সুতাহাটার অনন্তপুরে সোমেশ্বর শিব মন্দিরের উদ্বোধন ও উৎসব
হলদিয়ার সুতাহাটার অনন্তপুরে শতাব্দীপ্রাচীন সোমেশ্বর শিবের নবনির্মিত মন্দিরের উদ্বোধন হল। এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে পাঁচটি গ্রামের মানুষ উৎসবে মেতে উঠেছেন। শুক্রবার যজ্ঞের মধ…
সুতাহাটার অনন্তপুরে সোমেশ্বর শিব মন্দিরের উদ্বোধন ও উৎসব
হলদিয়ার সুতাহাটার অনন্তপুরে শতাব্দীপ্রাচীন সোমেশ্বর শিবের নবনির্মিত মন্দিরের উদ্বোধন হল। এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে পাঁচটি গ্রামের মানুষ উৎসবে মেতে উঠেছেন। শুক্রবার যজ্ঞের মধ্য দিয়ে মন্দিরের উদ্বোধন হয়। এই উপলক্ষ্যে শুক্র ও শনিবার ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও মহাভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোমেশ্বর শিব মহারাজের মন্দিরকে নবকলেবরে দেখে আপ্লুত গ্রামের মানুষ।
অনন্তপুরের মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবারের ২৫০বছরের প্রাচীন পঞ্চম দোল সুতাহাটাজুড়ে বিখ্যাত। ওই পরিবারের কুলদেবতা বৃন্দাবনজিউকে ঘিরে পঞ্চম দোল উৎসব হয়। বৃন্দাবনজিউর মন্দিরের কাছেই একসময় মিশ্র ও ভট্টাধিকারীদের শিবমন্দিরও ছিল। সেটি সোমেশ্বর শিবের মন্দির নামে পরিচিত। সেই প্রাচীন শিবমন্দির প্রায় ১০০বছর আগে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। সম্প্রতি মিশ্র ও ভট্টাধিকারী পরিবার এবং গ্রামের বাসিন্দারা মিলে মন্দির পুনর্নির্মাণ করেছেন। নবরূপে তৈরি সোমেশ্বর শিবমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এদিন অনন্তপুর, জামালচক সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা দেখা দেয়।
এদিন দুপুরে মাহেন্দ্রক্ষণে একসঙ্গে সপ্তসতী চণ্ডীযজ্ঞ ও মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ শুরু হয়। কয়েকঘণ্টা ধরে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে যজ্ঞানুষ্ঠান চলে। যজ্ঞ দেখতে শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় করেন। বিকেলে মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী অখিল গিরি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনন্তপুরের পঞ্চম দোল দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। এই গ্রামের ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। অনন্তপুর গ্রাম গান্ধীজির স্মৃতিধন্য। মেদিনীপুরের প্রথম ‘জাতীয় স্কুল’ এখানেই গড়ে উঠেছিল। স্বাধীনতা অন্দোলনের সময় গ্রাম গঠনের ক্ষেত্রে ওই স্কুল বড় ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৪৫সালের ২৯ ডিসেম্বর গান্ধীজি নিজে এই গ্রাম হয়েই বাসুদেবপুরে কুমারচন্দ্র জানা প্রতিষ্ঠিত গান্ধী আশ্রমে গিয়েছিলেন।
সোমেশ্বর শিবমন্দির নবনির্মাণের প্রধান উদ্যোক্তা সুমনকল্যাণ মিশ্র, অমলেন্দু ভট্টাধিকারী, দেবাশিস ঘাঁটি, অশোক হাজরা বলেন, ১৭৫৮সালে বৃন্দাবনজিউয়ের মন্দির তৈরি হয়েছিল। শিবমন্দিরও তারই সমসাময়িক। দু’টি মন্দিররই কালের নিয়মে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বৃন্দাবনজিউয়ের মন্দির তৈরি হলেও শিবমন্দিরটি এতদিন পুনর্নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এবার গ্রামবাসী ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্যোগে কয়েকলক্ষ টাকা খরচে মন্দির তৈরি হয়েছে। ফাল্গুন মাসে শিবরাত্রি ও চৈত্রে ফের গাজন উৎসব শুরু হবে। শনিবার মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সাতহাজার ভক্তকে মহাভোগ প্রসাদ বিলি করা হয়।
No comments