বন্দরের জটে ইতি, তৃণমূলের 'খবরদারি'তে প্রশ্ন...
শ্রমিক অসন্তোষ ছিলই। সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকবার ধর্মঘটও হয়েছে হলদিয়া বন্দরে। অবশেষে জট কাটল। তবে, সেখানেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।শুক্রবার হলদিয়ার চিরঞ্জীবপু…
বন্দরের জটে ইতি, তৃণমূলের 'খবরদারি'তে প্রশ্ন...
শ্রমিক অসন্তোষ ছিলই। সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকবার ধর্মঘটও হয়েছে হলদিয়া বন্দরে। অবশেষে জট কাটল। তবে, সেখানেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।
শুক্রবার হলদিয়ার চিরঞ্জীবপুরে বন্দরের অপারেশনাল বিল্ডিংয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ টুটু বসুর সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অস্থায়ী কর্মীরা। সংস্থার তরফে টুবলাই বসু হাজির ছিলেন। বৈঠকে অস্থায়ী কর্মীদের ১,২০০ বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে সংস্থাটি। তবে অস্থায়ী কর্মীদের অভিযোগ, গোড়ায় বলা হয়েছিল শুধুমাত্র শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনায় বসবে মালিকপক্ষ। যদিও বৈঠক শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাজির হন আইএনটিটিইউসির তমলুক জেলা সভাপতি চন্দন দে, হলদিয়া শহর তৃণমূল সভাপতি মিলন মণ্ডলরা।
হলদিয়া বন্দরের মোট ১৪টি বার্থ। টাটা গোষ্ঠী ও আরেকটি সংস্থা দু'টি বার্থে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ করে। বাকি প্রায় সব বার্থেই দায়িত্বে রয়েছে টুটু বসুর সংস্থা। তাদের প্রায় আড়াই হাজার অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে তাদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি। না জানিয়ে প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ টাকাও হচ্ছে। এ সবের বিরুদ্ধেই জানুয়ারি থেকে তিন দফায় বন্দরে ধর্মঘট করেছেন অস্থায়ী শ্রমিকেরা। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার অভয়কুমার মহাপাত্র অস্থায়ী শ্রমিকদের চিঠি দিয়ে জানান, ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাবেন সেই মতো শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈঠক হয়। প্রস্তাবও দেওয়া হয়। যদিও মালিকক্ষ তা মানেননি। পরে সংস্থার পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে ফেব্রুয়ারি থেকেই বেতন বৃদ্ধির কথা জানানো হয়। এই বেতন বৃদ্ধি ৩১ অগস্ট পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
প্রসঙ্গত, বছর দুয়েক আগে হলদিয়ায় দলের কর্মসূচিতে এসে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি-সহ কোনও সমস্যায় রাজনীতির হস্তক্ষেপ থাকবে না। ফলে, বৈঠকে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইএনটিটিইউসির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি চন্দন বলছেন, "শ্রমিকদের স্বার্থের কথা ভেবেই আমরা গিয়েছিলাম।" ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সভাপতি প্রদীপকুমার বিজলির আরও দাবি, "বন্দরে স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা বহু ক্ষেত্রেই এক কাজ করেন। তাহলে বেতন বৈষম্য থাকবে কেন?" আইএনটিটিইউসির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ সরকার অবশ্য বলছেন, "সমকাজে সমবেতন কোনও ভাবেই কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়।"
No comments