উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে বন্দরের অবসরপ্রাপ্তকর্মীরা, আবাসন ছাড়া নির্দেশ দিল বন্দর কর্তৃপক্ষ!ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্ট হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের আবাসন ছাড়ার আকস্মিক নির্দেশে বিপাকে পড়েছে সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা।বর্তমানে …
উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে বন্দরের অবসরপ্রাপ্তকর্মীরা, আবাসন ছাড়া নির্দেশ দিল বন্দর কর্তৃপক্ষ!
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্ট হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের আবাসন ছাড়ার আকস্মিক নির্দেশে বিপাকে পড়েছে সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা।বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা হলদিয়া বন্দরের শুভ সূচনা থেকেই কর্মসূত্রে কাজ করেছিলেন দূরে বাড়ি থাকা জন্যই সিংহভাগই চিকিৎসার জন্য বন্দরের আবাসনে ভাড়ায় থাকেন। এরপর আধুনিক বারের বন্দর হাসপাতাল বিরা খরচী চিকিৎসা এবং ঔষধপত্রের সুবিধা পান কর্মীরা। এত রাতে বন্ধন আবাসন ছাড়া নির্দেশে আতঙ্কে পড়েছেন আবাসিকরা।নন-পোর্ট অর্থাৎ বাইরের আবাসিকদের জন্য ধার্য করা ভাড়া দিয়েই বন্দর আবাসনে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। তারপরও কেন তাঁদের বন্দর কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে ঘর ছাড়তে বলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হলদিয়ার টাউনশিপে খালি আবাসনগুলি ভাড়ায় দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেখানে নন-পোর্ট ও পোর্ট পেনশনারদের অনেকে ভাড়া নিয়ে থাকেন। বন্দর কর্তৃপক্ষ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের নোটিস পাঠালেও, নন-পোর্ট আবাসিকদের কোনও নোটিস দেয়নি। গত ১২নভেম্বর বন্দরের ‘এ’ টাইপ কোয়ার্টারের শুধু অবসরপ্রাপ্ত বাসিন্দাদের কাছে ওই নোটিস পাঠিয়ে একমাসের মধ্যে ঘর ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের আচরণকে ‘অমানবিক’ বলে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
জানা গিয়েছে, বন্দর আবাসন এলাকায় ৬৩৫টি ‘এ’ টাইপ কোয়ার্টার ভাড়া দেওয়া রয়েছে। নন-পোর্ট অর্থাৎ বাইরের লোকজন থাকেন ৪৫৫টি কোয়ার্টারে। বাকি ১৮০টি কোয়ার্টারে থাকেন পোর্ট পেনশনাররা। খালি আবাসন ভাড়ায় দিয়ে বন্দরের প্রতি বছর প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা আয় হয়। বন্দরের শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, প্রতি বছর বন্দরে গড়ে শতাধিক স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী অবসর নেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে আবাসনে থাকেন। অনেকেই আবার আবাসন ছেড়ে দেন, ফলে ঘর খালি পড়ে থাকে। গত এক দশকে প্রচুর কর্মী অবসর নিয়েছেন। বহু ঘরই খালি পড়ে রয়েছে। অবসরপ্রাপ্তদের একাংশ খালি কোয়ার্টার ভাড়ায় নিয়ে চিকিৎসার কারণে বসবাস করেন। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, অবসরপ্রাপ্তরা শারীরিক কারণে বাধ্য হয়েই ন্যায্য ভাড়া দিয়ে বন্দরের আবাসনে থাকেন। তাদের বক্তব্য, বাইরের লোকজন যদি বন্দর আবাসনে থাকতে পারেন, তাহলে বন্দরের অবসরপ্রাপ্তদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে কেন? বন্দরের কর্মী হিসেবে বরং তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। মাঝে প্রায় আড়াই বছর ধরে আবাসিকদের ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল না। মাসতিনেক শ্রমিক সংগঠনের চাপে পড়ে ভাড়া নেওয়া শুরু হলেও হঠাৎ করে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হল।
ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সভাপতি তথা সংগঠনের বন্দর ইউনিয়নের নেতা প্রদীপ বিজলি অভিযোগ করেন, বছর তিনেক আগে বছরে ৪২হাজার টাকা ভাড়া ছিল। এখন তা বেড়ে ৫৪হাজার টাকা হয়েছে। বাড়তি ভাড়া দিয়ে কষ্ট করে হলেও চিকিৎসার জন্য থাকতে হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশ বৈষম্যমূলক। ন্যায্য ভাড়া দিয়ে থাকা সত্ত্বেও নিজের সংস্থার কর্মীদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। সুপরিকল্পিতভাবে বন্দর এই কাজ করছে। বন্দর হাসপাতালে এখন উন্নতমানের চিকিৎসা হয়, বহু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন। পেসমেকার বসানো থেকে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন হচ্ছে। হাতের নাগালে যাতে বয়স্করা ওই পরিষেবা পেতে পারেন সেজন্য বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি। সূত্রে জানা যায় বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(প্রশাসন) প্রবীণকুমার দাস বলেছেন অবসরের পর কর্মীরা বড় জোর এক বছর আবাসনে থাকতে পারেন। কোনওভাবেই ৮-১০ বছর থাকতে পারবেন না। বন্দরের পলিসি মেনেই নোটিস দেওয়া হয়েছে। তাই বাইরের লোকজন ভাড়ায় থাকলেও অবসরপ্রাপ্তরা আর থাকতে পারবেন না।
No comments