মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর নির্বাচনে ১১জন বিক্ষুব্ধ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা ধার্য ছিল। নির্ধারিত সময়ের…
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর নির্বাচনে ১১জন বিক্ষুব্ধ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা ধার্য ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ১১জন ব্যাঙ্কের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এর ফলে ডিরেক্টর নির্বাচন নিয়ে বিগত কয়েকদিনের টানাপোড়েনের অবসান ঘটল। ১৫টি ডিরেক্টর পদে শাসকদলের প্যানেলে থাকা ১৫জন ছাড়া অন্য কোনও প্রার্থী না থাকায় তাঁরা সকলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। এদিন ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকেও ওই ১৫জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
গত কয়েকদিন ধরেই কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর নির্বাচন নিয়ে অখিল গিরি বনাম উত্তম বারিক শিবিরের সঙ্গে সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। রাজ্য নেতৃত্ব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সমবায় সেলের নেতা আশিস চক্রবর্তীকে কাঁথিতে পাঠায়। তাঁরা দফায় দফায় উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে বসে আলোচনা চালিয়ে যান। কিন্তু, সেই বৈঠক ভেস্তে যায়। ১৫টির মধ্যে ১১টি ডিরেক্টর পদে মুখোমুখি ভোটের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এই অবস্থায় বুধবার জেলার সকল তৃণমূল বিধায়ক এবং দুই সাংগঠনিক জেলা সভাপতিকে কলকাতায় ডেকে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুব্রতবাবুর মোবাইলে ফোন করে সেখানে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অবিলম্বে দলীয় প্যানেলের বাইরে থাকা প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে অখিল ও উত্তমদের পরস্পর বিরোধী মন্তব্য থেকে সংযত থাকার নির্দেশ দেয় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশের পরই বৃহস্পতিবার মানব পড়ুয়া, প্রদীপ দে, চিন্তামণি মণ্ডল, সুভাশিস মাইতি, শ্যামাশিস মিশ্রের মতো নির্বাচিত ডেলিগেটরা মনোনয়ন তুলে নেন। কাঁথি-১ কেন্দ্রে তিনজন, কাঁথি-২, কাঁথি-৪, কাঁথি-৫, রামনগর, এগরা, হেঁড়িয়া, বেলদা ও নন্দকুমার কেন্দ্রে একজন করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। অতিরিক্ত ১১জন মনোনয়ন তুলে নেওয়ায় ১৫জন ডিরেক্টর হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।
হেঁড়িয়া কেন্দ্র থেকে মনোয়ন প্রত্যাহার করেন জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানব পড়ুয়া। তিনি বলেন, গত ৯মার্চ সুব্রত বক্সি ডিরেক্টর নির্বাচনের প্রার্থীপদ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। সেই মিটিংয়ের নির্যাস সবটা আমাদের কাছে স্পষ্টভাবে ছিল না। সেজন্য আমি মনোনয়ন জমা করেছিলাম। কিন্তু, বুধবার দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১১জনকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলেছেন। দলের শৃঙ্খলাপরায়ণ কর্মী হিসেবে নেত্রীর নির্দেশ পালন করেছি। জেলার একটা সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করতে হল। আমাদের সংগঠন পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন তাঁদের ব্যর্থতা। তাঁর হস্তক্ষেপ করার আগে আমাদের সমাধান করা উচিত ছিল।
বৃহস্পতিবার কাঁথি-৪ কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার পর সোয়েব মহম্মদ বলেন, নেত্রীর নির্দেশ মেনেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। কলকাতায় মিটিংয়ের পরই জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে আমাকে নির্দেশ দেন। সেইমতো ব্যাঙ্কে এসে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলাম। দল যা ঠিক মনে করেছে তাই করেছে। কখনও সুযোগ এলে আক্ষেপের কথা নেতৃত্বকে জানাব।
No comments