অনলাইনে টাকা লেনদেন করতে গিয়ে ৬ লক্ষ টাকা খোয়ালেন হলদিয়ার যুবকঅনলাইনে টাকার লেনদেন বেড়ে চলার সঙ্গে বন্দর শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার প্রতারণা। প্রতিনিয়ত সাইবার প্রতারকদের কৌশল বদলের খেলায় শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বিভ্রান্ত পুলি…
অনলাইনে টাকা লেনদেন করতে গিয়ে ৬ লক্ষ টাকা খোয়ালেন হলদিয়ার যুবক
অনলাইনে টাকার লেনদেন বেড়ে চলার সঙ্গে বন্দর শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার প্রতারণা। প্রতিনিয়ত সাইবার প্রতারকদের কৌশল বদলের খেলায় শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বিভ্রান্ত পুলিসও। দক্ষ মানুষজনকে কার্যত ঘোল খাইয়ে তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটের অভিযোগ জমা পড়ছে হলদিয়া শিল্পশহরের কোনও না কোনও থানায়। গত তিন সপ্তাহে এধরনের ১০-১২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কয়েকদিন আগেই অনলাইন ট্রেডিংয়ে সিদ্ধহস্ত টাউনশিপের এক শিক্ষকের অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার প্রতারকরা। তার তদন্তে নেমে হিমশিম খেতে পুলিসকে। ওই ঘটনার পর এবার ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়াতে গিয়ে সাইবার প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে ৬ লক্ষাধিক টাকা খোয়ালেন ওই শিক্ষকের এক প্রতিবেশী। তিনি হলদিয়া টাউনশিপের ব্রজনাথচক এলাকার বাসিন্দা। হলদিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তি।
পুলিস জানিয়েছে, এক্সিস ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড ডিপার্টমেন্ট থেকে ফোন পেয়ে ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়াতে গিয়ে টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্রজনাথচকের বাসিন্দা মানসকুমার মাইতি। ওই ফোন আসার পরই তাঁর অ্যাকাউন্ট ৬ লক্ষ ২৫ হাজার উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ। মানসবাবু জানিয়েছেন, এক্সিস ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড ডিপার্টমেন্ট থেকে তাঁর কাছে অফার চলছে বলে একটি ফোন এসেছিল। ভুয়ো ফোন ভেবে ওই ফোন কেটে দেন। কয়েক ঘণ্টা পর সেই নম্বর থেকে এক্সিস ব্যাঙ্কের নাম করে ফোন আসে। ওই সময় ব্যাঙ্ক কর্মী মানসবাবুর অ্যাকাউন্ট ডিটেলস গড়গড় করে বলতেই তাঁর বিশ্বাস তৈরি হয়। ক্রেডিট কার্ডের লিমিট ৪ লক্ষ টাকা অব্দি বাড়ানোর অফার দেয় ওই ব্যাঙ্ক কর্মী। এটি সাইবার প্রতারকদের টোপ বলে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি মানসবাবু। তারা ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়ানোর জন্য একটি ওটিপি পাঠায় এবং মানসবাবুকে সেটি শেয়ার করতে বলে। এরপর ফোন করে ক্রেডিট লিমিট বেড়ে গিয়েছে বলে জানায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৯১ টাকা জমা হয়ে যায় মানসবাবুর অ্যাকাউন্টে।
মানসবাবু বলেন, আমি প্রতারিত হচ্ছি বলে প্রথমে বুঝতে পারিনি। টাকা জমা হওয়ার ঘটনায় অবাক হয়ে যাই। কয়েক মিনিট পর তাঁর মোবাইলে মেসেজ পেয়ে আমার মাথায় হাত পড়ে। পর পর তিনটি ট্রানজাকশান মেসেজে ৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা আমার অ্যাকাউন্ট থেকে মুহূর্তে উধাও হয়ে যায়। এভাবে প্রতারিত হব বুঝতে পারিনি। পুলিসকে তদন্তের আবেদন করেছি। এদিকে, টাউনশিপের বিশ্বনাথ সামন্ত নামে ওই শিক্ষক পুলিসের কাছে তদন্তের জন্য যাবতীয় নথি জমা করেছেন। কয়েকদিন আগে অনলাইন ট্রেডিং করতে গিয়ে তাঁর ২৫ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাঙ্কে ছোটাছুটি করে সমস্ত ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট বের করেছি। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবার প্রতারকরা ভারতের নানা জায়গা থেকে ওই টাকা তুলেছে। ২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ২৪ লক্ষ টাকা ঢুকেছে আসামের অজগাঁয়ের একটি গ্রামের বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে। বাকি ৪ লক্ষ টাকা কেরল, গুজরাট ও বিশাখাপত্তনমে বসে সাইবার প্রতারকরা তুলে। প্রতিটি অ্যাকাউন্টই সচল রয়েছে।
No comments