সরকারি জমি জবরদখল, রাজস্ব ফাঁকি দিতে তৎপর হলেন নবান্ন
সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের কাজ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাল ফেরাতে তিনি দপ্তরের দায়িত্ব তুলে দেন অতিরিক্ত মুখ্যসচ…
সরকারি জমি জবরদখল, রাজস্ব ফাঁকি দিতে তৎপর হলেন নবান্ন
সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের কাজ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাল ফেরাতে তিনি দপ্তরের দায়িত্ব তুলে দেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমারের হাতে। দায়িত্ব পাওয়ার পর শুক্রবার প্রথম তিনি বিএলআরও সহ দপ্তরের প্রায় ৫০০ আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি জবরদখলকারীদের হাত থেকে সরকারি জমি রক্ষার পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি আটকানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন বলে খবর।
প্রশাসনিক বৈঠকে একাধিক বিএলআরওর কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সেই রেশ ধরে এদিন বৈঠকেও প্রত্যেককে ‘সততা, স্বচ্ছতা এবং সরলতার’ সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানুষের হয়রানি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকারি জমির ‘কাস্টডিয়ান’ বা দেখাশোনার মূল দায়িত্ব ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের। সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতেই হবে। অবিলম্বে সমস্ত সরকারি জমিতে সাইনবোর্ড লাগানোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জমির দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে আলোচনায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, লিজ নেওয়ার আবেদন দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকছে। সেই কারণে রাজ্যের রাজস্বও মার খাচ্ছে। তাই এই সমস্ত আবেদন ফেলে না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দপ্তরের আধিকারিকদের। ইটভাটার রয়্যালটি বাবদ বহু টাকা আদায় হয়নি। সেই টাকা আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটির বেশি টাকা কেন্দ্র আটকে দেখেছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে নানা উপায়ে নিজস্ব রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি একান্ত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের এক পদস্থ কর্তা। এক্ষেত্রে জমি লিজের আবেদন দ্রুত যাচাই এবং ইটভাটার বকেয়া রয়্যালটি আদায় বড় ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি যথা সময়ে অডিট করানো এবং পাঁচ বছর ধরে জমে থাকা অডিট প্যারা দ্রুত নিষ্কাশনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গরিব মানুষকে জমির পাট্টা দেওয়ার কাজে গতি আনা এবং কাজ কতটা এগল, তার উপর নজরদারি চালানো হবে বলে এদিনের বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন শীর্ষকর্তারা। সেই লক্ষ্যে আগামী মাস থেকে জেলাওয়াড়ি ব্লকভিত্তিক বৈঠক করবেন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব।
No comments