স্বপ্নকে সফল করতে পড়াশোনার ফাঁকে, বাবা মা এর চা দোকান সামলাচ্ছেন বি এ এলএলবির স্টুডেন্ট অর্পিতা
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় করে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী। কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন পূরণের পথে নানান প্রতিকূলতা বা…
স্বপ্নকে সফল করতে পড়াশোনার ফাঁকে, বাবা মা এর চা দোকান সামলাচ্ছেন বি এ এলএলবির স্টুডেন্ট অর্পিতা
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় করে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী। কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন পূরণের পথে নানান প্রতিকূলতা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নিম্ন মধ্যবিত্ত বা গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েদের কাছে উচ্চ শিক্ষা বর্তমান সময়ে অনেকটাই কষ্টসাধ্য। যার অন্যতম কারণ উচ্চশিক্ষা অনেকটাই ব্যয়বহুল। ফলে ছোট থেকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও সেই স্বপ্ন অনেকের কাছে স্বপ্ন থেকে যায় বাস্তবে রূপ পায় না। কিন্তু তমলুকের আইনি পড়ুয়া তার নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি সামলাচ্ছেন বাবা-মায়ের চা পাকোড়ার দোকান। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী তমলুকের অর্পিতা মাইতি। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হওয়ার। তমলুক শহরের স্বনামধন্য রাজকুমারী স্বান্তনাময়ী স্কুল থেকে ৭৫ শতাংশ নাম্বার পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরেই নিজের স্বপ্নের কথা বাবা মাকে বলেন। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আইনের পড়াশোনার চালিয়ে যাওয়ার খরচ অনেকটাই। পরিবারে আয় বলতে চা পকোড়া ছোট্ট দোকান। তবুও অর্পিতার আইনজীবী হওয়ার স্বপ্নে বাধা পড়তে দেননি তাঁর বাবা-মা। ল কলেজ ভর্তি হয় অর্পিতা। এরপর শুরু হয় আসল লড়াই। এই লড়াই হাজার টাকা জোগাড় করতে নিজেও শামিল হয় অর্পিতা। অর্পিতা প্রতিদিন কলেজ করতে যাবার পাশাপাশি বাবা-মায়ের চা দোকানে বসে দোকান সামলান। প্রতিদিন সকাল আটটায় ট্রেনে করে কলেজে যান। আবার বিকেল চারটায় ফিরে এসে তমলুকের রূপনারায়ন নদীর পাড়ে চা-পাকোড়ার দোকান সাজিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে পড়েন দোকান সামলাতে। রাতে দোকান গুছিয়ে বাড়ি ফিরে পড়তে বসা। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে প্রতিদিন এই রুটিন ফলো করছেন অর্পিতা। বর্তমানে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার বেশি ব্যাংক লোন নেওয়া হয়েছে। একদিকে পড়াশোনার চাপ, অন্যদিকে মাথার উপর ব্যাংক লোনের বোঝা। সঙ্গে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চা পকোড়ার দোকান সামলে নিজের লক্ষ্যপথে এগিয়ে যাচ্ছে অর্পিতা।
No comments