সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, 'খোলা থাকছে দু'টি বিকল্পই'! নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনেই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হবে। মঙ্…
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, 'খোলা থাকছে দু'টি বিকল্পই'!
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনেই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হবে। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, আদালতের আগের নির্দেশ মেনেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে রাজ্য সরকার। নইলে পরে নির্দেশ বলবৎ না করা নিয়ে দোষারোপ করা হবে। তবে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে। তাই বিষয়টি নিয়ে রায় আসেনি। পরে সেই রিভিউ পিটিশনের ভিত্তিতে যে রায় আসবে, আগামীতে তা-ই কার্যকর হবে। (SSC Scam)মমতা এদিন জানান, রিভিও পিটিশনের প্রক্রিয়া জারি থাকবে। কিন্তু সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ মেনেই ৩১ মে-র মধ্যেই পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। সেই মতো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। দু'টি উপায়ের কথা জানিয়েছেন মমতা। জানিয়েছেন, গরমের ছুটি কাটলেই আদালতে রিভিউ পিটিশনের প্রক্রিয়া জারি থাকবে। তৎপরতা শুরু হবে সেখানে। পাশাপাশি, পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিও দেবে রাজ্য। মমতা সাফ জানিয়েছেন, রিভিউ পিটিশনে যে রায় আসবে, তা-ই গৃহীত হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের যে নির্দেশ রয়েছে, সেই অনুযায়ী পরীক্ষা নিয়ে নিতে হবে রাজ্যকে। কিন্তু নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ায় তীব্র আপত্তি চাকরিহারাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাঁদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, "পরীক্ষা দেবেন না বলবেন না। দু'টি বিকল্পকেই কাজে লাগান।
এদিন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, "আইন মেনে আমাদের এই কাজটা করতে হচ্ছে। আগের নির্দেশ যদি কার্যকর না করি আমরা, তাহলে আদালত বলতে পারে, 'তোমাদের তো অর্ডার দিয়েছিলাম! তোমরা মানোনি। সুতরাং সবটাই বালিত'। আমরা এটা চাই না। আমরা সবটাই রেডি রাখব। যদি বলে পরীক্ষা দিতে হবে না, লিস্ট বাতিল হল না, সেটাই শুনব। আইনি পরামর্শ নিয়ে ৩০ মে আমাদের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিকল্প পথ খুলে রেখে আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করব। হাতে সময় রেখে ১৪ জুলাই অনলাইনে আবেদনের শেষ দিন। রিভিউ পিটিশনের সময় রেখে ১৫ নভেম্বর প্যানেল প্রকাশ। রিভিউ পিটিশনে কিছু না হলে নভেম্বরের মধ্যেই কাউন্সেলিং। ২৪ হাজার ২০৩টি পোস্টে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালাতে বলেছে, তাই চালিয়ে যান। নবম-দশমে ১১ হাজার ৫১৭টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ। একাদশ-দ্বাদশে ৯ হাজার ৯১২টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ। যাঁরা এতদিন কাজ করেছেন, তাদের এক্সপিরিয়েন্স অ্যাডভান্টেজ দেব।" (Supreme Court)মমতা এদিন আরও বলেন, "যাঁদের চাকরি বাতিল, তাঁদের জন্য আমরা অন্য ব্যবস্থা করব। এটা আমাদের নয়, কিছু স্বার্থপর কোর্টে গিয়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলব, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে ২টি বিকল্পকেই কাজে লাগান। আমরা চাই সবাই চাকরি ফিরে পান, কিন্তু ২টি অপশনই খোলা রাখুন। আমি এটা বাধ্য হয়েই করলাম। কিন্তু কোর্টের নির্দেশ মানতে হবে। চাকরিহারারা যাতে বিপদে না পড়েন, তার জন্য ২টি বিকল্প রাখা হল।"
এদিন মমতার ঘোষণার পর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "বিজ্ঞপ্তি জারি করলে লড়াইটা থাকবে কোথায়? এর মানে কি আরও দুর্নীতিমূলক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আরও দুর্নীতি বড় করা? সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, ৩১ মে-র পর্যন্ত নতুননিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। দুর্নীতি করেছে যারা, তারা পরীক্ষায় বসতে পারবে না, টাকা ফেরত দিতে হবে। সেই প্রক্রিয়াও তো চালু করতে হবে পাশাপাশি? সেটা না করে চাকরি গিয়েছে যাদের, তাদের চাকরি রক্ষা কবেন বলছেন। কী করে করবেন উনি? আবার দুর্নীতি করবেন? আসলে আবার একটা পরিকল্পনা করছেন, যার মাধ্যমে বৃহত্তর মামলায় গোটা সমাজকে জড়িয়ে নিতে চাইছেন। উনি দুর্নীতি করবেন, আর সমাজ দেখবে, এটা হতে পারে না।"
মমতা এদিন জানান, ব্যক্তিগত ভাবে অনেকে কোর্টে যাচ্ছেন, তা নিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট আসছে। তাঁরা এতদিন অপেক্ষা করছিলেন রিভিউ পিটিশনের জন্য। সেটা হলে চাকরি থাকবে সকলের, অন্যথায় অন্য উপায়ও বের করছে রাজ্য। কিন্তু বিকাশের বক্তব্য, "সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে ৩১মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগ চালু হলে, সেখানে রিভিউয়ের প্রশ্ন থাকে নাকি? উনি কি সবাইকে ওঁর মতো গাধা মনে করেন? যাঁদের চাকরি চলে গিয়েছে, আদালত বলেছে, পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, তাঁদের তিনি আবার বেআইনি ভাবে অন্যত্র চাকরি দেওয়াবেন? যা হচ্ছে, উনি যা ভাবছেন, উনি জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। "
No comments