিকেতনে সহ-শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৭ থেকে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা শুরু। ২০১২ সালে বদলি হয়ে আসেন ময়নায়। তারপরে আরও গতি পায় তাঁর কাজ। প্রতি বছর নিজের খরচে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও প্রতিষ্ঠানে চারাগাছ বিলি শুরু করেন দিলীপ। পরিবেশ বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক করতে স্কুলে, স্কুলে আঁকা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে প্রতি বছর বিলি করেন একশোটি ব্যাগ, টুপি ও ক্যালেন্ডার। ময়না রাধাবল্লভচক সারদাময়ী বিদ্যাপীঠের 'সবুজ সার' দিলীপকুমার পাত্র এই সময় ২০১৩ সালে দিলীপের উদ্যোগেই ময়নায় গড়ে উঠেছে 'ময়না সবুজ বাঁচাও মঞ্চ'। এখনও পর্যন্ত ২০ হাজার চারাগাছ বিলি করেছেন ওই শিক্ষক। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নিজের হাতে অন্তত পাঁচ হাজার চারাগাছ লাগিয়েছেন 'সবুজ স্যর'। পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দিতে দশটিরও বেশি ছড়ার বই লিখেছেন। পরিবেশ সংক্রান্ত স্লোগানই লিখেছেন প্রায় দু'হাজার। সেগুলো বই আকারেও প্রকাশ করেছেন। তাঁর লেখা পরিবেশ সংক্রান্ত তিরিশটিরও বেশি গান রয়েছে ইউটিউবে। নিয়মিত বিভিন্ন আলোচনায় যোগ দেন। দেশ-বিদেশের একাধিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা বেশ কিছু পরিবেশমূলক প্রবন্ধ।
প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিপর্যয় সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ দেন দিলীপ। পরিবেশ রক্ষার দাবিতে যোগ দেন সাইকেল ও বাইক র্যালিতে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসেও তিনি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বৃক্ষরোপণ করেছেন। তাঁর কথায়, 'পরিবেশকে ভালো না-রাখতে পারলে আমরাও ডালো থাকতে পারব না। তাই নিয়মিত চারাগাছ রোপণ ও বিলি করি। সবটাই করি মাইনের টাকা থেকে। পরিবেশ সচেতনার উপরে একাধিক বই লিখেছি। মানুষের কাছে পরিবেশের গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমার কাছে বছরের প্রতিটা দিনই বিশ্ব পরিবেশ দিবস।'
No comments