রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার অভাবেই প্রতিবন্ধীদের নিয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
বামআমলে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সংগঠন তৈরি করেছিলেন প্রতিবন্ধী সম্মীলনী সংস্থা। প্রতিবন্ধীদের পরিচয় পত্র এবং তাদের দাবি-দাওয়া নিয়…
রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার অভাবেই প্রতিবন্ধীদের নিয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
বামআমলে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সংগঠন তৈরি করেছিলেন প্রতিবন্ধী সম্মীলনী সংস্থা। প্রতিবন্ধীদের পরিচয় পত্র এবং তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংঘটিত করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দল প্রতিবন্ধীদের দাবি-দাওয়া তাদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন না। বর্তমানে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন তাহলে কি রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা অভাবেই প্রতিবন্ধীদের সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুখেই বলা হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হচ্ছে? কি জানালেন প্রতিবন্ধী দিবসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায়
প্রসঙ্গত, রামকৃষ্ণ সারদা মিশন আশ্রমের উদ্যোগে মঙ্গলবার দিনভর নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে হলদিয়ায় উদ্যাপিত হল ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর, হলদিয়ার বিভিন্ন শিল্প সংস্থা, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে বড় আকারে এই কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে। এবারের প্রতিবন্ধী দিবসের থিম, বিশেষভাবে সক্ষম মানুষের নেতৃত্বে তাদের উন্নতিকল্পে তাদেরই চলার পথ তৈরি করা। অনুষ্ঠানে এই বার্তা দিয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সন্ন্যাসী থেকে প্রশাসন ও শিল্প সংস্থার আধিকারিকরা। এজন্য নির্বাচনে প্রতিবন্ধীদের জন্য আসন সংরক্ষণের দাবিও উঠেছে।
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ দুর্গাচক স্টেডিয়াম থেকে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়। সামনের সারিতে ছিলেন লোকশিল্পীরা। ধামসা মাদল ও আদিবাসী নৃত্যে মুখরিত হয় শহরের রাজপথ। বাংলার বধূবেশে তরুণী, রনপা, হলদিয়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের এনসিসি টিমের ব্যান্ড সহকারে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে এগতে থাকে প্রতিবন্ধী সুসজ্জিত মিছিল। কেউ ট্রাইসাইকেলে, কেউ হুইল চেয়ারে চেপে, কেউ ক্র্যাচে ভর দিয়েই শামিল হন মিছিলে। শহরের পথ এদিন মুখরিত হয় প্রতিবন্ধী মানুষজনের অধিকার অর্জনের সোচ্চার দাবিতে। শোভাযাত্রার সময় ছৌ শিল্পীদের নাচ দেখতে ভিড় জমে যায় রাস্তার দু’পাশে। মিছিলে ছিলেন রামকৃষ্ণ সারদা মিশন আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক স্বামী বিবেকাত্মানন্দজি মহারাজ, নামী লোকশিল্পী গোপাল অধিকারী ও বহু বিশিষ্ট মানুষজন।
এদিন মিশনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী দিবসের মূল অনুষ্ঠান হয়েছে দুর্গাচকের কুমারচন্দ্র জানা অডিটোরিয়াম চত্বরে। প্রতিবন্ধীদের জন্য এদিন স্বাস্থ্য শিবির, রক্তদান শিবির, রক্তের বিভিন্ন টেস্ট এবং অডিওমেট্রি টেস্টের ব্যবস্থা হয়েছিল। হলদিয়ার বিসি রায় হাসপাতালের সঙ্গে যৌথভাবে স্বাস্থ্য শিবির হয়। আটটি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে পরীক্ষা করতে প্রতিবন্ধী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনের বিশাল লাইন পড়ে। একটি বেসরকারি সংস্থার মোবাইল ব্লাড ব্যাঙ্কে এদিন প্রতিবন্ধীদের রক্ত পরীক্ষা করে তৎক্ষণাৎ রিপোর্ট দিয়েছে। তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজের সহায়তায় শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের অডিওমেট্রি টেস্ট করা হয়েছে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ ৩৩ টি প্রদীপ জ্বেলে ও কেক কেটে ৩৩তম প্রতিবন্ধী দিবসের সূচনা হয়। ঘরোয়া বাঙালি প্রথায় অতিথি বরণের অনুষ্ঠান ছিল অভিনব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মেদিনীপুর শাখার সচিব স্বামী প্রার্থনানন্দজি মহারাজ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায়, হলদিয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রট জিষ্ণু দে, হলদিয়া পেট্রেকেমের জেনারেল ম্যানেজার সমীরণ সরকার, প্রধান শিক্ষক দেবাশিস পাহাড়ী, প্রধান শিক্ষিকা সুমনা পাহাড়ি, মিশনের সভাপতি অসীমকুমার বেরা ও শিল্প সংস্থার আধিকারিকরা। এদিন অন্ধত্ব নিবারণের জন্য আইওসির সিএসআর কর্মসূচিতে ‘আলোর দিশারি’ প্রকল্পের সূচনা হয়। একই সঙ্গে হলদিয়া পেট্রকেম ও তার অনুসারি শিল্প অ্যাডপারমার সিএসআর কর্মসূচিতে স্কুল পড়ুয়াদের জন্য ‘শৈশবে গাছ লাগাও, সারা জীবন ফল খাও’ প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। এদিন মঞ্চ থেকে প্রতিবন্ধীদের ২০টি হুইল চেয়ার ও ট্রাইসাইকেল এবং এক হাজার প্রতিবন্ধীকে চাদর ও আমের চারা তুলে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের জন্য প্রশাসন ও শিল্প সংস্থার সহযোগিতায় তিনটি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হবে বলে জানান বিবেকাত্মানন্দজি মহারাজ। এদিন অনুষ্ঠান শেষে ‘ইচ্ছেপুতুল’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে
No comments