অবিভক্ত মেদিনীপুরের তিন জেলার ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৪৭ প্রার্থী
২১ মে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাতে কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। অবিভক্ত মেদিনীপুরের তিন জেলার মোট ৫ টি লোকসভা আসনে ভোট আগামী ২৫ শে মে। ষষ্ঠ দফার এই ভোটপর্বের মনোনয়ন প্রক্রি…
অবিভক্ত মেদিনীপুরের তিন জেলার ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৪৭ প্রার্থী
২১ মে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাতে কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। অবিভক্ত মেদিনীপুরের তিন জেলার মোট ৫ টি লোকসভা আসনে ভোট আগামী ২৫ শে মে। ষষ্ঠ দফার এই ভোটপর্বের মনোনয়ন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। মেদিনীপুর, ঘাটাল, তমলুক, কাঁথি ও ঝাড়গ্রাম এই পাঁচটি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন মোট ৪৭ জন প্রার্থী। তালিকায় রয়েছেন বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআইএম, সিপিআই, এস ইউ সি আই বি এস পি, আই এস এফ এবং নির্দল প্রার্থীরা। গতবারে বিজেপির জেতা মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারমধ্যে রয়েছেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল, তৃণমূলের জুন মালিয়া, সিপিআই- এর বিপ্লব ভট্ট, এস ইউ সি আই-এর অনিন্দিতা জানা, বহুজন সমাজবাদী পার্টির অঞ্জন মন্ডল এবং চারজন নির্দল প্রার্থী। গতবারে ত্যণমূলের জেতা ঘাটাল কেন্দ্রে লড়ছেন মোট ৭ জন প্রার্থী।তার মধ্যে রয়েছেন গতবারের সাংসদ তৃণমূলের দীপক অধিকারী (দেব), বিজেপির হিরণ চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই-এর তপন গাঙ্গুলী, এধ ইউ সি আই-র দীনেশ মেইকাপ, বি এস পি-র সৌমেন মাদ্রাজী এবং তিনজন নির্দল প্রার্থী। গতবারে বিজেপির জেতা ঝাড়গ্রাম জেলার একমাত্র লোকসভা কেন্দ্র কাড়গ্রামে লোকসভা কেন্দ্রে করছেন মোট ১৩ জন প্রার্থী। তার মধ্যে রয়েছেন বিজেপির ডাঃ প্রণত টুডু, তৃণমূলের কালিপদ সরেন, সিপিআইএম-এর সোনামনি টুডু, বি এস পি'র অরুণ কুমার হাঁসদা, এস ইউ দি আই-র সুশীল মান্ডি, আই এফ প্রার্থী বানী সরেন, ঝাড়খন্ড পিপলস পার্টির সূর্যসিংহ বেসরা, আম্বেদকারিস্ট পার্টি অব বীরসাবির বাস্কে এবং পাঁচজন নির্জন প্রার্থী। গতবারে তৃণমূলের জেতা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৯ জন প্রার্থী। তার মধ্যে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী, রয়েছেন তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য সিপিআইএম-এর সায়ন ব্যানার্জী, বিএসপি'র সাবিত্রী বিশুই, আই এস এফ এর মহিউদ্দিন আহমেদ, এস ইউ সি আই এর নারায়ণচন্দ্র নায়েক এবং তিন নির্দল প্রার্থী। গতবারে তৃণমূলের জেতা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৯ জন প্রার্থী। তার মধ্যে রয়েছেন বিজেপির
সৌমেন্দু অধিকারী, তৃণমূলের উত্তম বারিক, কংগ্রেসের
উর্বশী ব্যানার্জী, বি এস পি'র মাখনলাল মহাপাত্র, এস ইউ সি'র মানস প্রধান ও চারজন নির্দল প্রার্থী। এই পাঁচটি কেন্দ্রে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে হবে বলে মনে করছে অবিভক্ত মেদিনীপুরের রাজনৈতিক মহল। তবে এদের সাথে তালে তাল মিলিয়ে লড়াইয়ে রয়েছেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরাও। এই পাঁচটি আসনের মধ্যে গতবারে তৃণমূল জিতেছিল ঘাটাল, তমলুক ও কাঁথি কেন্দ্রে। অন্যদিকে বিজেপি জিতেছিল মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে। তবে এই দুই কেন্দ্রে গতবারের জেতা দিলীপ ঘোষ বা কুনাষ হেমব্রমকে প্রার্থী করেনি বিজেপি। অন্যদিকে জেতা তৃণমূলের জেতা একমাত্র ঘাটালেই প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ দেব। জেতা কাঁথি ও তমলুক আসনে প্রার্থী বদল করেতে হয়েছে কাঁথির অধিকারী পরিবারে তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করার কারণে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে ভর রেখে তমলুক ও কাঁথি জয়ের বিষয়ে আশাবাদী বিজেপি। অন্যদিকে নিজেদের জেতা এই দুই আসন ধরে রাখতে তৎপর তৃণমূল। পাশাপাশি তরুণ তুর্কী আইনজীবী সুবক্তা সায়ন ব্যানার্জীর কাঁধে ভর রেখে তমলুকে জিততে চাইছে বামেরা। ঝাড়গ্রাম আসনে অনেক প্রার্থীর ভীড়ে ভোট কাটাকাটিতে জেতার বিষয়ে চিন্তায় রয়েছেন যুযুধানরা। বিশেষকরে একদা বামদুর্গ ঝাড়গ্রামে সিপিআইএম প্রার্থী সোনামণি টুডুর মনোনয়নে ভীড় এবং প্রচারে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে কিছুটা চিন্তিত তৃণমূল ও বিজেপি। ঝাড়গ্রাম আসনে কুড়মি ভোট একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। মেদিনীপুর আসনে বিজেপির সাংসদ দিলীপ ঘোষের ছেড়ে যাওয়া আসনে জোর লড়াই হবে বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল ও জুন মালিয়ার। এখানেও কুড়মি ভোট গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। কেশপুর বিধানসভার লিডের উপরে অনেকংশে নির্ভর করছে তৃণমূল সাংসদ দেবের ভাগ্য। এই পাঁচটি আসনের সব আসনেই বামেদের পুরোনো ভোটব্যাংক কিছুটা হলেও বামেদের দিকে সুইং করে তবে এই পাঁচটি আসনেই অনেক হিসেবে ওলট পালট হয়ে যেতে পারে। অবিভক্ত মেদিনীপুরের জনগণ চাইছেন শান্তিপূর্ণ ভোট। আর ভোট যত এগিয়ে আসছে সব দলের প্রার্থীদের প্রচারের গতি ততই বাড়ছে। নিজেদের দলের প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে আসতে শুরু করেছেন তারকাপ্রচারকরা।
No comments