হলদিয়ার দুর্গাচকে নীলকণ্ঠ ও রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের রাস উৎসবে মহাভোগ প্রসাদ বিতরণের অনুষ্ঠান হয়ে উঠল মানুষের মহামিলন মেলাহলদিয়ার দুর্গাচকে নীলকণ্ঠ ও রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের রাস উৎসবে মহাভোগ প্রসাদ বিতরণের অনুষ্ঠান হয়ে উঠল মানুষের মহামিলন ম…
হলদিয়ার দুর্গাচকে নীলকণ্ঠ ও রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের রাস উৎসবে মহাভোগ প্রসাদ বিতরণের অনুষ্ঠান হয়ে উঠল মানুষের মহামিলন মেলা
হলদিয়ার দুর্গাচকে নীলকণ্ঠ ও রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের রাস উৎসবে মহাভোগ প্রসাদ বিতরণের অনুষ্ঠান হয়ে উঠল মানুষের মহামিলন মেলা। দুর্গাচকের প্রিয়ংবদা হাউজিং সংলগ্ন নীলকন্ঠ ও রাধাকৃষ্ণের জোড়া মন্দির প্রাঙ্গণে বুধবার প্রসাদ গ্রহণের জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। সকাল থেকে প্রায় সন্ধে পর্যন্ত মহাভোগ প্রসাদের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে। ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষের এক মিলনস্থল হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। কোথাও কোনও হুড়োহুড়ি কিংবা বিরক্তির লেশমাত্র নেই। শৃঙ্খলা মেনে মুখে হাসি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে থাকেন সবাই। মাটিতে বসেই রাধাকৃষ্ণের পুজোর প্রসাদ খান মানুষজন। ভক্তজনের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ এবং উৎসাহ সত্যিই নজর কেড়েছে। জোড়া মন্দিরের রাস উৎসবের শেষদিন হয়ে উঠল আনন্দোৎসবের মহাপ্রাঙ্গণ। এদিন মহা ভোগ প্রসাদের মেনু ছিল প্রসাদী সুগন্ধী অন্ন, ডাল, আলুভাজা, শুক্তো, সব্জির ঘণ্ট, পটলের কালিয়া, চাটনি, গোবিন্দভোগ চালের পায়েস এবং পাঁপর। বহু ভক্ত প্রসাদী পায়েস বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন।
মন্দির কমিটি জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাহায্য নিয়েই প্রধানত এই মহাভোগ প্রসাদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বহু মানুষ এজন্য মন্দিরের দান বাক্সে নিজেদের সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন। বছরের অন্যান্য সময়ে প্রতিদিন দুপুরে মন্দিরে ভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা থাকে। মন্দিরের প্রসাদ পার্সেল করেও বহু মানুষ বাড়ি নিয়ে যান। শিল্পশহরের প্রাণকেন্দ্রে হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে রাস উৎসবে অনুষ্ঠান এবং মেলায় গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির নানাদিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন উদ্যোক্তারা। রাস উৎসবের মধ্য দিয়ে কুমারচকের বাসিন্দরা তাঁদের হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন। এই রাস উৎসব ও মেলা হলদিয়া শিল্পশহরে হারিয়ে যাওয়া গ্রামগুলির উদ্বাস্তুদের মিলনের আঙ্গিনা হয়ে উঠেছে প্রতিবছর। উৎসব কমিটির সম্পাদক চন্দন দাস বলেন, এবছর ১২ হাজারের বেশি মানুষ সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত মহাভোগ প্রসাদ পেয়েছেন।
কুমারচকে নীলকণ্ঠ ও রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের রাস উৎসবের এবার তৃতীয় বর্ষে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়েছে। মন্দির কমিটির সভাপতি শত্রুজিৎ দাস, যুগ্ম সম্পাদক উত্তম দাসঅধিকারী এবং রবীন্দ্রনাথ দাসঅধিকারী বলেন, হলদিয়া শহরে রাস উৎসবের নতুন ধারা তৈরি করতে চাইছি। হারিয়ে যাওয়া রীতিনীতির সঙ্গে আজকের সংস্কৃতির মেলবন্ধন করতে চাই।
মন্দির চত্বরে বছরে বড় অনুষ্ঠান ছাড়াও প্রতিদিন বহু ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগম হয়। এজন্য ওই এলাকায় সৌন্দর্যায়নের জন্য পার্ক তৈরির আবেদন জানিয়েছে মন্দির কমিটি। পাশাপাশি মন্দির চত্বরে বাড়তি হাইমাস্ট আলোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি মন্দির কমিটি হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে পাশের বিশাল পুস্করিণীতে মন্দিরের একটি পাকা ঘাটের আবেদন জানিয়েছে। একই সঙ্গে পুষ্করিণীর পাড় কংক্রিটে বাঁধানোর দাবি জানিয়েছে কমিটি। প্রসঙ্গত, স্থানীয় রাধামাধবচকের উদ্বাস্তুরা গ্রামের স্মৃতি জাগিয়ে রাখতে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচে রাধাকৃষ্ণ মন্দির তৈরি করেছেন। সেই রাধাকৃষ্ণ মন্দির ঘিরে কয়েক বঋর ধরে শুরু হয়েছে রাস উৎসব। মন্দির কমিটির যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ মোহন দাস ও শ্যামপদ ভুঁইয়া বলেন, এবছর রাস উৎসবের বাজেট ছিল প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
No comments