বাসুদেবপুর ক্ষুদিরাম স্মৃতি সংঘের মা দুর্গা প্রায় দেড় কোটি টাকার সোনার গহনা সেজে উঠবে পুজো আর কয়েকদিন বাকি সারা জেলা জুড়ে চলছে পুজো উদ্বোধন তারই সাথে পুজো মণ্ডপের শেষ পর্যায়ে কাজ।ভয়ঙ্কর মিশাইল এসে আছড়ে পড়ছে মানুষের মাথায়। ম…
বাসুদেবপুর ক্ষুদিরাম স্মৃতি সংঘের মা দুর্গা প্রায় দেড় কোটি টাকার সোনার গহনা সেজে উঠবে
পুজো আর কয়েকদিন বাকি সারা জেলা জুড়ে চলছে পুজো উদ্বোধন তারই সাথে পুজো মণ্ডপের শেষ পর্যায়ে কাজ।
ভয়ঙ্কর মিশাইল এসে আছড়ে পড়ছে মানুষের মাথায়। মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে শরীরগুলি। চারিদিকে যুদ্ধের দামামা, বিধ্বংসী প্রলয়। এরই মাঝখানে জীবনের আশ্বাস, সৃজনের গল্প বলতে চাইছেন শিল্পীরা। উৎসব প্রাঙ্গণে এবার সেই বার্তা দেবে হলদিয়ার বাসুদেবপুর ক্ষুদিরাম স্মৃতি সঙ্ঘ। রং-তুলির নরম আঁচড় নয়, কঠিন বাস্তব তুলে ধরতে কুড়িজন শিল্পী ছেনি হাতুড়ি নিয়ে পাথর কুঁদে তৈরি করেছেন পুজো মণ্ডপ।
যুদ্ধ নয়, সৃষ্টির জয়ধ্বনি করো। হিংসা, বিদ্বেষ নয়, ভালবাসার, সম্প্রীতির জয়ধ্বনি করো। ক্ষুদিরাম স্মৃতি সঙ্ঘ এবারের ৩৬তম বর্ষের পুজোয় সেই বার্তা দেবে। মহালয়ার দিন সন্ধ্যায় এই পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হলদিয়ার বিগ বাজেটের পুজোগুলির অন্যতম এই পুজো। প্রতিবারই এদের পুজোয় মণ্ডপ ভাবনা, প্রতিমা অন্যদের টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করে। পুজো কমিটির সম্পাদক শেখ আমির (আরমান ভোলা) ও কার্যকরী সভাপতি সুদীপ্ত ভক্তা বলেন, এবার পুজোর বড় আকর্ষণ সোনার অলঙ্কারের সাজবেন দেবী দুর্গা। দেড় কোটি টাকার সোনার অলঙ্কার পরানো হবে। সাবেকি বা পারিবারিক পুজোয় যেমন সোনার অলঙ্কার পরানো হয়, ঠিক সেভাবেই নানা ডিজাইনের অলঙ্কার পরবে প্রতিমা। এজন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। চতুর্থীর সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেদিন থাকবেন টলিউডের অভিনেত্রী, মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্তারা থাকবেন উদ্বোধনে।
ক্ষুদিরাম স্মৃতি সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে এলেই প্রথমে চমকে যাবেন দর্শনার্থীরা। প্রবেশ পথেই যুদ্ধদীর্ণ এক পৃথিবীর ছবি। ইটের তৈরি মানুষের বিশাল মুখের অবয়ব। সেই মুখের একাংশ মিশাইলের আঘাতে চৌচির। অন্য অংশে ভয়ার্ত মানুষের ছবি। ওই মূর্তির উপরে একটি মিশাইল। বিশাল একটি গ্লোব। ওই গ্লোবের রং লাল। ওই গ্লোব আসলে আজকের যুদ্ধোন্মত্ত পৃথিবী। যুদ্ধ করতে গিয়ে সারা বিশ্ব উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, তাই প্রতীকীভাবে লাল রং ব্যবহার করা হয়েছে এবং যুদ্ধকেও প্রতীকীভাবে দেখানো হচ্ছে। এরপর মণ্ডপে ঢুকলে মনে হবে কোনও নির্মীয়মাণ বাড়িতে ঢুকে পড়েছেন দর্শনার্থীরা। শুধুই কংক্রিটের পিলার। আসলে এরপরই শুরু হবে চমক। আলোয় মোড়া ওই পিলারগুলিতে নানা ধরনের মানুষের মুখ। 'ভেঙে যাওয়া এবড়োখেবড়ো পিলারে সেই মুখগুলি জীবন্ত হয়ে আপনার সঙ্গে আলাপ করতে চাইবে। কোথাও আবার সেই মুখগুলিতে কষ্টের ছাপ। এরপর নজর করলেই চোখে পড়বে পিলারের মাথায় লোহার রডে দোল খাচ্ছে জীবন্ত সবুজপাতারা। কংক্রিটের জঙ্গল পেরিয়ে মণ্ডপে আসীন দেবী দুর্গা। পাথরের দেবী মূর্তি যেন জীবন্ত মানবী হয়ে উঠেছেন। শিল্পী দেবাশিস মাইতি বলেন, এবার মণ্ডপের প্রথাগত ধারা ভেঙে ফেলা হয়েছে। ৪০টি ১২ফুট উচ্চতার কংক্রিটের পিলার দু'মাস ধরে তৈরির পর আবার ভেঙে মূর্তি খোদাই করা হয়েছে। কংক্রিটের পিলারগুলি আসলে আজকের পৃথিবী জুড়ে কংক্রিটের আবাসনগুলিকে বোঝানো হয়েছে।
No comments