ভয়াবহ ডাকাতির পর অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসন ও পুলিসের দুর্গাচক টাউনে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলারের বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির পর অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসন ও পুলিসের। মঙ্গলবার দুর্গাচকে সরকারি আবাসন সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান পুলিস ও প্রশাস…
ভয়াবহ ডাকাতির পর অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসন ও পুলিসের
দুর্গাচক টাউনে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলারের বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির পর অবশেষে টনক নড়েছে প্রশাসন ও পুলিসের। মঙ্গলবার দুর্গাচকে সরকারি আবাসন সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান পুলিস ও প্রশাসনের কর্তারা। ওই সময় নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের(এইচডিএ) প্রিয়ংবদা হাউজিংয়ের আবাসিকরা। এদিন হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার মনোরঞ্জন ঘোষ, এইচডিএর সিইও সুধীর কোন্থাম এবং পুর আধিকারিকদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রিযংবদার আবাসিকরা। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সরকারি কর্মী ও তাদের পরিবারের লোকজন ছিলেন। অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে দিনেরবেলাতেই আবাসনের বাসিন্দারা ভয়ে বেরতে পারেন না। ফাঁকা আবাসনগুলি কার্যত দুষ্কৃতীদের দখলে চলে গিয়েছে। যখন তখন আবাসন এলাকায় ঢুকে শাসিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ফলে চোখের সামনে চুরি হতে দেখেও অভিযোগ করতে ভয় পান আবাসিকরা। আবাসন এলাকা জুড়ে রাস্তায় আলো নেই, প্রাচীর ভেঙে লোপাট হয়ে গিয়েছে, ড্রেনের কোনও অস্তিত্ব নেই, আগাছার জঙ্গলে ভরে গিয়েছে সর্বত্র।
দুর্গাচকে পুরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের প্রিয়ংবদা হাউজিং কার্যত ভুতুড়ে এলাকা হয়ে গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই সরকারি আবাসন কমপ্লেক্সে সাড়ে পাঁচশোর বেশি ফ্ল্যাট রয়েছে। আবাসিকরা দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। আবাসনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে আবাসিকরা এইচডিএতে এসে চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় করের কাছে নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়েই তিনি মহকুমা পুলিস প্রশাসন ও পুরসভাকে নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর এইচডিএ, পুরসভা ও মহকুমা পুলিস মিলিয়ে যৌথ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী এদিন প্রশাসনের লোকজন আবাসন এলাকায় পৌঁছতেই তাঁদের ঘিরে ধরেন আবাসিকরা। একের পর এক অভিযোগ পেয়ে কার্যত হতবাক প্রশাসনের কর্তারা। সচক্ষে তাঁরা এলাকা ঘুরে দেখে সমস্যা বুঝতে চেষ্টা করেন। ওই আবাসন কমপ্লেক্সের মাঝখানেই অতিরিক্ত পুলিস সুপারের অফিস। আবাসিকদের ক্ষোভ, পুলিসের নাকের ডগায়, পুলিসের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলেও তা ভ্রুক্ষেপ করে না দুষ্কৃতীরা। সাধারণ মানুষের কী করার ক্ষমতা আছে বলে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
পিএইচইর এক কর্মী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট ডুবে যায়। পাকার নিকাশি নালা বলতে কিছুই নেই। বেশিরভাগ প্রাচীর উধাও। এক মহিলা আবাসিক বলেন, দুপুর বা সন্ধেতে বাড়ির দোরগোড়ায় এসে সমাজবিরোধীরা মদ্যপানের আসর বসায়। কিছু বললেই শাসিয়ে যায়। আরও অভিযোগ, পরিত্যক্ত ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে। একদিকে সেখানে দুষ্কৃতীদের আখড়া, অন্যদিকে বাড়ি ভেঙে পড়লে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এইচডিএর সিইও সুধীর কোন্থাম বলেন, ওই আবাসনে চার ধরনের সমস্যা নজরে এসেছে। আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি পুলিস দেখছে। আরও পুলিস পেট্রলিং বাড়ানো হবে। আপাতত রাস্তায় স্ট্রিট লাইটগুলি লাগানো হবে। এটি এইচডিএ ও পুরসভা যৌথভাবে করবে। এদিকে, নিকাশি নালাগুলি দ্রুত সংস্কার করা হবে। পরে কংক্রিটের ড্রেন তৈরি হবে। এটি বড়সড় খরচের ব্যাপার। এইচডিএ জানিয়েছে, হাউজিংয়ে অনেক ফ্ল্যাটের লিজ চুক্তি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বর্তমান মালিককে সেগুলির আইনি হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা চলছে।
No comments