Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মেনে নিতেই হবে "বার্ধক্য" একটি শিল্প!! - কবিতা

মেনে নিতেই হবে "বার্ধক্য" একটি শিল্প!!- কবিতা 
বার্ধক্যে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বিষণ্ণতার কিছুই নয়, এটি আনন্দময় উদযাপন।বার্ধক্য, দীর্ঘ পরিশ্রমী সফল একটি গৌরবান্বিত পথপরিক্রমার অর্জন।অধিকাংশই এখানে পৌঁছুতে পারেনি। বাকি অল্প…

 





মেনে নিতেই হবে "বার্ধক্য" একটি শিল্প!!- কবিতা 


বার্ধক্যে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বিষণ্ণতার কিছুই নয়, এটি আনন্দময় উদযাপন।

বার্ধক্য, দীর্ঘ পরিশ্রমী সফল একটি গৌরবান্বিত পথপরিক্রমার অর্জন।অধিকাংশই এখানে পৌঁছুতে পারেনি। বাকি অল্প কয়েকজনের তুমি একজন। এই টিকে থাকাটি, একমাত্র তোমারই অর্জন।বার্ধক্যের প্রত্যেকটি ক্ষত, সাক্ষ্য দিচ্ছে একেকটি সূর্যালোকিত দিনের, যে-আলো তোমাকে পরিপক্ব করেছিলো, ক্ষতের সাথে লড়াইয়ের আমন্ত্রণে।

বার্ধক্যে তুমি রূপ হারিয়ে ফেলেছ? কী হাস্যকর এ-ভাবনা! যৌবনের রূপ একটি প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা মাত্র, যা তুমি অর্জন করোনি; অন্যদিকে, বার্ধক্যের রূপ- সে এক পরিপূর্ণ শিল্প, প্রতিটি রোমকূপ যার, অর্জিত।

জাপানে, একটি রীতি প্রচলিত আছে: কোনোকিছু ভেঙে গেলেই, ওটা ফেলে দেয় না তারা। এর প্রত্যেকটি টুকরা তারা জোড়া লাগিয়ে পুনরায় তৈরি করে ফেলে সেই বস্তুটি। জোড়া কী দিয়ে লাগায়? স্বর্ণ-মিশ্রিত আঠা দিয়ে; এবং, জোড়াগুলো ঢেকে দেওয়ার কোনো চেষ্টাই করে না ওরা। তাদের সংস্কৃতি মতে- যা ভেঙেছে, সেটি আসলে তার রূপের আরেকটি ভিন্ন জীবনে প্রবেশ করেছে; এবং এই নতুন রূপ-জন্মের উদযাপন হতে হবে একটি নতুন প্রাণ সৃষ্টির মতোই; এই নবজন্মকে সাজিয়ে দিতে হবে আমাদের, একে ত্যাগের প্রশ্নই আসে না। 

প্রতিটি ভাঙনই একেকটি নবজীবনে প্রবেশ; রূপান্তর। বার্ধক্যও ঠিক এমনই। রূপও ঠিক এমনই।

তুমি কে? তোমার জন্মের উদ্দেশ্য কী? এর উত্তর তুমি শৈশব, কৈশোর, যৌবনে পাবে না। এই তিন পর্যায় পেরিয়ে এসেই, বার্ধক্যেই তুমি উপলব্ধি করতে পারবে- তোমার জীবনের মূল অর্থ। হ্যাঁ, বার্ধক্যই তুমি। বার্ধক্যই তোমার জীবন, বাকিটুকু জীবনটির ভূমিকা মাত্র।

না, বার্ধক্য উপসংহার নয়, উপসংহার হলো তোমার রেখে যাওয়া কীর্তির প্রভাবটুকুই। বার্ধক্য হলো- পরিপূর্ণ তুমি।

জন্মের মুহূর্তটি থেকে, মৃত্যুর মুহূর্তটি পর্যন্ত, তোমার দেহের প্রতিটি অণুপরমাণু পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। এর একেকটি পর্যায়কে একেক নামে অভিহিত করেছ, তুমিই।  এ-ই, একমাত্র সত্য।বয়সের পিঠে চড়ে বসো নির্ভয়ে।বয়সকে আলিঙ্গন করো বন্ধুতায়।

চমৎকৃত হও প্রতিটি আসন্ন মুহূর্তের বিস্ময়ে, চমৎকৃত করে দাও তোমার বয়সকেই।তোমার চেহারাকে, তোমার জীবনসংগ্রামের প্রতিনিধি হতে দাও।চেহারাটির বার্ধক্যছাপকে, বয়সের উপরে তোমার আধিপত্যের প্রমাণ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দাও।

লুকিয়ো না, প্রকাশ করো গর্বে।তোমার প্রতিটি গল্পের সাক্ষী এই চেহারা।তোমার প্রতিটি সঙ্কট জিতে আসার সাক্ষী এই চেহারাটিই।

তোমার চেহারার মলিনতাই, দাগই, তোমার জীবনের শ্রেষ্ঠতমতার সিলমোহর।যৌবনের দিকে ছোটার কোনোই কারণ নেই। যৌবন পাঠশালা মাত্র, বার্ধক্য শিক্ষক।

জগতের সমস্ত জীবিত প্রাণের তুমিই সম্রাট, তুমিই সম্রাজ্ঞী, বার্ধক্যের অভিজ্ঞতায় ও জ্ঞানে; বার্ধক্যের দুর্লভ রূপময়তায়।

বার্ধক্য একটি শিল্প!শৈল্পিক পথে প্রৌঢ় হওয়ার, প্রৌঢ়া হওয়ার, সুন্দরতম পদ্ধতিটি হচ্ছে: বয়সকে পাত্তা না দেয়া ।

No comments