Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল কি হতে পারে

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল কি হতে পারে ভারতবর্ষে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন  পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি লোকসভা আসনে নির্বাচন সাতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে সাধারণ মানুষেরও কৌতুহল…

 



পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল কি হতে পারে 

ভারতবর্ষে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন  পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি লোকসভা আসনে নির্বাচন সাতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে সাধারণ মানুষেরও কৌতুহল এবং আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি এবং তমলুক এই দুটি লোকসভার ফলাফল নিয়ে।মিডিয়া কথিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অধিকারী গড় রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু কি এবারের লোকসভা নির্বাচনে ধরে রাখতে পারবেন? এই প্রশ্নটাই এখন মিডিয়া মহলে ঘোরাফেরা করছে এবং প্রবল চর্চার বিষয়।২০০৯ সাল থেকে গত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে তমলুক এবং কাঁথি এই দুটি লোকসভা কেন্দ্রে অধিকারী পরিবারের সদস্যরাই তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জিতে ১৫ বছর ধরে সাংসদ হিসাবে রাজ করেছেন। গত দু'দশক ধরে যে অধিকারী পরিবারের হাত ধরেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত হতো সেই অধিকারই পরিবার এখন রাজনৈতিকভাবে পাল্টি খেয়েছেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই ধীরে ধীরে অধিকারী পরিবারের অন্য সদস্যরাও বিজেপিতে গিয়ে ভিড়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার ৩৫ টি বিধানসভার আসনে তৃণমূলকে শূন্য করে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছিল বিজেপি মাত্র নটি আসনে জিতে কোনোরকমে মুখরক্ষা করেছে। তার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৬ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭টি, পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২টি। ঝাড়গ্রামের পাঁচটি বিধানসভা আসনের মধ্যে একটিও বিজেপি জিততে পারেনি।২০২৩ সালের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫ টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে মাত্র চারটি পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি দখল করতে পেরেছিল এবং জেলা পরিষদের ৭০ টি আসনের মধ্যে মাত্র ১৪ টি তে বিজেপি প্রার্থীরা জয় পেয়েছিল। ফলে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর বিজেপি যতটা আশা করেছিল, বাস্তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি ততটা শক্তিশালী হয়ে ওঠেনি। অন্তত গত বিধানসভা এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল সেটাই প্রমাণ করে।এবারের লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি লোকসভায় অধিকারী পরিবারের সদস্য শিশির অধিকারীর ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারীকে বিজেপি প্রার্থী করেছে। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে ঘটা করে দিল্লিতে গিয়ে অধিকারী পরিবারের আরেক সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারী বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করলেও, তাকে বিজেপি তমলুক লোকসভায় প্রার্থী করেনি। বিজেপি তমলুকে প্রার্থী করেছে শুভেন্দুর পছন্দের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলীকে। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগেই এবার তমলুক লোকসভা অধিকারী পরিবারের হাতছাড়া হয়েছিল।গত ২৫ শে মে ষষ্ঠ দফায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক এবং কাঁথি এই দুটি লোকসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল এবং বিজেপি দুদলের নেতৃত্বই দাবি করছেন, জেলার দুটি আসনে তাঁদের প্রার্থীরাই জয়লাভ করতে চলেছেন।গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে তমলুক লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে চারটি বিধানসভা তৃণমূলের দখলে এবং তিনটি বিধানসভা বিজেপির দখলে রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে তমলুক লোকসভায় তৃণমূল বিজেপির থেকে ২১ টি ভোটে এগিয়ে ছিল। তবে গত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিরিখে তৃণমূল এই লোকসভায় নব্বই হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছে।জেলার বিজেপি নেতৃত্বরা দাবি করছেন তমলুক লোকসভায় তাঁদের প্রার্থী অভিজিৎ গাঙ্গুলী লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জিততে চলেছেন। কিন্তু কোন বিধানসভায় তারা কত লিড পাবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে পারছেন না।ভোটের আগে বিজেপির হিসেবে ছিল নন্দীগ্রাম বিধানসভা থেকে তিরিশ হাজার,হলদিয়া বিধানসভা থেকে কুড়ি হাজার,ময়না বিধানসভা থেকে দশ এবং তমলুক বিধানসভা থেকে দশ লিড পাবেন।কিন্তু ভোটের পর বিজেপির হিসেব সব ওলট-পালট হয়ে গেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপি খুব বেশি হলে ২০ হাজার ভোটে লিড, আর হলদিয়া বিধানসভায় খুব বেশি হলে ১৫ হাজার ভোটে লিড, আর ময়না বিধানসভায় ৬ থেকে ৮ হাজার এবং তমলুক বিধানসভায় ৫ থেকে ৬ হাজার লিড পাওয়ার আশা করছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত ভোটের দুদিন আগে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়াতে এক মহিলার মৃত্যু  আর ভোটের  আগের দিন রাতে মহিষাদলে তৃণমূলের এক যুব নেতার খুন হয়ে যাওয়া, এই দুটি ঘটনা বিজেপির বিপক্ষে গিয়েছে। এই দুটি বিধানসভার ভোটারদের প্রভাবিত করেছে।

অন্যদিকে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি,তাঁদের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য পঞ্চাশ হাজারের বেশি ভোটে জয় হতে চলেছেন।জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের হিসেব, বহুচর্চিত নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে বিজেপি যতই মাতামাতি করুক না কেন, নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লক থেকে বিজেপি খুব বেশি হলে আড়াই থেকে ৩ হাজারের মধ্যে লিড পেতে পারে। আর নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক থেকে তৃণমূল পাঁচ হাজারের বেশি ভোটে লিড পেতে চলেছে। সব মিলিয়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় তৃণমূলের দু হাজারের  বেশি ভোটে লিড থাকছে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব আশাবাদী। আর হলদিয়া বিধানসভায় সুতাহাটা ব্লক  থেকে তৃণমূল লিড পাওয়ার আশা করছে ১০হাজারের মতো। আর হলদিয়া পৌরসভা এলাকায় তৃণমূল যদি খুব খারাপ ফলাফল করে তাহলে ১৫ হাজারের মতো ভোটে পিছিয়ে থাকতে পারে। সবমিলিয়ে হলদিয়া বিধানসভায় তৃণমূল খুব বেশি হলে ৫ হাজারের মতো ভোটে পিছিয়ে থাকতে পারে।অন্যদিকে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মহিষাদল বিধানসভা থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার, পূর্ব পাঁশকুড়া বিধানসভা থেকে ১২ থেকে ১৬ হাজার, নন্দকুমার বিধানসভা থেকে ৭ থেকে ৮ হাজার,তমলুক বিধানসভা থেকে ৫ থেকে ৬ হাজার এবং ময়না বিধানসভা থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার ভোটে লিড পেতে চলেছেন।

কংগ্রেস সিপিএমের জোট প্রার্থী সায়ন ব্যানার্জি নির্বাচনী প্রচারে বাম সমর্থকদের  ভিড় সাধারণ মানুষের নজর কেড়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের দিন তমলুক লোকসভা জুড়ে বুথে বুথে সেভাবে বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্বদের তৎপরতা সেভাবে নজরে পড়েনি। ফলে নির্বাচনী বিশ্লেষকরা যে আশা করেছিলেন তমলুক লোকসভায় জোট প্রার্থী সায়ন ব্যানার্জি দেড় থেকে দু'লাখ ভোট পেতে পারেন। কিন্তু নির্বাচনের পর দেখা যাচ্ছে বামের ভোট রাম থেকে খুব বেশি ফিরে আসছে না।কংগ্রেসের একটা বড় অংশের ভোট সিপিএমের পক্ষে না গিয়ে তৃণমূলের পক্ষে গিয়েছে।ফলে সায়ন ব্যানার্জীর প্রাপ্ত ভোট লাখের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা বেশি।

কাঁথি লোকসভায় এবারের নির্বাচন ছিল অধিকারী পরিবারের নিজেদের গড় রক্ষার লড়াই। এখন সেই গড় রক্ষা পাবে কিনা ৪ জুন চূড়ান্ত নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জানা যাবে। তবে ভোটের পর অধিকারী পরিবারের ছোট ছেলে বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী এবং তৃণমূল প্রার্থী পটাশপুর বিধানসভার বিধায়ক এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক দুজনেই জয়ের দাবী করছেন।

গত বিধানসভা নির্বাচনে কাঁথি লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে চারটি বিধানসভায় বিজেপি এবং তিনটি বিধানসভায় তৃণমূল জয়ী হয়েছিল। বিধানসভায় প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিজেপি ২৯ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়েছিল। কিন্তু গত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে।কাঁথি লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিকের অ্যাডভান্টেজ হলো তিনি নিজে এই লোকসভার অন্তর্গত পটাশপুর বিধানসভার বিধায়ক।গত বিধানসভা ভোটে তিনি নিজে প্রায় ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে আশা করছেন পটাশপুর বিধানসভা থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার ভোটে লিড পাবেন।বিজেপি কাঁথি লোকসভা আসনে জয়ের জন্য দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা এবং খেজুরি বিধানসভাকে টার্গেট করেছিল।গত বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী ১০ হাজারের বেশি লিড পেয়ে এবং খেজুরি বিধানসভায় প্রায় ১৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল।বিজেপির টার্গেট ছিল দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা থেকে ২০ হাজার এবং খেজুরি বিধানসভা থেকে ২৫ লিড নেওয়া। কিন্তু নির্বাচনের পর বিজেপির দলীয় পর্যালোচনার পর যে হিসেব উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে কাঁথি পুরসভা তৃণমূলের হাতে থাকায় দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভায় ১০  হাজারের লিড ধরে রাখা যাচ্ছে না এবং খেজুরি বিধানসভায় খুব বেশি হলে ১০ হাজারের  বেশি লিড থাকছে না। ফলে বিজেপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে দেড় লাখ ভোটে তাদের প্রার্থী জয়ী হচ্ছেন বলে মুখে বললেও,বাস্তবে এই লোকসভা আসনে জেতার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। কারণ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসে অধিকারী পরিবারের সদস্য হওয়ার সুবাদে সৌমেন্দু অধিকারীর প্রার্থী হয়ে যাওয়াটা আদি বিজেপি নেতৃত্ব মেনে নিতে পারেননি। তাই নির্বাচনী প্রচারে আদি বিজেপি নেতারা সেভাবে প্রার্থীকে জেতাতে সক্রিয়ভাবে ময়দানে নামেননি বলে বিজেপি সূত্রে খবর।কাঁথি লোকসভা এলাকায় সাধারণ মানুষদের অধিকারী পরিবারের উপর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও কাঁথি লোকসভা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী কাঁথি পৌরসভায় ১০ বছর ধরে চেয়ারম্যান থাকলেও, এবারই প্রথম  সরাসরি লোকসভা ভোটের ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হয়েছে। কারণ এর আগে দুবারই তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে তৃণমূলের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি খেজুরি বিধানসভায় বিজেপি খুব বেশি হলে ৬ হাজার আর দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভায় ৫ থেকে ৭ হাজার লিড পেতে পারে। এছাড়া বাকি বিধানসভা গুলিতে তৃণমূল প্রার্থীরই লিড থাকছে। চন্ডিপুর বিধানসভায় ১০ থেকে ১৫ হাজার, ভগবানপুর বিধানসভায় ৫ হাজার,উত্তর কাঁথি বিধানসভায় ৬ থেকে হাজার এবং রামনগর বিধানসভায় ১০ থেকে ১২ হাজার তৃণমূল প্রার্থী লিড পেতে চলেছে।

অন্যদিকে কাঁথি লোকসভা আসনটি সিপিএম জোট সঙ্গী কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ায়,এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেসের উর্বশী ভট্টাচার্য। কাঁথি শহরাঞ্চলে কংগ্রেসের কিছু পকেট ভোট থাকলেও কাঁথি লোকসভা এলাকা জুড়ে কংগ্রেসের সেভাবে কোনো ভোট ব্যাংক নেই। ফলে সিপিএমের সহযোগিতায় কংগ্রেস প্রার্থী ভোট প্রচারে কিছু এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ২৫ থেকে ৩০ হাজারের বেশি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সব মিলিয়ে তমলুক এবং কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের ফলাফলের দিকের বিশেষ নজর থাকছে সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক মহলের।

No comments