হলদিয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র দখল করে ক্লাব! চাপানউতোর জারি
সরকারি জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন। অভিযোগ, শিশু এবং মহিলাদের জন্যই গড়ে ওঠা সেই কেন্দ্র দখল করে দিব্যি চলছে ক্লাব। অগত্যা নিরুপায় হয়ে শিশু ও মায়েদের যেতে হয় স্থানীয় এক ব…
হলদিয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র দখল করে ক্লাব! চাপানউতোর জারি
সরকারি জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন। অভিযোগ, শিশু এবং মহিলাদের জন্যই গড়ে ওঠা সেই কেন্দ্র দখল করে দিব্যি চলছে ক্লাব। অগত্যা নিরুপায় হয়ে শিশু ও মায়েদের যেতে হয় স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে অস্থায়ীভাবে তৈরি বাঁশের চাঁচের ঘরে। হলদিয়া পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রামগোপালচকে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রতিবাদে সরব হয়ে ছিল এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁরা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি করেছিলেন। কি করে সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একটি ক্লাব দখল করার সাহস পায় তা নিয়েও তরজা শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে হলদিয়া পুরসভার উদ্যোগে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রামগোপালচকে ২০ লক্ষ টাকা খরচে তৈরি করা হয়েছিল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। এলাকার মানুষের আশা ছিল ছোট শিশুরা এবং মায়েরা এই জায়গায় সুষ্ঠু পরিষেবা পাবেন। কিন্তু সেখানে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা গেল। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরই স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা ওই নতুন বাড়িটি দখল করে বসে বলে অভিযোগ। রীতিমত 'নেতাজী সংঘ' নাম লিখে অঙ্গনওয়াড়ির ভবনে চলছে ক্লাব। স্বাভাবিকভাবে এলাকার শিশু ও মায়েরা সেখানে আর ভিড়তে পারেন না। যা দেখে রীতিমতো হতবাক এলাকার বাসিন্দারা। যদিও ওই ক্লাবের দাবি, যে জায়গায় নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন তৈরি হয়েছে সেই জায়গাতে আগে ওই ক্লাবের কার্যালয় ছিল। পুরসভা তরফে বলা হয়েছিল নিচে হবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র দ্বিতলে করে দেওয়া হবে ক্লাব। এই শর্তেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে বলে ক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবি। যেহেতু নতুন ভবনের দ্বিতল এখনো গড়ে ওঠেনি, তাই জোর করে শিশু ও মায়েদের জন্য গড়ে ওঠা বাড়িটি তাঁরা দখল করেছেন।
ক্লাবের সভাপতি পবন মণ্ডলের দাবি, "পুরসভার তরফে নতুন করে ক্লাব তৈরি করে দেওয়ার অঙ্গীকার করাতেই জমি দেওয়া হয়েছিল। পুর কর্তৃপক্ষ তাদের দেওয়া কথা রাখেনি। তাই আমরা ওই নতুন ভবনে এই ক্লাব করে নিয়েছি। একাধিকবার পুর কর্তৃপক্ষ এসে বৈঠক করেছেন কিন্তু কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি।" সরকারের জমির ওপর ক্লাব গড়ে উঠেছে। আবার সরকারি প্রকল্পের কাজে বাধা হচ্ছে ক্লাব। প্রশাসনিকভাবে ক্লাবের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছেন বহু বাসিন্দা। প্রায় তিন বছর ধরে ভবনটি জবরদখল করে ক্লাব চলছে বলে অভিযোগ।বর্তমানে রামগোপালচকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলছে ওই কেন্দ্রের কর্মীর মিনু ভূঁইয়া মণ্ডলের বাড়ির একটি বাঁশের চাঁচের ঘরে। এলাকাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, সরকারি ভবন দখল করে চলছে ক্লাব অথচ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকবে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সঞ্জয় দোলুই বলেন, "খাস জমির ওপরে হলদিয়া পুরসভার উদ্যোগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ক্লাব সদস্য অনেকের বাড়ির ছেলে মেয়ে ওই কেন্দ্রের পড়ুয়া। কিন্তু ক্লাবের জন্য বেআইনি ভবন দখল করা হয়েছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।" এ বিষয়ে হলদিয়া পুরসভার প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "খাস জমিতে অঙ্গলওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে জানি। তবুও ভূমি দপ্তরকে দিয়ে ওই জায়গায় ফের সমীক্ষা করে জায়গা নির্দিষ্ট করা হবে। সরকারি জমি প্রমাণিত হলে ক্লাব ওখানে থাকতে পারে না।" সবটাই আইনিভাবে মোকাবিলার আশ্বাস দিয়েছেন পুর-প্রশাসক, তথা হলদিয়া মহকুমা শাসক।
No comments